জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন মোদি, ট্রাম্পের সঙ্গে কি বৈঠক হবে
Published: 13th, August 2025 GMT
আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই অবসরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হতে পারে।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে নরেন্দ্র মোদি নিউইয়র্ক গেলে তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সফর ঘিরে অনেক ‘যদি’ ও ‘কিন্তু’ রয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এই সফর নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করেনি। সরকারি সূত্রের বরাতে সফর সম্ভাবনার খবর করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও সরকারি ওয়াকিবহাল সূত্র মারফত পাওয়া খবরে জানিয়েছে, সরকারিভাবে এই বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিবছর সাধারণ পরিষদের বিতর্কে প্রতিটি দেশই তাদের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের জন্য সময় আগে থেকে নির্দিষ্ট করে রাখে। সেই অনুযায়ী এবার ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ নির্ধারিত করা রয়েছে। সম্মেলন ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
অনেক সময় পরিস্থিতির বিচারে বক্তা তালিকায় পরিবর্তন করা হয়। সূত্রের কথায়, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিউইয়র্ক যাবেন কি না, তা ঠিক করার সময় এখনো আসেনি।
ভারতীয় রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল। পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার অপরাধে ‘জরিমানা’ হিসেবে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়। অর্থাৎ মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। বন্ধু ট্রাম্পের কাছ থেকে এটা ভারত প্রত্যাশা করেনি। ২৭ আগস্ট থেকে ওই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা।
যুক্তরাষ্ট্র অনড় থাকলে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি সম্মানজনক না হলে সম্পর্কের হাল কী হতে পারে, সেই জল্পনায় ভারতের নীতিনির্ধারকেরা এখনই প্রস্তুত নন। এটুকু বোঝা যাচ্ছে, সফর হবে কি না, তা নির্ভর করবে এই সময়ের অন্যান্য ঘটনার ওপর।
মোদি এই মাসের শেষের দিকে জাপান যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বুধবার গণমাধ্যমকে তা জানিয়েও দিয়েছেন। জাপান থেকে মোদি যাবেন চীনের তিয়ানজিন শহরে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে মোদির আলাদাভাবে বৈঠক হবে।
চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতির ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে নিউইয়র্কে মোদি–ট্রাম্প বৈঠকের সম্ভাবনা। তিয়ানজিনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলন বসছে ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর।
ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেই সফরে তাঁকে পাশে বসিয়ে ট্রাম্প ভারতকে ‘ট্যারিফ কিং’ বললেও সম্পর্ক জোরদারের একাধিক বার্তাও দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পের কারণে ভারতকে প্রবলভাবে আশাহত হতে হয়।
ভূরাজনৈতিক সমীকরণের দিকে দৃষ্টি রেখে ভারতও তাই এখন রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের পথে এগোচ্ছে বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা। ট্রাম্পের হুমকি অগ্রাহ্য করে রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনা অব্যাহত রাখলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা মধুর থাকবে, বলা কঠিন।
আপাতত সবার নজর আলাস্কায়। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সেখানে ১৫ আগস্ট ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে রুশ–ভারত সম্পর্ক এবং ভারতের তেল কেনার সিদ্ধান্ত অবশ্যই বিবেচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
টেক্সাসে একটি দোকানের পার্কিংয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৩
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে একটি টার্গেট স্টোরের গাড়ি রাখার জায়গায় বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের রাজধানী অস্টিনে।
টেক্সাসের পুলিশপ্রধান লিসা দাভিস জানান, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী একজন পুরুষ। বয়স ত্রিশের কোঠায়। তাঁর ‘মানসিক সমস্যায়’ ভোগার রেকর্ড রয়েছে।
গুলি চালানোর পর ওই ব্যক্তি একটি গাড়ি চুরি করে সেটা নিয়ে পালিয়ে যান। পথে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পরে। এরপর তিনি আরও একটি গাড়ি চুরি করে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাঁকে আটক করে।
জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে তিনজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেন। দুজন সেখানেই মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরেকজনের মৃত্যু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম–পরিচয় জানানো হয়নি।
লিসা দাভিস বলেন, ‘অস্টিনের জন্য একটা দুঃখের দিন আজ। আমাদের সবার জন্যই দুঃখের একটি দিন। ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে দেওয়া এক পোস্টে অস্টিনের মেয়র ক্রিক ওয়াটসন এ ঘটনাকে ‘ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সপ্তাহ দুয়েকের বেশি সময় আগে মিশিগান অঙ্গরাজ্যে ওয়ালমার্টের এক দোকানে একই রকম হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
অন্যদিকে গত জুলাইয়ের শেষ দিকে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে ২৭ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করেন। নিউইয়র্কে গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা।