চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মিজানুর রহমান (৩২) নামের এক অটোরিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্নসহ দুই পা বাঁধা অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে ছিল একটি সড়কের পাশে।

আজ বুধবার সকালে উপজেলার এখলাশপুর গ্রামের বকুলতলা এলাকা থেকে মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান এবং জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে জানান। খবর পেয়ে মতলব উত্তর থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, নিহত মিজানুর রহমান এখলাশপুর গ্রামের মৃত ফজলুল্লাহ কাজীর ছেলে। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজ। স্ত্রী শারমিন আক্তার ও এক শিশুসন্তান নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং সেখানে অটোরিকশা চালাতেন।

সকালে বকুলতলা এলাকায় সড়কের পাশে মিজানুর রহমানের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দা শরিফ হোসেনসহ কয়েকজন। তাঁদের ভাষ্য, মিজানুর রহমানের মাথায় গুলির চিহ্ন ছিল, দুই পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। চোয়াল ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্নও দেখা যায়। তাঁরা মরদেহটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁরা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশ ও স্বজনদের খবর দেন।

নিহত মিজানুর রহমানের ছোট বোন শাহনাজ আক্তার বলেন, তাঁর ভাইকে পূর্বশত্রুতার জেরে নারায়ণগঞ্জ বা এখলাশপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে সড়কে ফেলে গেছে। তবে কার সঙ্গে শত্রুতা ছিল, জানেন না। তাঁর স্ত্রী এলে হয়তো জানা যাবে। তিনি ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবি করেন।

মিজানুর রহমানের স্ত্রী শারমিন আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

রবিউল হক বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কে বা কারা করেছে, তদন্তে বেরিয়ে আসবে। পূর্বশত্রুতা বা অন্য কোনো বিরোধের জেরেই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তাঁরা। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন র র মরদ হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আগামীকাল ৪ অক্টোরব থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চাঁদপুরের হাইমচরের চরভৈরবী থেকে মতলব উত্তরের ষাটনল পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অংশে এই নিষধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলেদের সর্তক করতে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে চালানো হচ্ছে সেচেতনতামূলক প্রচারণা।

আরো পড়ুন:

মৌসুম শেষে খালি ট্রলার নিয়ে কূলে ফিরছেন জেলেরা

পটুয়াখালীতে ৫ কেজির পোয়া মাছ ৮০ হাজারে বিক্রি

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে গত বুধবার থেকেই চাঁদপুর সদরের আনন্দবাজার, লালপুর মৎস্যবাজার, আমীরাবাদ ঘাট, চর উমেদ ও রাজরাজেশ্বর এলাকায় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ। পর্যায়ক্রমে হাইমচর ও মতলব উত্তর এবং দক্ষিণে প্রচারণা চালানো হবে।

জেলেদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “২২দিন ধৈর্য ধারণ করে মা ইলিশ রক্ষায় জেলে ভাইরা সক্রিয় ভূমিকা রাখলে এবং সরকার প্রদত্ত সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিলে তারাই বড় ও অনেক অনেক ইলিশ পাবেন। এর পরেও কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কয়েকজন জেলে জানান, তারা নৌকা ও জাল নদীতে ফেলা বন্ধ রাখলেও অন্য জেলা থেকে প্রতিবার চাঁদপুরের নৌ সীমানায় ঢুকে ইলিশ ধরে নিয়ে যায় জেলেরা। পাশাপাশি শিশুদের জেলে বানিয়ে নদীতে নামিয়ে একদল দুষ্কৃতকারী ইলিশ ধরতে ব্যস্ত থাকে। দ্রুত সময়ে যাতে সরকার নির্ধারিত চাল তারা পান সেজন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেলেরা।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, “ইলিশের জন্যই চাঁদপুর সারা দেশে পরিচিত। মা ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়তে না দিলে ভবিষ্যতে এই মাছের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই পদ্মা-মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু শাস্তির জন্য নয় বরং জেলেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য। এখন যদি আমরা মা ইলিশ রক্ষা করি আগামী দিনে আরো বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে এবং উপকৃত হবে জেলেরাই।”

তিনি বলেন, “আইন অমান্য করলে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। জেলেদের সহায়তায় সরকার খাদ্য সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। চাঁদপুরের ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে এ বছর ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে, যা গতবারের তুলনায় ৫ কেজি বেশি।” 

“নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ টিম প্রতিদিন নদীতে টহল দেবে। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে অসাধু জেলেদের নানা বিষয় নিয়ে। তবেই বড় বড় ও বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে,” যোগ করেন তিনি।

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা