স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবি বাস্তাবায়নে দীর্ঘসময় লাগবে: স্বাস্থ্য মহাপরিচালক
Published: 13th, August 2025 GMT
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেছেন, “স্বাস্থ্যখাত সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীরা যে তিন দফা দাবি তুলেছে, তা যৌক্তিক। তবে তা বাস্তবায়নে দীর্ঘসময় লাগবে। সেবার মান বৃদ্ধিতে লোকবল, অবকাঠামোগত পরিবর্তনেও সময় লাগবে।”
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন এবং কর্মকর্তা ও সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আন্দোলনকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটা কি সরকারকে বেকাদায় ফেলে তৃতীয় পক্ষের কেউ ফায়দা লোটতে চায় কিনা, তা ভাবতে হবে। তবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখবে।”
আরো পড়ুন:
নবীনদের স্বাগত জানাতে সেজেছে ববি
সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
মহাপরিচালকের সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা.
মতবিনিময় সভায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা অংশগ্রহণ করেন।
অপরদিকে, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলের স্বাস্থ্য পরিসেবা বৃদ্ধির পাশপাশি দেশব্যাপী স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা ১৭ দিন ধরে আন্দোলন করছেন। এর মধ্যে পাঁচদিন ধরে তারা নগরীর নথুল্লাবাদে মহাসড়ক অবরোধ করায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা এই অবরোধ পালন করছেন।
এছাড়া শের-ই বাংলা মেডিকেলের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা অনশনে রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ অন্যান্যরা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের অনুরোধ না রেখে অনশন অব্যহত রেখেছেন আন্দোলনকারীরা এবং তারা স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার দাবি করেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাতে বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন অনশনরতদের জন্য ফল নিয়ে গেলে তা রাখেননি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অনশরতদের সঙ্গে কথা বলে ব্যর্থ হয়েছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মশিউল মুনীরও।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সংগঠক মহিউদ্দিন রনি বলেন, “সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে অব্যবস্থাপনা, রোগীদের হয়রানি ও স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট ভাঙার দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন। আমাদের দাবি স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে স্বশরীরে বরিশালে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিতে হবে। তিনি (স্বাস্থ্য উপদেষ্টা) বরিশালে না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদ ও তিন দফা দাবি আদায়ে চলমান ১৭ দিনের আন্দোলন থামাতে বরিশাল সফর করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। সড়কপথে বুধবার সকালে বরিশালে পৌঁছে তিনি বৈঠক করেন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের কনফারেন্স রুমে বিকেল পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল অনশন বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্র সংসদের দাবিতে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দৃঢ অবস্থান
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (মাকসু) প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরণ ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান সাজু আমরণ অনশন শুরু করেন। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতীকী অনশনে অংশ নেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি চলছে। অনশনরত আক্তারুজ্জামান অসুস্থ হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির অন্যতম হলো দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যেই ২১ জুলাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবিপত্র দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রিজেন্ট বোর্ড থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
পরবর্তীতে ২ আগস্ট প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ১০ আগস্টের মধ্যে রিজেন্ট বোর্ডে প্রস্তাবটি পাস করানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দাবি বাস্তবায়িত হয়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
অনশনস্থলে শিক্ষার্থীরা “ভাত নয়, আইন খাবো”, “তালা ভাঙছি, মাকসু আনবো”, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
গতকাল রাত ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এসে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করীম বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিটি পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডে তুলব। যদি তখনও সমাধান না আসে, তারা পরবর্তী কর্মসূচি নিতে পারেন। আমরা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেছি এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি যেন কোনো নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যঝুঁকি না হয়।”
বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে প্রশাসন আলোচনা করেছে এবং একটি মিটিংও হয়েছে। আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কীভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, সেই প্রক্রিয়া চলছে।”
ঢাকা/আবিদ/ইভা