সরাইলে পণ্যবাহী ট্রাক বিকল হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট
Published: 14th, August 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে একটি পণ্যবাহী ট্রাক বিকল হওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত উপজেলার বেড়তলা থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড় মোড় হয়ে শাহবাজপুর এলাকায় প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী একটি বালুবাহী ট্রাক মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর এলাকায় বিকল হয়ে যায়। এতে মহাসড়কটির ওই অংশের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল করতে থাকে। সড়কজুড়ে খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। একপর্যায়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রাকটির পাশে মাটি দিয়ে যান চলাচলের চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চার-পাঁচটি যানবাহন আবার আটকে যায়। পরে পুলিশ সেগুলো রেকার দিয়ে উদ্ধার করে।
সূত্রগুলো আরও বলছে, ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের বিশৃঙ্খলা চলতে থাকে। চালকেরা কার আগে কে যাবেন—এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সকাল আটটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ প্রথমে বিকল ট্রাকটি থেকে কিছু বালু অপসারণ করে। একপর্যায়ে সকাল সোয়া নয়টার দিকে রেকার দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকটি সরিয়ে নিতে সক্ষম হয় তারা। ততক্ষণে সরাইল উপজেলার বেড়তলা থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে শাহবাজপুর পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট লেগে যায়। এরপর যান চলাচল শুরু হলেও ধীরগতির কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কারণ হিসেবে বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের চারপাশের সড়কে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তকে দায়ী করেছেন চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের চারপাশে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তে কাদাপানি জমে আছে। এতে গোলচত্বরের তিন–চতুর্থাংশ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দূরপাল্লার যানবাহন মহাসড়কের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে থেমে যাচ্ছে। এসব গর্ত অতিক্রম করতে গিয়ে পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চলতে হচ্ছে মাত্র এক থেকে পাঁচ কিলোমিটার গতিতে।
যানবাহনের দীর্ঘ সারি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বর ড ম ড় র এল ক য় য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই এসআই ও ছয় কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রংপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে বুধবার (১৩ আগস্ট) তাদের বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
পাশাপাশি ওই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়েরকে তদন্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলামকে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি এমএ ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
মাগুরায় টাকা চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩
রংপুরে গণপিটুনিতে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- তারাগঞ্জ থানার এসআই আবু জোবায়ের, এসআই সফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল ফারিকুদ আখতার জামান, ধিরাজ কুমার রায়, হাসান আলী, ফিরোজ কবির, মোক্তার হোসেন ও বাবুল চন্দ্র রায়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আট পুলিশ সদস্যকে বুধবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই দিন ঘটনার সময় তারাগঞ্জ থানায় মোবাইল টিমের দায়িত্বে ছিলেন তারা।
শনিবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় চোর সন্দেহে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাস নামে দুইজনকে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করেন এলাকাবাসী। নিহতরা সম্পর্কে আত্মীয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর দাসের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার লাল চাঁদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। রবিবার (১০ আগস্ট) বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। শনিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে প্রদীপ দাস তারাগঞ্জের রুপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হন। গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় গিয়ে রুপলালকে ফোন করেন।
রুপলাল গেলে দুইজনে ভ্যানে চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাদের থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করে লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুইজন। ফলে লোকজনের সন্দেহ আরো বৃদ্ধি পায়। এরপর রুপলাল ও প্রদীপকে মারধর করতে শুরু করেন এলাকাবাসী।
মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফেলে রাখা হয়। রাত ১১টার দিকে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক রুপলাল দাসকে (৪০) মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে (৩৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার ভোরে তিনিও মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত রূপলাল দাসের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ