শের–ই–বাংলা মেডিকেলের কর্মীদের ধাওয়া ও মারধরে শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি পণ্ড
Published: 14th, August 2025 GMT
বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ধাওয়া ও মারধরে পণ্ড হয়ে গেছে ছাত্র–জনতার ব্যানারে আয়োজিত অনশন কর্মসূচি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের তিন দফা দাবিতে গত শুক্রবার থেকে বরিশাল–ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ ও তিন দিন ধরে শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশন পালন করছিলেন। আজ সকালে সেখানে তিন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা কয়েকজন আন্দোলনকারী মেডিসিন ওয়ার্ডের জরুরি বিভাগের এক কর্মীকে লাঞ্ছিত ও ইন্টার্ন চিকিৎসক–নার্সদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তখন হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরে হাসপাতালের কর্মচারীরা বাইরে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কর্মকর্তা–কর্মচারীদের তোপের মুখে আন্দোলনকারীরা দ্রুত সেখান থেকে সরে পড়েন। এ সময় আন্দোলনকারী একজনকে ধাওয়া করে মারধর করতে দেখা যায়। এই আন্দোলনের সংগঠক মহিউদ্দিন রনি ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরে যান। পরে হাসপাতালের কর্মচারীরা সামনের বান্দ রোডে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা মহিউদ্দিন রনির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন।
আরও পড়ুনছাত্র-জনতার ব্যানারে আন্দোলন চলবে, সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের৬ ঘণ্টা আগেনাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫ দিন ধরে আন্দোলনের নামে হাসপাতালের চিকিৎসাব্যবস্থা ব্যাহত করা হচ্ছে। হাসপাতালের মূল ফটকে অনশনের নামে একধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে বরিশালের সব রাজনৈতিক দল, সচেতন নাগরিক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ তাতে আশ্বস্ত হয়। এরপরও একটি ক্ষুদ্র অংশ অযৌক্তিক আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেয়। তাঁরা আমাদের স্টাফদের মারধর করেছেন, চিকিৎসক–নার্সদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এ জন্য আমরা প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’
এদিকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত হাসপাতাল এলাকায় বিক্ষোভ ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুনষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ, ভুক্তভোগী যাত্রী-চালকদের ক্ষোভ২২ ঘণ্টা আগেশের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেন চিকিৎসক, নার্সসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল র কর ম বর শ ল এ সময় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্র সংসদের দাবিতে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দৃঢ অবস্থান
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (মাকসু) প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরণ ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান সাজু আমরণ অনশন শুরু করেন। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতীকী অনশনে অংশ নেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি চলছে। অনশনরত আক্তারুজ্জামান অসুস্থ হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির অন্যতম হলো দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যেই ২১ জুলাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবিপত্র দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রিজেন্ট বোর্ড থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
পরবর্তীতে ২ আগস্ট প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ১০ আগস্টের মধ্যে রিজেন্ট বোর্ডে প্রস্তাবটি পাস করানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দাবি বাস্তবায়িত হয়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
অনশনস্থলে শিক্ষার্থীরা “ভাত নয়, আইন খাবো”, “তালা ভাঙছি, মাকসু আনবো”, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
গতকাল রাত ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এসে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করীম বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিটি পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডে তুলব। যদি তখনও সমাধান না আসে, তারা পরবর্তী কর্মসূচি নিতে পারেন। আমরা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেছি এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি যেন কোনো নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যঝুঁকি না হয়।”
বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে প্রশাসন আলোচনা করেছে এবং একটি মিটিংও হয়েছে। আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কীভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, সেই প্রক্রিয়া চলছে।”
ঢাকা/আবিদ/ইভা