চাঁদপুরে ১৫ আগস্ট জেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত কার্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ‘মিউজিক পার্টি’র। জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া কিছু ছাত্র ও জনতা আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ‘ব্যঙ্গ করে’ বাজানো হয় ‘জয় বাংলা, জিতবে আবার নৌকা’ গান। ওই গান শুনে ‘আওয়ামী লীগ ফিরে এসেছে’ ভেবে অতর্কিতে হামলা করে আরেক দল লোক। এ সময় মিউজিক পার্টির জন্য আনা সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়।

হামলায় আরিয়ান আহমেদ নামের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জড়িত এক শিক্ষার্থী আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সলিমুল্লাহ সেলিমসহ নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্তি ও ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে জেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত কার্যালয়ের নিচতলায় মিউজিক পার্টির আয়োজন করে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া কিছু ছাত্র ও জনতা। এতে ‘জয় বাংলা, জিতবে এবার নৌকা’, ‘পালিয়েছে, শেখ হাসিনা পালিয়েছে’সহ বিভিন্ন গান বাজানো হয়। কিন্তু ‘জয় বাংলা, জিতবে এবার নৌকা’ গান শুনে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ অবস্থান নিয়েছে’ ভেবে অতর্কিতে হামলা চালান একদল লোক।

খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

বাহার মিয়া ঘটনাস্থলে আসেন। একই সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সলিমুল্লাহ সেলিম এসে পুলিশের মাইক হাতে নিয়ে সবাইকে শান্ত করেন। ভাঙচুর ও উত্তেজনার মধ্যে এক শিক্ষার্থী এতে আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের নিচতলায় মিউজিক পার্টির আয়োজন করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এতে বিভিন্ন দলের লোক উপস্থিত ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার পর সেখানে বাজানো গান শুনে পুলিশ এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আয়োজন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বুঝতে পেরে তাঁরা সরে যান। কিন্তু ‘জয় বাংলা, জিতবে এবার নৌকা’ গান শুনে ফরিদগঞ্জের বিএনপির একজন নেতা এসে বাধা দেন। তাঁর সঙ্গে একদল লোক এসে ‘ফ্যাসিবাদকে প্রতিহত কর’ বলে ভাঙচুর চালায়। পরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসে সবাইকে শান্ত করেন। মূলত ভুল–বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানতে চাইলে বিএনপি নেতা সলিমুল্লাহ সেলিম বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় কাছাকাছি চাঁদপুর ক্লাবে ছিলাম। তখন আমাকে বৈষম্যবিরোধী ও বিএনপির পক্ষ থেকে ফোন করা হয়। তখন আমি দৌড়ে এসে দেখি চরম উত্তেজনা ও ভাঙচুরে ঘটনা ঘটেছে। পরে সবাইকে আওয়ামী লীগ অফিস ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলে সবাই চলে যায়। আমি সেখানে সময়মতো না গেলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতো।’

চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া জানান, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মব সৃষ্টি করে বিজিবির অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় মব সৃষ্টি করে বিজিবির মাদকবিরোধী অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বাখেরআলী বিজিবি ক্যাম্পের কাছে ৪ নম্বর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে বিজিবি সদস্যরা সেখান থেকে ফেনসিডিল ও ভারতীয় রুপিসহ একজনকে আটক করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটক সাজিদ আহম্মেদ টুটুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকার ফজুলর রহমানের ৩০বছর বয়সী ছেলে।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় কোটি টাকার অস্ত্র-মাদকসহ আটক ৫

কলমাকান্দায় ভারতীয় মদসহ যুবক আটক

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫৩ বিজিবি জানিয়েছে, মাদক সেবন করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে বিজিবির বাখেরআলী বিওপির একটি টহলদল ৪ নম্বর বেড়িবাঁধ এলাকার একটি আম বাগানে অভিযান চালায়। টের পেয়ে সেখান থেকে কয়েকজন ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এ সময় ১৫২ বোতল ফেনসিডিল, একটি খালি মদের বোতল, পাঁচটি মোটরসাইকেল ও ৫৪ হাজার টাকাসহ সাজিদ আহম্মেদ টুটুলকে আটক করা হয়।

পরে আটক টুটুলের পালিয়ে যাওয়া সহযোগীরা গ্রামের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে বিজিবির উপর আক্রমণ করার মাধ্যমে মব সৃষ্টি করে এবং সরকারি কাজে চরমভাবে বাঁধা প্রদান করে। পরে ক্যাম্প থেকে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, “মাদকবিরোধী অভিযানে বিজিবির টহল দলের ওপর আক্রমণ করে মব সৃষ্টির চেষ্টা করার মাধ্যমে সহকারি কাজে চরমভাবে বাঁধা প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”

ঢাকা/মেহেদী/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ