বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক
Published: 17th, August 2025 GMT
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা বেগমের সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
মো. আক্তার হোসেন বলেন, আহমেদ আকবর সোবহান দেশে প্রায় ৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি স্থাবর সম্পদ ও ১৮৪ কোটি টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫২ কোটি টাকা। অভিযোগ অনুযায়ী, এই সম্পদ তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। তাঁর স্ত্রী আফরোজা বেগম দেশে প্রায় ১১৭ কোটি টাকার স্থাবর ও ৩৩৫ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪৫৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদ অর্জন করেছেন।
আক্তার হোসেন আরও বলেন, স্বামী–স্ত্রী দুজনই বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এ ছাড়া সুইজারল্যান্ডের লুগানো শহরে, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড ও আইল অব ম্যান দ্বীপে নিবন্ধিত কোম্পানির নামে ব্যাংক হিসাব খুলে অর্থ পাচারের তথ্যও দুদকের হাতে এসেছে। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী তাঁদের নামে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করা হয়েছে।
দুদক এরই মধ্যে এ বিষয়ে একটি যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্তকারী দল গঠন করেছে। এই দলে দুদকের উপপরিচালক শেখ গোলাম মাওলা (দলনেতা), সহকারী পরিচালক সাজিদ উর রোমান ও মাহমুদুল হাসান ভূঁইয়া ছাড়া সিআইডি, কাস্টমস ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা আছেন। দলটির কার্যক্রম তদারক করছেন দুদকের পরিচালক (মানি লন্ডারিং) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাড়ির মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেওয়ায় আকবরকে হত্যা
নড়াইল সদর উপজেলার শড়াতলা গ্রামের ইজিবাইক চালক আকবর ফকিরকে (৬৫) হত্যার ঘটনায় বাবু সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্তকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভোরে সদর উপজেলার বুড়িখালী এলাকার বাঁশবাগান থেকে আকবর ফকিরের গলা ও শরীরের গোপনাঙ্গ কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার দেহ গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ছিল। নিহত আকবর ফকির একই ইউনিয়নের শড়াতলা গ্রামের মৃত মমিন ফকিরের ছেলে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে ছাত্রলীগ কর্মীর ছুরিকাঘাতে জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, ফাঁড়ি ঘেরাও
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নড়াইলের পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের ছেলে নাজির ফকির বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। পরে জেলা গোয়েন্দাহ পুলিশের একাধিক টিম হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামি শনাক্তে কাজ শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার মশাগুনি এলাকার ব্র্যাক অফিস এলাকা থেকে বাবু সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার বাবু সরদার হত্যার দায় স্বীকার করে জানান, নিহত আকবর ফকির দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং শ্বাশুড়িকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তিনি তার মেয়ে ও পুত্রবধূর দিকে কুদৃষ্টি দেন। এসব ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই আকবর ফকিরকে হত্যা করেন বলে জানান বাবু সরদার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবু সরদার একটি চাকু এবং স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ২০টি অ্যালার্জির ট্যাবলেট কেনেন। হত্যার দিন রাতে আকবর ফকিরকে কৌশলে নির্ধারিত স্থানে ডেকে কোমল পানীয়র সঙ্গে ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করান। অচেতন হয়ে পড়লে গামছার টুকরা দিয়ে হাত-পা গাছে বেঁধে চাকু দিয়ে গলা কেটে আকবর ফকিরকে হত্যা করেন তিনি। পরে মরদেহ বিকৃত করতে নিহতের অন্ডকোষ ও গোপনাঙ্গ কেটে ফেলেন।
পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার বাবু সরদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কারো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ