মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ হালাল পণ্যের মেলা ‘মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল হালাল শোকেস’ (মিহাস) শেষ হয়েছে আজ শনিবার। চার দিনব্যাপী এ আয়োজন শুরু হয়েছিল ১৭ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে (মিটেক)।

এবারের মেলায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম ভোক্তা খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ ১৫ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের খাদ্যপণ্য বিক্রির ক্রয়াদেশ পেয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির প্রদর্শিত ৬০টি নতুন পণ্য মালয়েশিয়ার দুটি সুপারশপ চেইন-ইকনসেভ ও ইকোশপ-এ যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

২১তম আসরের এই মেলার আয়োজন করে মালয়েশিয়া বহির্মুখী বাণিজ্য উন্নয়ন করপোরেশন (ম্যাট্রেড)। এতে বিশ্বের ৯০টি দেশ থেকে ২ হাজার ৩০০ স্টলে নানান হালাল পণ্য প্রদর্শন করে অংশ নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের প্রাণ ও রিমার্ক এইচবিও এতে অংশ নেয়।

মেলায় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য যেমন নুডলস, বিস্কুট, জুস, মাছ-মাংস ছাড়াও পোশাক, প্রসাধনী, আসবাব, ওষুধ ও যন্ত্রপাতিসহ নানা ধরনের জীবনযাপন ও সৌন্দর্যবর্ধনের হালাল সামগ্রী প্রদর্শন করা হয়।

প্রাণ গ্রুপের উপ মহাব্যবস্থাপক তৌহিদুজ্জামান জানান, এবারের প্রদর্শনীতে প্রায় ৫০০ ধরনের খাদ্যপণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে জুস, বেকারি, বিস্কুট, কনফেকশনারি, নুডলস, সস, চকলেটসহ বিভিন্ন রেডিমেড খাদ্য উপকরণ ছিল। বিশেষভাবে কোরিয়ান নুডলস, বিভিন্ন বিস্কুট ও বাসিল সিড ড্রিংকসকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়।

তিনি আরও জানান, মেলায় প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থী প্রাণের নতুন পণ্যের স্যাম্পলিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন। এতে পণ্যের স্বাদ ও মান সম্পর্কে ধারণা নিতে পেরেছেন তাঁরা। এই উদ্যোগ সরাসরি বিক্রয় সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে আশা করছে প্রাণ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খ দ যপণ য প রদর শ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করার পর কর্মবিরতির ডাক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিনেট ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলিম এ ঘোষণা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল আলিম বলেন, ‘শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে আগামীকাল পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। দাবি না মানা হলে সোমবার থেকে কর্মবিরতি চলমান থাকবে। এই কর্মসূচি শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা–কর্মচারীও পালন করবেন।’

প্রসঙ্গত, শনিবার বেলা তিনটার দিকে সহ-উপাচার্য প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে এলে পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তাঁর বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। সেখানে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি তোলেন। তখন সেখানে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানও ছিলেন। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি থেকে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়।

বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই অবরুদ্ধ ছিলেন।

চলমান পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আবদুল আলিম জানান, আজ শনিবার আনুমানিক বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন দাপ্তরিক কাজ শেষে দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। এমতাবস্থায় কয়েকজন ছাত্র তাঁকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং অশালীন উক্তিসহ তাঁর গাড়ির ওপরে ভিক্ষা হিসেবে টাকা ছুড়ে দেন। এরপর হেঁটে তাঁর বাসায় ঢুকতে গেলে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে তিনি জুবেরী ভবনে গেলে তাঁকে ঘিরে নানা ধরনের কটূক্তি করেন এবং তাঁকে নিয়ে ধস্তাধস্তি করতে থাকেন।

আবদুল আলিম বলেন, ‘প্রক্টরসহ তাঁর বডির সদস্যবৃন্দ মাঈন উদ্দীনকে প্রোটেকশন দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রক্টরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় প্রক্টরের পকেট থেকে ১০ হাজার টাকা ও তাঁর হাতঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। সহ-উপাচার্য নিরুপায় হয়ে জুবেরী ভবনের দোতলায় একটি কক্ষে আশ্রয় নিতে গেলে তাঁর গলা চেপে ধরে ও তাঁকে ধাক্কা মেরে সিঁড়িতে ফেলে দেয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন একটি আবাসিক ও ক্লাব ভবন। এখানে অনেক পরিবার বাস করে।

অধ্যাপক আবদুল আলিম অভিযোগ করে বলেন, জুবেরী ভবনের অবস্থানরত কক্ষে বিদ্যুৎ–সংযোগ ও খাবার পানির ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিসহ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ওই ভবনে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভবনের পরিবারগুলো আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল আলিম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও রাকসুর নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এনামুল হক জুবেরী ভবনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে ভবন থেকে বের করে হাসপাতালে নিতে হয়। এ ঘটনাবলি আসন্ন রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনে করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ