ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল আরো ৬ দেশ
Published: 23rd, September 2025 GMT
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বের আরো ছয়টি দেশ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের আগে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ফ্রান্সসহ ৬টি দেশের নেতারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আরো পড়ুন:
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি: প্রতিশোধ না নিতে ইসরায়েলকে সতর্ক করল যুক্তরাজ্য
এবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল পর্তুগাল
প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান (টু স্টেট সলিউশন) নীতির বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উদ্যোগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল ব্যতীত জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্যরাষ্ট্র এই সম্মেলনে শামিল হয়েছিলেন। সম্মেলনে ফ্রান্সের পাশাপাশি বেলজিয়াম, অ্যান্ডোরা, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা এবং মোনাকো জানিয়েছে, তারা একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, পর্তুগাল এবং যুক্তরাজ্যের নেতারা, যারা একদিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, তারাও সভায় বক্তব্য রাখেন।
ফিলিস্তিন ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বিষয়ক এই শীর্ষ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেন, “আমরা এখানে সমবেত হয়েছি কারণ এখন সময় এসেছে। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা রক্ষা করার জন্য আমাদের ক্ষমতায় যা কিছু আছে তা করা আমাদের দায়িত্ব।”
তিনি বলেন, “আজ আমি ঘোষণা করছি- ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে”। তিনি বলেন, “এটাই একমাত্র সমাধান, যা ইসরায়েলকে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ করে দেবে।”
ম্যাক্রোঁ আরো বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা অব্যাহত থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে”। তিনি বলেন, “যুদ্ধ বন্ধ করার সময় এসেছে। গাজায় বোমা হামলা, হত্যাযজ্ঞ ও মানুষের দুর্দশা- কোনো কিছুই এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা তৈরি করে না।”
তিনি সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর প্রশংসা করেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের মতে, স্বীকৃতি ‘কার্যকর আলোচনার পথ প্রশস্ত করবে’ এবং তিনি আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আহ্বান জানান।
সম্মেলনের আয়োজক দেশ ফ্রান্স জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর অঙ্গসংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্ক, ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির ভোটাররা ট্রাম্পকে প্রত্যাখ্যান করে কী বার্তা দিলেন
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলজুড়ে ভোটাররা মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটদের জয় এনে দিয়েছেন। এই ফলাফল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের এক বছরের মধ্যেই তাঁর প্রতি মানুষের অসন্তোষের সুস্পষ্ট প্রকাশ বলা চলে।
ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে মধ্যপন্থী প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য অ্যাবিগাইল স্প্যানবার্গার রাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে সহজেই জয়ী হয়েছেন।
নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের আরেক মধ্যপন্থী প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মিকি শেরিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যাক সিয়াটারেলি হারিয়ে দিয়েছেন।
নিউইয়র্ক নগরে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোরান মামদানি এই বছর দ্বিতীয়বারের মতো সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়েছেন। প্রথমে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারিতে এবং তারপর সাধারণ নির্বাচনে। সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন পেয়েছিলেন।
তীক্ষ্ণ আদর্শগত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের এসব জয় তাঁদের দলের দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ বিতর্ককে খুব একটা মীমাংসা করতে পারবে না। সেই বিতর্ক হচ্ছে, তাঁদের কোন পথে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ, কয়েক মাসের মধ্যেই একাধিক মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রাইমারি অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রাইমারিও আসন্ন।
তবে ডেমোক্র্যাটদের সর্বশেষ নির্বাচনী প্রচারে কিছু বিষয়ে মিল ছিল। যদিও সমাধানের পথ তাঁরা ভিন্ন ভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। প্রার্থীরা মানুষের সাশ্রয়ী জীবনযাত্রার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তাঁরা সবাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচক ছিলেন।
নিউইয়র্কের প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ জোহরান মামদানির বিজয় সমাবেশ থেকে সিএনএনকে বলেছেন, ‘এটি শুধু ডেমোক্র্যাটদের নিয়ে একটি বার্তা নয়; বরং গোটা দেশের জন্য একটি বার্তা। আমি মনে করি, মার্কিনরা এই প্রশাসনের কাছ থেকে যা দেখছেন, তাতে আতঙ্কিত।’
ক্যালিফোর্নিয়ায় ভোটাররা ‘ভোট পুনর্বিন্যাস’ ব্যালটের পদক্ষেপে অনুমোদন দিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, আগামী বছর কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে ডেমোক্র্যাটদের সুযোগ বৃদ্ধি করা।
পেনসিলভানিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের ডেমোক্র্যাট বিচারপতিরা পুনর্নিয়োগের ভোটে জয় পেয়েছেন। ফলে রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকছে। এই অঙ্গরাজ্য সব সময় রাজনৈতিক লড়াইয়ের কেন্দ্র, যেখানে ভোটের নিয়ম নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ দেখা যায়।
কুমোকে আবার হারালেন মামদানি
মামদানি তাঁর প্রগতিশীল ভাবনা ও নতুন নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতির দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। নিউইয়র্ক নগরে তিনি মানুষের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন, যা ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে। ভোটাররা তাঁর পরিকল্পনাকে আরও এগিয়ে নিতে একাধিক প্রস্তাবও অনুমোদন করেছেন, যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে বাড়ি নির্মাণের জটিল নিয়মগুলো সহজ করা যায়।
জোহরান যদি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেন, তাহলে নিউইয়র্ক নগর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে, বিশেষ করে যেখানে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হলে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য এটি একধরনের সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিজয় মঞ্চে নিউ জার্সির ডেমোক্রেটিক পার্টির নবনির্বাচিত গভর্নর মিকি শেরিল। ৪ নভেম্বর ২০২৫, ইস্ট ব্রান্সউইক