পেট্রোবাংলার নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা, অনিশ্চয়তায় চাকরিপ্রার্থীরা
Published: 25th, September 2025 GMT
বাংলাদেশে সরকারি চাকরি পাওয়া অনেক তরুণের স্বপ্ন। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্ত ফলাফলে নাম আসা সেই স্বপ্নের সিঁড়ি। কিন্তু চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েও মাসের পর মাস যদি নিয়োগ আটকে থাকে, তা হয় যেন ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’। এমন অবস্থার মধ্যে আছেন পেট্রোবাংলার কারিগরি ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া ৩২৭ প্রার্থী। ৩২৭ পদের মধ্য ফেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করেন ২৯১ জন।
চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও চাকরিতে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি দেশের বিশেষায়িত সরকারি প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা।
একটি সরকারি নিয়োগের পথচলা
পেট্রোবাংলা ২০২৪ সালের ৫ মার্চ কারিগরি, সাধারণ ও অর্থ ক্যাডারে মোট ৬৭০টি পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। একই বছরের ৩১ মে অনুষ্ঠিত হয় কারিগরি ক্যাডারের লিখিত পরীক্ষা। মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত হয় চূড়ান্ত ফলাফল। এর মধ্যে ২৯১টি পদের পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়েছে। সাধারণত চূড়ান্ত ফলাফলের কয়েক মাসের মধ্যেই প্রার্থীদের যোগদানের সুযোগ হয়। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কাজে যোগদান করতে পারেননি চাকরিপ্রার্থীরা। ফলে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
চাকরি ছেড়ে বেকার
প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ১০ জন আগের চাকরি ছেড়ে এখন বেকার অবস্থায় আছেন। একজন প্রার্থী আগে একটি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ হবে ভেবেছিলাম। তাই চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কিছু হয়নি। সামাজিক চাপ তো আছেই, আর্থিক চাপের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
অন্য এক প্রার্থী বলেন, ‘বাবা অবসরে গেছেন, সংসারের দায়িত্ব আমার কাঁধে। ছোট চাকরি করতাম, সংসার চলত কোনোমতে। পেট্রোবাংলায় চাকরি হওয়ার খবর শোনার পর মা–বাবা খুব খুশি হয়েছিলেন। এখন তাঁদের চোখে হতাশা। পরিবার চালানোই কঠিন হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুনপ্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এডি পদে চাকরি, নবম গ্রেডে নেবে ২৫ জন ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫মানসিক চাপে প্রার্থীরা
প্রার্থীরা বলছেন, এই অনিশ্চয়তা শুধু আর্থিক নয়, মানসিক দিক থেকেও বড় চাপ তৈরি করছে। কেউ পরিবারকে ভরসা দিতে পারছেন না, কেউ আবার আত্মীয়স্বজনের কটূক্তি সহ্য করছেন।
এক প্রার্থী বলেন, ‘গ্রামে গেলে সবাই প্রশ্ন করে, কবে যোগদান করব। আমি নিজেও জানি না। লজ্জায় কথা বলতে ইচ্ছা করে না।’ আরেকজন যোগ করেন, ‘এত কষ্ট করে পরীক্ষায় পাস করেছি। এখন মনে হচ্ছে, এই অপেক্ষার চেয়ে বরং পাস না করাই ভালো ছিল।’
আরও পড়ুন৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, বলছে পিএসসি২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫আমলাতান্ত্রিক জটিলতা
পেট্রোবাংলার নিয়োগ বিধিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের উল্লেখ নেই। কিন্তু এবার ফরম জমা নেওয়া হয় ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মার্চে ভেরিফিকেশনের জন্য চিঠি পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
প্রার্থীরা বলছেন, ভেরিফিকেশনে দীর্ঘসূত্রতার কারণেই নিয়োগ আটকে আছে। কারিগরি ক্যাডারের ভেরিফিকেশন শেষ হলেও সাধারণ ও অর্থ ক্যাডারের প্রক্রিয়া এখনো চলমান।
ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই এই দেরি হচ্ছে।
আরও পড়ুনলন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে ফ্রি অনলাইন কোর্স, পেশাজীবী এবং শিক্ষার্থীদের সুযোগ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫পেট্রোবাংলার ব্যাখ্যা
পেট্রোবাংলার পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এস এম মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নন–ক্যাডার নিয়োগের বিধি অনুযায়ী একই বিজ্ঞপ্তির সব ক্যাডারের নিয়োগ একসঙ্গে দিতে হবে। কারিগরি ক্যাডারের ভেরিফিকেশন শেষ হলেও অন্য দুটি শেষ হয়নি। আমরা নিয়মিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দ্রুত শেষ করতে বলছি। নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’
প্রার্থীদের দাবি
ভুক্তভোগীরা বলছেন, দ্রুত নিয়োগ না হলে তাঁদের অনেকেই নতুন করে চাকরির চেষ্টা শুরু করতে বাধ্য হবেন। তাতে সময় ও সুযোগ নষ্ট হবে। একজন প্রার্থী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ আটকে আছে। যত দেরি হচ্ছে, ততই বয়স বাড়ছে। সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা তো আছে। এভাবে সময় চলে গেলে নতুন করে চেষ্টা করার সুযোগও কমে যাবে।’
প্রার্থীরা বলছেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্ত ফলাফলে নাম আসার পর তাঁদের পরিবারের স্বপ্নও বড় হয়েছে। এখন সেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার শঙ্কায় সবাই দিশাহারা।
একজন বলেন, ‘আমরা চাই না আর কোনো প্রজন্ম এমন ভোগান্তির শিকার হোক। লিখিত থেকে চূড়ান্ত ফল—সব জায়গায় পাস করেছি। এখন শুধু যোগদানের অপেক্ষা। এত কিছুর পরও যদি চাকরিটা না হয়, তাহলে আমরা কার কাছে যাব?’
আরও পড়ুনবাংলাদেশ বিমানে চাকরি, নেবে ৪৬ কর্মী২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ড় ন ত ফল ফল স প ট ম বর পর ক ষ প রক শ বলছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নিয়ে ট্রাম্পের বিশ দফা যেন বিশটি ‘বিষের বড়ি’
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই যুদ্ধে ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত, ১ লাখ ৬৮ হাজার জন আহত এবং কয়েক হাজার শিশু অনাহারে মারা গেছে। সর্বশেষ গাজা সিটি দখল করতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলে।
এই নির্মম চক্র ‘ভাঙতে’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক প্রস্তাব ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটি এআই-জেনারেটেড ভিডিও পোস্ট করে গাজাকে মার্কিন দখলে নিয়ে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর স্বপ্নের কথাও জানান দিয়েছিলেন তিনি।
নতুন করে আবারও তিনি ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। যেখানে হামাসকে উচ্ছেদ করে ‘টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’ গঠনের কথা রয়েছে। সেই কমিটিকে তদারক করার জন্য একটি ‘শান্তি পরিষদ’ গঠন করা হবে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে। তবে চেয়ারম্যান প্রধান থাকবেন ট্রাম্প নিজেই।
সোমবার হোয়াইট হাউস এই পরিকল্পনা প্রকাশের আগে চলমান জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে আরব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। এরপর তিনি নেতানিয়াহুর সম্মতি গ্রহণ করেন এবং হামাসকে হুমকি দিয়েছেন, ‘মেনে নাও, নইলে যুদ্ধ চলবে।’
কিন্তু এই ‘শান্তি পরিকল্পনা’ কি শান্তি আনবে, নাকি ফিলিস্তিনিদের জন্য এটা হবে একটা নতুন শৃঙ্খল? ফিলিস্তিনি-আমেরিকান বিশ্লেষক ওমর বদ্দার এই পরিকল্পনাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘পয়জন পিল’ বলে। তিনি আল–জাজিরাকে বলেছেন, কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও এর মূল উপাদান ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হয়েছে। গাজার বাসিন্দা ইবরাহিম জুদেহ বলেন, ‘এটি অবাস্তব—যুদ্ধ চলবে।’
বিষাক্ত স্বপ্নের সূচনা যেভাবে হয়ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনা মূলত তার ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর ‘গাজা রিভিয়েরা’ প্রস্তাবেরই ছায়া। সে সময় তার ‘গাজা রিকনস্ট্রাকশন, ইকোনমিক অ্যাকসিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট (GREAT) প্রকল্পে গাজাকে দুবাই-স্টাইলের রিসোর্টে রূপান্তরের কল্পনা করা হয়, যেখানে থাকবে স্কাইস্ক্র্যাপার, কৃত্রিম দ্বীপ, ‘ট্রাম্প রিভিয়েরা’ এবং ‘ইলন মাস্ক স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং জোন’।
৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ৯ হাজার ডলারের ‘রিলোকেশন প্যাকেজ’ দিয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ অন্য দেশে সরানোর পরিকল্পনা ছিল। পরে আরব রাষ্ট্রনেতারা ও জাতিসংঘ এটিকে ‘পাগলামি’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। এমনটি ইসরায়েলে জনপ্রিয় দৈনিক হারেৎজ ‘ট্রাম্পিয়ান গেট-রিচ-কুইক স্কিম’ বলে উপহাস করে।
পরে প্রকাশ পায় যে, এই প্রস্তাবের নেপথ্যে ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের তদন্তে উঠে আসে, ব্লেয়ারের ‘টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জ’ (টিবিআই) ইসরায়েলি ব্যবসায়ী ও বিসিজির সঙ্গে মিলে ‘গাজা ইকোনমিক ব্লুপ্রিন্ট’ তৈরি করে এবং ইসরায়েল পরিচালিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) নিরাপত্তা প্রধান সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ফিল রিলে সে সময় ব্লেয়ারের সঙ্গে লন্ডনে সাক্ষাৎ করে প্রজেক্ট পিচ করেন।
সেই ‘রিভিয়েরা’র ছায়াই ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনায় ফিরে এসেছে। ধারণা করা হয়, সে কারণেই বর্তমান পরিকল্পনায় ব্লেয়ার ‘ট্রানজিশনাল অথরিটি’র পরিচালক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুনট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা: নেতানিয়াহুর পরাজয় নাকি হামাসের আত্মসমর্পণ২১ ঘণ্টা আগেব্লেয়ারের বিতর্কিত ভূমিকাপরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে গাজার শাসন একটি ‘অস্থায়ী টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’, যা ‘শান্তি পরিষদ’–এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। কিন্তু কমিটির সদস্য কে নির্বাচন করবে? প্রক্রিয়া কী? এর কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। ব্লেয়ারকে বলা হয় ২০০৩-এর ইরাক যুদ্ধের ‘স্থপতি’। চিলকট রিপোর্ট প্রমাণ করে, ব্লেয়ার শান্তিপূর্ণ বিকল্প চূড়ান্ত না করে যুদ্ধে যান, যা লাখ লাখ জীবন ধ্বংস করেছে।
ওমর বদ্দার বলেন, ‘ব্লেয়ার ও ট্রাম্পের রেকর্ড অপরাধমূলক। ব্লেয়ার ইরাক আক্রমণের মিথ্যার অজুহাতের নায়ক ছিলেন; আর ট্রাম্প হলো পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি স্থাপন, গোলান মালভূমি দখল, জেরুজালেম ইসরায়েলের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সমর্থক।’
জাতিসংঘের আবাসন বিশেষজ্ঞ বালাকৃষ্ণান রাজাগোপাল আল–জাজিরাকে বলেছেন, ‘ব্লেয়ারের নেতৃত্বে ‘ট্রানজিশনাল অথরিটি’ মাধ্যমে স্থায়ী বাফার জোন তৈরি গাজার ভূমি দখলের একটি ঘৃণ্য প্রচেষ্টামাত্র।’ অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ বলেছেন, ‘ব্লেয়ার গাজায় কেন, তার তো ইরাক যুদ্ধের জন্য বিচারের কাঠগড়ায় থাকা উচিত।’ লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিনের মতে, ‘ব্লেয়ার মধ্যপ্রাচ্যে থাকা উচিত নয়—তার ইরাক সিদ্ধান্ত হাজার হাজার জীবন কেড়েছে।’
২০০২ সালে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে, বিশেষ করে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের লক্ষ্যে ‘কোয়ার্টেট অন দ্য মিডল ইস্ট’ নামের একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ গঠিত হয়েছিল। ব্লেয়ার ছিল এই গ্রুপের প্রতিনিধি। ব্লেয়ারের দায়িত্ব ছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রতিষ্ঠান গঠনে সহায়তা, অর্থনৈতিক প্রকল্প তত্ত্বাবধান এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় সহযোগিতা করা। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, তিনি তখন অবৈধ ইসরায়েলি বসতি রোধ করতে কোনো ভূমিকা রাখেননি, বরং ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছেন। এমনকি ২০১৪ সালে ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালালেও ব্লেয়ার নীরব থাকেন।
হামাসকে নিরস্ত্র করা নাকি স্থায়ী দখলের চেষ্টাপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস অস্ত্র ছাড়লে ইসরায়েল ‘মান, অগ্রগতি ও সময়সীমা’ বিবেচনা করে সেনা প্রত্যাহার করবে। কিন্তু কোনো টাইমলাইন নেই। গাজা ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল একটা ‘নিরাপত্তাবেষ্টনী’ দিয়ে রাখবে। কিন্তু কে ঠিক করবে যে ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ হয়েছে কি না?
ওমর বদ্দার বলেন, ‘ইসরায়েল অনির্দিষ্টকাল দখল চালাবে, প্রত্যাহারের কোনো গ্যারান্টি নেই। ফিলিস্তিনিরা বন্দি জীবন যাপন করবে।’ ফিলিস বেনিস বলেন, ‘কোনো নিশ্চয়তা নেই যুদ্ধ শেষ হবে। ইসরায়েল জিম্মি ফিরিয়ে নিয়ে বলতে পারে, ‘সহযোগিতা পাচ্ছি না, যুদ্ধে ফিরব।’ হোয়াইট হাউসের মানচিত্রে দেখানো হয়েছে, তৃতীয় ধাপে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘নিরাপত্তা বাফার জোন’ ধরে রাখবে।
একটি ‘অস্থায়ী আন্তর্জাতিক শান্তি বাহিনী’ (আইএসএফ) নিরাপত্তা দেখবে। কিন্তু কোন দেশ? ম্যান্ডেট কী? ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো হাজার হাজার শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, আবার তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে শিগগিরই ইসরায়েলকে ইন্দোনেশিয়া ‘স্বীকৃতি’ দেওয়ার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন।
তা ছাড়া এই বাহিনীকে কি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা দেওয়া হবে? সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক অ্যালন পিনকাস বলেন, ‘এটি একটি সিমুলেশন গেম—জটিল, বিতর্কিত। নেতানিয়াহু চুক্তি ব্যর্থ করতে সময় কিনবেন। হামাস ৭২ ঘণ্টায় বন্দী মুক্তি দেবে না।’
হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর সোমবার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প