ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নিয়ে বরিশালের আদালত পরিদর্শন করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাঁরা বরিশাল জেলা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনের পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের একটি হোটেলের মিলনায়তনে ইউএনডিপি আয়োজিত ‘জুডিশিয়াল ইনডিপেনডেন্সি অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নেন।

আজ সকাল ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতি বরিশাল আদালতে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বিচারক ও আইনজীবী সমিতির নেতারা। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন আরাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন, ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। বিচার বিভাগের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি স্থানীয় বিচারকদের সঙ্গে তাঁরা মতবিনিময় করেন।

বরিশালের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ ফারুক হোসেন জানান, বিচার বিভাগকে পৃথক্‌করণে প্রধান বিচারপতি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের কার্যক্রম সরেজমিন দেখে ইউএনডিপির প্রধানসহ সাতজন বিদেশি কূটনীতিক সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিনিধিদল আশা প্রকাশ করেছে, দেশের গরিব ও দুস্থ মানুষের জন্য বিচারসেবা আরও সহজ ও কার্যকর হবে। রাষ্ট্রদূতেরা ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতিকে স্বাগত জানান।

এ সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। আদালত পরিদর্শন শেষে দুপুরে প্রধান বিচারপতি নগরের বান্দরোডের একটি হোটেলের হলরুমে ইউএনডিপি আয়োজিত ‘জুডিশিয়াল ইনডিপেনডেন্সি অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন। সেমিনারে বিভাগের জেলা ও দায়রা জজ, অন্যান্য বিচারক এবং আইনজীবীরা অংশ নেন।

এর আগে গতকাল বুধবার দুই দিনের সফরে ইউএনডিপির প্রতিনিধিসহ সুইডেন, নরওয়ে, ইইউ রাষ্ট্রদূত ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার বরিশালে আসেন। তাঁরা সফরের প্রথম দিন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ, তা মোকাবিলায় কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে, সে বিষয়ে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় ইসির অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আলী নেওয়াজ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিদেশি কূটনীতিকেরা বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। ওই দিন বিকেলে তাঁরা নগরের জীবনানন্দ দাশ সড়কে অক্সফোর্ড মিশন চার্চ পরিদর্শন করেন। আজ তাঁরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন ও সেমিনারে অংশ নেন।

আরও পড়ুনবরিশালে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ইসির মতবিনিময়, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউএনড প ক টন ত ক বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ