‘মধ্যরাতে অফিসের একটা প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরছিলাম। বাস থেকে নেমে কোথাও রিকশা পাইনি। বাধ্য হয়ে হেঁটে বাসার দিকে রওনা হয়েছিলাম। তবে পুরো রাস্তায় একটাও সড়কবাতি নেই। দুর্ঘটনা ও ছিনতাইয়ের ভয়ে গা ছমছম করেছে।’

কথাগুলো বলছিলেন নোয়াখালী শহরের জেলখানা সড়ক এলাকার বাসিন্দা মো. শাহজাহান। মাসখানেক আগে দিবাগত রাত একটার দিকে তিনি ঢাকা থেকে বাসে মাইজদী পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছান। এরপরই তাঁর এমন অভিজ্ঞতা হয়। মো.

শাহজাহান বলেন, অন্ধকার সড়কে হাঁটতে আতঙ্ক কাজ করছিল। এর মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয় দুই ব্যক্তি তাঁর পিছু নেন। তাঁরা পেছন থেকে ডেকে তাঁকে দাঁড়াতে বলেছেন। তবে হঠাৎ একটি রিকশা পাওয়ায় বড় বিপদ থেকে সেদিনের মতো রক্ষা পেয়েছিলেন।

অবশ্য শুধু মো. শাহজাহান নন; তাঁর মতো জেলা শহরের হাজারো বাসিন্দা মাইজদীর চার লেন সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সড়কবাতি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাতে সড়কে চলতে আতঙ্কে থাকছেন।

গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিন শহরের মাইজদী বাজার থেকে শহীদ বুলু স্টেডিয়াম এলাকা, নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সামনের সড়ক, মোহাম্মাদিয়া মোড় থেকে পৌর বাজার, বিশ্বনাথ, রশিদ কলোনি, দত্তের হাট, জেলা জজ আদালত সড়ক, হাকিম কোয়ার্টার সড়ক এলাকা ঘুরে সড়কবাতি পাওয়া যায়নি। সড়কের কিছু মোড়ের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে সড়কবাতি দেখা গেলেও সেগুলো জ্বলছে না। কিছু বাতি মিটমিট করে জ্বলছিল। এ কারণে পুরো রাস্তাই অন্ধকারাচ্ছন্ন।

চার লেনের এ সড়কের কাজ শেষ হয়েছিল দুই বছর আগে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সড়কে বাতির কোনো ব্যবস্থা করেনি। গভীর রাতে রাস্তার পাশের দোকানপাট বন্ধ হতেই ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকে ছিনতাই আতঙ্কে থাকেন। জহিরুল ইসলাম, হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা, নোয়াখালী

পৌরসভার প্রকৌশল শাখা সূত্র জানায়, মাইজদী বাজার থেকে সোনাপুর পর্যন্ত চার লেনের সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাত কিলোমিটার। তবে এ সড়কের বিভিন্ন মোড়ে বাতি রয়েছে ৫০টি। যদিও এসব বাতির বেশির ভাগ ঠিকমতো জ্বলে না। প্রকৌশলীদের মতে, এ সড়ককে নিরাপদ করতে লাইট দরকার অন্তত ২৫০টি। তাহলে সড়কে চলাচল করতে পথচারীদের কোনো সমস্যা হবে না।

শহরের হাসপাতাল সড়ক এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চার লেনের এ সড়কের কাজ শেষ হয়েছিল দুই বছর আগে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সড়কে বাতির কোনো ব্যবস্থা করেনি। গভীর রাতে রাস্তার পাশের দোকানপাট বন্ধ হতেই ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকে ছিনতাই আতঙ্কে থাকেন।

গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিন শহরের মাইজদী বাজার থেকে শহীদ বুলু স্টেডিয়াম এলাকা, নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সামনে সড়ক, মোহাম্মাদিয়া মোড় থেকে পৌর বাজার, বিশ্বনাথ, রশিদ কলোনি, দত্তেরহাট, জেলা জজ আদালত সড়ক, হাকিম কোয়ার্টার সড়ক এলাকা ঘুরে সড়কবাতি পাওয়া যায়নি। সড়কের কিছু মোড়ের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে সড়কবাতি দেখা গেলেও সেগুলো জ্বলছে না। কিছু বাতি মিটমিট করে জ্বলছিল। এ কারণে পুরো রাস্তাই অন্ধকারাচ্ছন্ন।

অন্ধকার রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে অনেকে দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন। শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জেলার বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে ব্যবসা করেন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসায় ফিরতে রাত ১২টা বেজে যায়। সড়কবাতি না থাকায় কয়েক দিন আগে অন্ধকারে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছিলেন।

জানতে চাইলে পর্যাপ্ত সড়কবাতি না থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন পৌরসভার বিদ্যুৎ ও পানি শাখার সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সড়কে বাতি লাগানোর বিষয়ে তিনি পৌরসভার বৈঠকে একাধিকবার প্রস্তাব করেছেন। সড়কের বিভাজকে বাতি স্থাপন করা গেলে শহরের সৌন্দর্যও বাড়ত। তাঁরা চেষ্টা করছেন।

নোয়াখালী পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈল প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান সড়কে সড়কবাতি লাগানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে পৌরসভার আর্থিক সংকটের কারণে অনেক কাজই করা যাচ্ছে না। তবু বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক প রসভ র সড়ক র ক হয় ছ ল ছ নত ই ব যবস এ সড়ক জ বলছ ম ইজদ আতঙ ক শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। 

নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়।  পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ