মৌসুমের শুরুতে হিমাগারে আলু রেখে এখন বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন নওগাঁর কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। গত বৃহস্পতিবার হিমাগার পর্যায়ে জাতভেদে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। অথচ উৎপাদন থেকে শুরু করে হিমাগারে রাখা পর্যন্ত প্রতি কেজিতে খরচ পড়েছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা। ফলে কেজিপ্রতি প্রায় ১০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। আর বস্তাপ্রতি হিসাব করলে (৬০ কেজি) লোকসান দাঁড়াচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৬০ টাকা। এ কারণে অনেকে এখন হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএসএ) হিসাবে, নওগাঁর আটটি হিমাগারে এবার সংরক্ষণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার বস্তা আলু। প্রতি বস্তার ওজন ৬০ কেজি ধরে সংরক্ষিত মোট আলুর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। এর বাইরে নওগাঁর কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বগুড়া, জয়পুরহাট ও রাজশাহীর হিমাগারেও আলু রেখেছেন। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা লোকসান ধরলে শুধু নওগাঁর হিমাগারেই ক্ষতির অঙ্ক দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নওগাঁ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। গত বছর ২৩ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন। এবার আলু উৎপাদন থেকে শুরু করে হিমাগারে রাখা পর্যন্ত প্রতি কেজিতে খরচ পড়েছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা।

* হিমাগারে রাখা আলুর কেজিতে ১০ টাকা ও প্রতি বস্তায় ৬০০–৬৬০ টাকা লোকসান।
* উৎপাদন থেকে হিমাগারে মজুত পর্যন্ত কেজিতে খরচ ২৫–২৬ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫ টাকায়।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাস্টডোম গ্রামের কৃষক রাসেল রানা এবার ৭ বিঘা জমিতে কার্ডিনাল ও গ্রানোলা জাতের আলু চাষ করেন। উৎপাদন পেয়েছেন ৬৩০ মণ। এর মধ্যে লাভের আশায় ২০০ বস্তা (৩২০ মণ) আলু হিমাগারে রেখেছেন। তিনি বলেন, মৌসুমে খুচরা বাজারে এসব আলুর কেজি খুচরায় ২৫–২৭ টাকা, পাইকারিতে ১৭–১৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। এখন খুচরা বাজারে মিলছে ২০–২২ টাকা, আর হিমাগারে বিক্রি হচ্ছে ১৪–১৫ টাকায়। প্রতি বস্তায় হিমাগার ভাড়া ৩৫০ টাকা, বস্তার দাম ৮৫ টাকা, পরিবহন ও শ্রমিক খরচ ১০০ টাকাসহ মোট খরচ পড়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকার মতো। অথচ এখন এক বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। তাতে প্রতি বস্তায় লোকসান হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।

সদর উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ১ হাজার ৭০০ বস্তা আলু মজুত করেছেন। মৌসুমে কেজি ১৬–১৭ টাকা দরে কিনে হিমাগারে রেখেছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, এখন তুললে কেজিপ্রতি ১০–১১ টাকা লোকসান গুনতে হবে। দাম বৃদ্ধির আশায় এত দিন আলু তুলিনি। কিন্তু ৩০ অক্টোবরের মধ্যে হিমাগার থেকে আলু না তুললে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তিনি আশঙ্কা করছেন, ১৭ লাখ টাকায় কেনা আলুতে লোকসান গুনতে হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

নওগাঁ সদর উপজেলার পার নওগাঁ এলাকায় মাহমুদ হোসেন কোল্ড স্টেরেজে আলু বাছাই করছেন শ্রমিকেরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ