মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় আলোচিত তিন খুনের মামলায় জামিনে থাকা আসামির নেতৃত্বে এক গৃহবধূকে আটকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফয়সাল তালুকদার নামের এক যুবক লাঠি হাতে এক গৃহবধূকে পেটাচ্ছেন। পরে তাঁকে রামদা দিয়েও আঘাত করতে দেখা যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার কালাই সরদারেরচর গ্রামের বজলু তালুকদারের ছেলে ফয়সাল তালুকদার ওই নারীর ঘরে ঢুকে তাঁকে মারধর করেন। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে আঘাত করেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের আকতার শিকদার, তাঁর ছেলে মারুফ শিকদার ও সিরাজ চৌকিদারকে প্রতিপক্ষ কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় ফয়সাল তালুকদারকে।

স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছেন ওই নারী। গত বছর সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ফয়সাল তাঁকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকেন। হত্যা মামলায় জামিনে বের হয়ে আসার পর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সবশেষ গত সোমবার ফয়সাল ও তাঁর সহযোগীরা দলবল নিয়ে গৃহবধূকে মারধর করেন।

আরও পড়ুনকালকিনিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বোমা বিস্ফোরণ, বাবা–ছেলেসহ নিহত ৩২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ফয়সাল ও তাঁর বাহিনীর ভয়ে এলাকার লোকজন মুখ খোলে না। গৃহবধূর ঘটনাও ধামাচাপা পড়ে যেত, ভিডিও প্রকাশ না হলে। আমরা চাই এ অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে। ফয়সাল ও তাঁর বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’

এ ঘটনায় কালকিনির খাসেরহাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তবে ভয়ে গৃহবধূ এখনো অভিযোগ করেননি।

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, গৃহবধূকে মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশি অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনায় পুলিশ ফয়সালকে খুঁজছে, দ্রুত তিনি ধরা পড়বেন। এ ছাড়া গৃহবধূকে যেকোনো আইনি সহযোগিতার জন্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তাঁকে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফয়স ল ত গ হবধ ক ক লক ন ম রধর ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

ন্যায়বিচার হয়েছে, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ: সালাহউদ্দিন আহমদ

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় যে রায় হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই বিচার, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ।

আজ সোমবার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে আসামিদের অপরাধের তুলনায় এই সাজা যথেষ্ট কম। কিন্তু আইনে এর ওপরে কোনো সাজা নাই।

আজ বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে কয়েকটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যত শক্তিশালী হোক, যত দীর্ঘদিনই রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে পরিচালিত করুক, ক্ষমতা ভোগ করুক, একদিন না একদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাঁদের দাঁড়াতেই হবে।

আরও যেসব মামলা আছে, সেই মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু এটা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নয়, সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ। ভবিষ্যতে যাতে এই রাষ্ট্রে কেউ আর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম না করতে পারে, ফ্যাসিস্ট না হয়ে উঠতে পারে, একনায়কতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয়, তার একটি উদাহরণ। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটা শিক্ষা। শুধু অতীতের জন্য বিচার নয়, এটা মনে রাখতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ