Prothomalo:
2025-10-03@02:40:38 GMT

নামেই টিকে আছে সৈকতটি

Published: 28th, September 2025 GMT

একসময় নাম ছিল ‘ঝাউবাগান’। ঝাউগাছের ঘন ছায়ায় বসে দেখা যেত জাহাজ চলাচল, লাল কাঁকড়ার দৌড়ঝাঁপ আর সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য। এ সৌন্দর্যের কারণেই চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সৈকতের খ্যাতি ছড়িয়েছিল দেশজুড়ে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম শহর থেকে কম সময়ে, কম খরচে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ থাকায় দ্রুত জনপ্রিয় হয় জায়গাটি।

সেই পারকি আর আগের মতো নেই। পর্যটকের ভিড় থাকলেও সৌন্দর্যের অনেকটাই মুছে গেছে। ঝাউগাছও কমেছে, বসার জায়গাও তেমন নেই, সন্ধ্যা নামতেই আশপাশে নামে গুটগুটে অন্ধকার। আবার লাল কাঁকড়াও আগের মতো দেখা যাচ্ছে না। ন্যূনতম অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় দর্শনার্থীরাও ফিরে যাচ্ছেন হতাশ হয়ে। দুই বছর ধরেই এসব অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে সৈকতটি।

সৈকতের অবস্থা দেখতে গত শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে যান প্রতিবেদক। প্রধান সড়ক থেকে সৈকতে প্রবেশ করতেই দেখা যায় সময় বিভিন্ন যানবাহন থেকে টোল নেওয়া হচ্ছে। এসব নিয়েও পর্যটকদের সঙ্গে টোল আদায়কারীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হচ্ছে। অনেকেই টোল দেওয়ার ঝামেলা এড়াতে সৈকত না গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। টোল বক্স অতিক্রম করতেই চোখে পড়ে রাস্তার দুই পাশ দখল করে গড়ে তোলা দোকান ও ঝুপড়ি। একটু এগিয়ে সৈকতে নামতেই দেখা গেল জোয়ারের পানি একেবারে রাস্তা ছুঁই ছুঁই করছে। সামনেই পড়ে রয়েছে দুটি ঝাউগাছ।

সৈকতটিতে গত তিন বছরে তিন শতাধিক ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে। একটু সামনে আগাতেই দেখা যায় বিস্তীর্ণ সৈকতে নামতে শুরু করেছেন লোকজন। তবে আশপাশের বসার জায়গা না পাওয়ায় হতাশ হচ্ছেন অনেকে।

লোকজন জানালেন, শুধু এই দুই গাছ নয়, সৈকতটিতে গত তিন বছরে তিন শতাধিক ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে। একটু সামনে আগাতেই দেখা যায় বিস্তীর্ণ সৈকতে নামতে শুরু করেছেন লোকজন। তবে আশপাশের বসার জায়গা না পাওয়ায় হতাশ হচ্ছেন অনেকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পারকি সৈকতটি মূল পয়েন্ট থেকে আধা কিলোমিটার দক্ষিণ ও দুই কিলোমিটার উত্তরে কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছাকাছি পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে পর্যটকেরা মূল পয়েন্টের এক থেকে দেড় কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিচরণ করেন। দেড় কিলোমিটার জায়গায় কোনো রেস্তোরাঁ কিংবা রিসোর্ট নেই। ফলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সৈকতসংলগ্ন ঝুপড়ির দোকান থেকে খাবার খেতে হয় দর্শনার্থীদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছুটির দিনে অন্তত পাঁচ হাজার দর্শনার্থী পারকি সৈকত ঘুরতে আসেন। কিন্তু এসবের বিপরীতে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। নামমাত্র দুটি রেস্তোরাঁ, ২০টির ঝুপড়ি দোকান, ১০টি অস্থায়ী দোকান রয়েছে। এর বাইরে চারটি স্পিড বোট, আটটি বিচ মোটরসাইকেল রয়েছে। দুটি পাবলিক শৌচাগার থাকলেও সুপেয় পানির ব্যবস্থা সেখানে নেই। আবার সৈকত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সন্ধ্যা নামতেই ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়।

নগরীর বায়েজিদ এলাকা থেকে বেড়াতে আসা ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কম খরচে বেড়াতে পারায় আমরা এ সৈকতে এসেছি। তবে অব্যবস্থাপনার কারণে নানান হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।’ লোহাগড়া উপজেলার আধুনগর থেকে বেড়াতে আসা ফরিদুল আলম বলেন, ‘সৈকতের নাম শুনে এখানে বেড়াতে এসেছি। কিন্তু এখানে বসার জায়গাও নেই। এ নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

বন বিভাগ সূত্র জানায়, আনোয়ারা উপকূলকে রক্ষা জন্য পারকি সৈকতের বালিয়াড়িতে ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে ১২ হেক্টর জায়গায় আর্কিটেকচারাল পদ্ধতিতে ঝাউগাছ লাগানো হয়। এরপর ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ২ হেক্টর, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ৫ হেক্টর ও ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ৫ হেক্টর জায়গায় ঝাউবাগান করা হয়। এই সবুজ বেষ্টনী পারকি সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকেও রক্ষা করত। তবে প্রতিবছরই দুর্যোগেই সৈকতের ঝাউগাছ কমেছে।

ছুটির দিন এলেই সৈকতটিতে বাড়ে পর্যটকের ভিড়। তবে পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যান তাঁরা। গত শুক্রবার আনোয়ারার পারকি সৈকতে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ স কত র স কতট

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি

চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।

এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৪৮%
  • কংগ্রেসে অর্থ বিল নাকচ, সংকটে ট্রাম্প প্রশাসন
  • দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ
  • বাজারে এখনো কদর ইনস্ট্যান্ট কফির
  • শুল্কছাড়েও দেশি বিনিয়োগ নেই কনটেইনার পরিবহন খাতে
  • বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছে
  • চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি