গাজীপুরের শ্রীপুরে নাটকের শুটিংয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রিসোর্টে নিয়ে এক নারী নাট্যকর্মীকে (২৪) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। 

গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের রাশ রিসোর্টে ঘটনাটি ঘটে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এই মামলায় নাছির (৩৫) ও বাবর (৩২) নামে দুইজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। একজনকে অজ্ঞাত (৬০) আসামি করা হয়।

আরো পড়ুন:

বরিশালে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১

বৃদ্ধের চুল-দাড়ি কাটার ঘটনায় মামলা

গতকাল শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাশ রিসোর্টে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো.

সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় রিসোর্টের কাগজপত্রে অনিয়ম পাওয়া গেলে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে পুলিশ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজন নারী ও ১৬ জন পুরুষকে আটক করে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী মডেল হিসেবে কাজ করেন। নাছির নিজেকে নাটকের পরিচালক এবং বাবরকে সহকারী দাবি করে ওই নারীকে ঢাকার মিরপুর থেকে নাটকের শুটিংয়ের কথা বলে ২১ সেপ্টেম্বর রাতে শ্রীপুরের ওই রিসোর্টে নিয়ে যান। গভীর রাতে রিসোর্টের একটি কক্ষে আটকে রেখে আসামিরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। পরদিন বিকেলে মারধর করার পর রিসোর্ট থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। এসময় ভুক্তভোগীর আইফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার দাম প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, “মামলার তিন আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। ঘটনার পরপরই থানায় মামলা হয়েছে। তদন্তে গিয়ে বিয়ারসহ বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজন নারী ও ১৬ জন পুরুষকে আটক করা হয়েছে।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলাম জানান, রিসোর্টে অনিয়মের কারণে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগের তদন্তসহ ৯ দফা দাবি

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ৪১ বিশিষ্ট নাগরিক।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এ দাবি জানান।

ওই বিবৃতিতে মারমা এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ-সহিংসতা ও গুলিবর্ষণে ৩ জন নিহত ও ৩০ জন আদিবাসী আহত হয়েছেন বলে জানান বিশিষ্ট নাগরিকেরা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনেরও দাবি জানান তাঁরা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনো বাহিনী আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে নয়। মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তাঁকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

নাগরিক সমাজের ৯ দফা দাবিগুলো হলো:

১. খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভুক্তভোগী কিশোরী এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সহায়তা দিতে হবে।

২. সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং মদদের অভিযোগের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।

৩. সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিরা যে বাহিনীর সদস্যই হোক না কেন, তাঁদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. নিহত ও আহতদের পরিবারকে সুরক্ষা, যথার্থ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. পাহাড়ে দীর্ঘদিনের সামরিকীকরণ নীতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগোতে হবে।

৬. পাহাড়ে বসবাসরত সব নাগরিকের জীবনের অধিকার, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতিনির্ভর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

৭. পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর যেন কাঠামোগত নিপীড়ন চালানো না হয় এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা যেন আরও হয়রানি, গ্রেপ্তার ও আইনি নিপীড়নের শিকার না হয়—রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. পাহাড়ে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর দমন না হয় এবং জনগণ সত্য জানতে পারে।

৯. নারীদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনাগুলোর প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে সহিংসতায় প্রাণহানির কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করার দাবি আসকের২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আসিফ শাহান, মোশাহিদা সুলতানা, রুশাদ ফরিদী, তাসনীম মাহবুব, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, মানজুর আল মতিন, কাজী জাহেদ ইকবাল, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, সংগীতশিল্পী বীথি ঘোষ, লেখক ফিরোজ আহমেদসহ ৪১ বিশিষ্ট নাগরিক এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি এইচআরএফবির২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
  • খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগের তদন্তসহ ৯ দফা দাবি