রাজধানীর শ্যামলীতে ১৬ সেপ্টেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের একটি ঝটিকা মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আরেক অংশ প্রস্তুতি নিয়ে ছিল। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

ঢাকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বাড়তে থাকার মধ্যে আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনা পুলিশের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। সরকার ও পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের সাম্প্রতিক কয়েকটি বৈঠকেও আওয়ামী লীগের মিছিলের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে পুলিশের তৎপরতায় ঘাটতির পাশাপাশি গ্রেপ্তারকৃতদের বড় অংশ জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে, এমন কথাও বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, জামিনে বের হয়ে অনেকে আবার সরকারবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছেন।

‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও জামিনসংক্রান্ত তথ্য’ শিরোনামে পুলিশের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ মাসে এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৪৭২। এঁদের মধ্যে ৩২ হাজার ৩৭১ জন জামিন পেয়েছেন। অর্থাৎ মোট প্রায় ৭৩ শতাংশ আসামির জামিন হয়েছে।

এ অবস্থায় পুলিশ সদর দপ্তর গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ বছরের ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে গ্রেপ্তার ও জামিনের তথ্য যাচাই করেছে। ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও জামিনসংক্রান্ত তথ্য’ শিরোনামে পুলিশের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ মাসে এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৪৭২। এঁদের মধ্যে ৩২ হাজার ৩৭১ জন জামিন পেয়েছেন। অর্থাৎ মোট প্রায় ৭৩ শতাংশ আসামির জামিন হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কালের বিভিন্ন মামলা এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতন-পরবর্তী সময়ে মিছিল বা সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তাঁদের মধ্যে পদধারী নেতাও আছেন, আবার আওয়ামী লীগ বা তৎকালীন সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। সারা দেশে পুলিশের ৮টি রেঞ্জ (অঞ্চল) ও ৮ মহানগর থেকে এই হিসাব দেওয়া হয়েছে।

সরাসরি আওয়ামী লীগের মিছিল ও অন্যান্য কর্মসূচি থেকে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে আলাদা তথ্য নেই। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এ-সংক্রান্ত পৃথক পরিসংখ্যান আছে। এতে দেখা যায়, রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের অবৈধ মিছিল-কর্মসূচি ঘিরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ৯৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হন ১ হাজার ১২৩ জন। তাঁদের মধ্যে ৪০৩ জন ইতিমধ্যে জামিন পেয়েছেন। হিসাবটি গত বছরের ২৩ অক্টোবর থেকে, যেদিন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

কেউ কেউ মনে করছেন, গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক হারে জামিন হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে মাঠপর্যায়ের পুলিশের দুর্বলতা রয়েছে বলেও মনে করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেকে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সর্বশেষ দুটি সভায় (১৪ ও ২১ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল এবং জামিনের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনায় আসে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় আওয়ামী লীগের ‘মিছিলের প্রস্তুতি’র খবর পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। পরে ‘ঝটিকা মিছিল করার সময়’ ২৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশঙ্কা হলো, আগামী দিনগুলোতে ঢাকায় বিশৃঙ্খলা হতে পারে।

বারবার ঝটিকা মিছিল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও অস্বস্তি তৈরি করেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক হারে জামিন হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে মাঠপর্যায়ের পুলিশের দুর্বলতা রয়েছে বলেও মনে করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেকে। তাঁদের মত হলো, উপযুক্ত প্রমাণ হাজির করতে না পারলে আদালত জামিন দেবেন, এটা অস্বাভাবিক নয়। কিছু ক্ষেত্রে হয়রানিমূলক আসামি বানিয়ে অথবা সন্দেহভাজন হিসেবে নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করে বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে।

কোনো আসামিকে জামিন দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন আদালত। তবে অপরাধ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কারও গাফিলতির কারণে প্রকৃত অপরাধীদের জামিনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে কি না, কমিটি সেটিই দেখবে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য

১৪ সেপ্টেম্বরের সভায় জামিনের বিষয়টি তদারকির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সূত্র জানায়, এতে আইন মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এবং পুলিশের প্রতিনিধি থাকবেন। কমিটি সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা কম সময়ের মধ্যে কীভাবে জামিন পাচ্ছেন, তা অনুসন্ধান করবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, কোনো আসামিকে জামিন দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন আদালত। তবে অপরাধ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কারও গাফিলতির কারণে প্রকৃত অপরাধীদের জামিনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে কি না, কমিটি সেটিই দেখবে। আসামি গ্রেপ্তারের পর আদালতে পুলিশের দেওয়া ‘ফরোয়ার্ডিং’সহ অন্য তথ্যাদি প্রদানের ক্ষেত্রে দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করা হবে।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ঘিরে আটটি রেঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন চট্টগ্রামে। ১৩ মাসে এই রেঞ্জে গ্রেপ্তার হন ৭ হাজার ৮২৩ জন। এর মধ্যে জামিন পান ৬ হাজার ২৭৫ জন (৮০%)। আর সবচেয়ে কম ১ হাজার ৩৯৮ জন গ্রেপ্তার হন সিলেট রেঞ্জে। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ১৭৪ জনের (প্রায় ৮৪%) জামিন হয়েছে।গ্রেপ্তার ও জামিন, কোন অঞ্চলে কত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তখন দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে চলে যান। অনেকে দেশত্যাগ করেন। এর মধ্যেও শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের শতাধিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর বাইরে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার অনেক সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তারের পর নামের আগে দলীয় পদ জুড়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট মামলায় ইচ্ছেমতো আসামি করে হয়রানির অভিযোগ ব্যাপক।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে হামলা-আক্রমণ এবং ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ঘিরে আটটি রেঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন চট্টগ্রামে। ১৩ মাসে এই রেঞ্জে গ্রেপ্তার হন ৭ হাজার ৮২৩ জন। এর মধ্যে জামিন পান ৬ হাজার ২৭৫ জন (৮০%)। আর সবচেয়ে কম ১ হাজার ৩৯৮ জন গ্রেপ্তার হন সিলেট রেঞ্জে। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ১৭৪ জনের (প্রায় ৮৪%) জামিন হয়েছে।

ছয় রেঞ্জে কোথায় কত গ্রেপ্তার, জামিন

ঢাকায় গ্রেপ্তার হন ৭ হাজার ৩৫৫ জন, জামিন পান ৪ হাজার ৮০৬ জন (৬৫%)

রাজশাহী রেঞ্জে গ্রেপ্তার ৫ হাজার ১৮, জামিন ৪ হাজার ২২১ (৮৪%)

খুলনায় গ্রেপ্তার ৫ হাজার ৯৯২, জামিন ৪ হাজার ৫৫৪ (৭৬%)

বরিশালে গ্রেপ্তার ১ হাজার ৭৭৬, জামিন ১ হাজার ৫৫৫ (৮৮%)

রংপুরে গ্রেপ্তার ৩ হাজার ৮৯১, জামিন ২ হাজার ৭১৪ (৭০%)

ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার হন ৩ হাজার ৩৬ জন, জামিন পান ১ হাজার ৪৪৩ জন (৪৮%)

দেশের ৮টি মহানগর পুলিশের মধ্যে ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িতদের’ সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। ডিএমপি গত ১৩ মাসে ৩ হাজার ৮৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে ২ হাজার ৪৯৮ জনেরই (৬৫%) জামিন হয়েছে। রংপুর মহানগর পুলিশে সর্বনিম্ন ১৯৭ জন গ্রেপ্তার হন। তাঁদের মধ্যে ১৬২ জন (৮২%) জামিন পান।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে গ্রেপ্তার হন ১ হাজার ৬৩৬ জন, জামিন পান ১ হাজার ১৬২ জন (৭১%)। খুলনা মহানগর পুলিশে গ্রেপ্তার ৪৪১, জামিন পান ৩৭১ (৮৪%); রাজশাহী মহানগর পুলিশে গ্রেপ্তার ৫৬৯, জামিন পান ৩৬৮ (৬৫%); বরিশাল মহানগর পুলিশে গ্রেপ্তার ৩৭২, জামিন পান ২৯৬ (৮০%); সিলেট মহানগর পুলিশে গ্রেপ্তার ৪৪০, জামিন পান ৪১১ (৯৩%); গাজীপুর মহানগর পুলিশে গ্রেপ্তার ৬৭২, জামিন পান ৩৬১ (৫৪%) জন।

পুলিশের হিসাবে ৬৪টি জেলার মধ্যে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৬০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে জামিন পেয়েছেন ৩৮৫ জন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অনেক ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ের পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। অনেকে ঢিলেঢালাভাবে কাজ করছে। কেউ আবার সঠিকভাবে তদারকি করতে পারছে না। এ জন্য সন্দেহভাজন অনেককে গ্রেপ্তার করে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত বা তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। ফলে আদালতে নেওয়া হলে তথ্য-প্রমাণের অভাবে ওই ব্যক্তিদের অনেকের জামিন হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অনেক ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ের পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। অনেকে ঢিলেঢালাভাবে কাজ করছে। কেউ আবার সঠিকভাবে তদারকি করতে পারছে না।

পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। জামিনের এখতিয়ার সম্পূর্ণভাবে আদালতের। প্রমাণাদি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে পুলিশের ছোটখাটো কিছু ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। তবে বড় কোনো বিচ্যুতি নেই। এগুলোর বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সব সময় তদারকি করছেন। কারণ, প্রকৃত অপরাধীরা জামিনে বের হয়ে পুরোনো অপরাধে ফিরলে তাঁদের আবার ধরতে পুলিশেরই ভোগান্তি বাড়ে।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, জামিনে বেরিয়ে আবার সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট মামলায় ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়ার চিন্তাভাবনাও চলছে।

আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। জামিনের এখতিয়ার সম্পূর্ণভাবে আদালতের। প্রমাণাদি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে পুলিশের ছোটখাটো কিছু ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। তবে বড় কোনো বিচ্যুতি নেই।পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইনযথাযথ প্রমাণের অভাব

ঢাকার আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জামিনের সংখ্যা বৃদ্ধির চারটি কারণ পাওয়া গেছে।

জামিনের সংখ্যা বৃদ্ধির চারটি কারণ

সরাসরি কর্মসূচি থেকে গ্রেপ্তারের পরিবর্তে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারের পর আদালতে আসামিদের সম্পর্কে দুর্বল প্রতিবেদন

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পদপদবি

পূর্বের কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত না লেখা

অপরাধে জড়িত থাকার স্বপক্ষে কোনো ছবি, কমিটির কাগজ অথবা প্রমাণাদি যুক্ত না করা

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, বেশির ভাগ আসামি সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হচ্ছেন। সরাসরি আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন, এমন আসামির সংখ্যা খুবই কম। অন্য মামলাগুলোতেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর আদালতে যেনতেনভাবে ‘ফরোয়ার্ডিং’ দেয়। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকায় অনেক আসামির দু-তিন মাসের মধ্যে জামিন হয়ে যায়।

‘সঠিকভাবে মামলা দায়ের ও তদন্ত করা জরুরি’

বিগত তিন সরকারে থাকা এবং আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদধারী ব্যক্তিদের বেশির ভাগের ক্ষেত্রে জামিন আবেদন নাকচ হচ্ছে। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কোনো কোনো ব্যক্তিকে জামিন না দেওয়া নিয়ে সমালোচনাও আছে। কারণ, যেসব হত্যা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেগুলোতে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করা কঠিন। তাঁদের সম্পদ অনুসন্ধান ও দুর্নীতির মামলা হওয়া যৌক্তিক ছিল।

পুলিশ যে আইনে আসামিদের গ্রেপ্তার করছে, বিচারক যদি সেই আইনে জামিন দেওয়া যথাযথ মনে করেন, সেটিকে রহিত করার সুযোগ নেই। সঠিকভাবে মামলা দায়ের ও তদন্ত করা জরুরি।মানবাধিকারকর্মী নূর খান

মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত জামিন নাগরিকের অধিকার। তবে কোনো ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে অপরাধে জড়ালে সেই তথ্যগুলো সঠিকভাবে আদালতের নজরে আনাটা গুরুত্বপূর্ণ।

বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোতে অনেক সাধারণ মানুষকে হয়রানিমূলকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা জামিন পাবেন। প্রত্যেক মানুষের ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। তিনি বলেন, পুলিশ যে আইনে আসামিদের গ্রেপ্তার করছে, বিচারক যদি সেই আইনে জামিন দেওয়া যথাযথ মনে করেন, সেটিকে রহিত করার সুযোগ নেই। সঠিকভাবে মামলা দায়ের ও তদন্ত করা জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ঠপর য য় র প ল শ দ র গ র প ত র কর কর মকর ত দ র ৫ আগস ট র পর গ র প ত র হন স প ট ম বর জ ম ন হয় ছ গত বছর র ক জ করছ ক জ কর র অন ক কম ট র ১৩ ম স ব র হয় দ র বল আস ম র সদস য সরক র র একট সবচ য় করছ ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের কাছে হারের কারণ ব্যাখ্যায় যা বললেন রশিদ খান

এশিয়া কাপের পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচেও বাংলাদেশের কাছে হারল আফগানিস্তান। কাল শারজাতে বাংলাদেশের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে রশিদ খানের দল। এই হারে দলের ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগকেই দুষছেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান।

আফগানিস্তানের ১৫১ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটি তুলেছে ১০৯ রান। তখন জয় মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু আচমকাই বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে বড় ধস নামে। ১১.৪ ওভার থেকে ১৫.৪ ওভারের মধ্যে ২৪ বলে বাংলাদেশ ৯ রানে ৬ উইকেট হারালে ম্যাচে ফেরে আফগানিস্তান। কিন্তু এভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি তারা।

আফগানিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোয় সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল রশিদের। ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন এই লেগ স্পিনার। এর মধ্য দিয়ে দারুণ এক কীর্তিও গড়েন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে এ নিয়ে পঞ্চমবার ইনিংসে ৪ উইকেট নিলেন রশিদ।

টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর অধিনায়কদের মধ্যে টি–টোয়েন্টিতে আর কোনো অধিনায়ক এতবার ইনিংসে ৪ উইকেট নিতে পারেননি। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ও শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা দুবার করে ইনিংসে ন্যূনতম ৪ উইকেট নিয়েছেন।

কাল ৪ উইকেট নিয়েছেন রশিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ