খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর
Published: 30th, September 2025 GMT
স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ব্যানারে ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চলছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে এই দুই সড়কে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো অবরোধের কারণে অচল অবস্থায় রয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারে ছাত্রলীগ কর্মীর ছুরিকাঘাতে জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা নিহত
আজ সকাল থেকে খাগড়াছড়ি শহর, শহরতলী ও গুইমারার অধিকাংশ দোকান খোলেনি। সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খাগড়াছড়ি শহরে সীমিত পরিসরে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করছে। তবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়াকড়ির কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
এদিকে, খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা বহাল আছে। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসলে নির্দেশনা তুলে নেওয়া হবে।
গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী জানান, গত রবিবার জেলার গুইমারায় সহিংসতায় নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতের মধ্যে দাহক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তোরণে কাজ চলছে।
বিজিবির খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো.
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় গুইমারা উপজেলায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর ব্যানারে ডাকা অবরোধের মধ্যে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়।
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ পর স থ ত অবর ধ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফের পাহাড়ে পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি রাখা আরও ২১ নারী ও শিশু উদ্ধার
সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার গহিন পাহাড়ে জিম্মি রাখা নারী, শিশুসহ ২১ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ দল।
কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গতকাল বুধবার মধ্যরাতে বাহারছড়া ইউনিয়নের করাচিপাড়া ঘাটসংলগ্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পাচারের জন্য নারী, শিশুসহ কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল—এমন খবর পেয়ে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আস্তানাটি তল্লাশি করে ২১ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিক।
উদ্ধার হওয়াদের টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক।
এর আগে ১ অক্টোবর বাহারছড়ার জুম্মাপাড়া পাহাড়সংলগ্ন এলাকা থেকে আটজন নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে একই এলাকার পাহাড় থেকে তিন দালালসহ তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর কচ্ছপিয়া এলাকার পাহাড় থেকে পাঁচ অপহৃতকে উদ্ধার এবং দুই মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়। এর আগের দিন র্যাব ও বিজিবি অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তিন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার ও ৮৪ জনকে উদ্ধার করে। ১৮ সেপ্টেম্বর কোস্টগার্ড ৬৬ জনকে উদ্ধার করে। ১৬ সেপ্টেম্বর বিজিবি ১২ পাচারকারীকে আটক ও ১১ জনকে উদ্ধার করে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে টেকনাফ থেকে এখন পর্যন্ত ৬৮ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার এবং ২০১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। শীত মৌসুমে সাগরপথে মানব পাচারের প্রবণতা বাড়ে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন, বুধবার উদ্ধার হওয়া সাত রোহিঙ্গা নারী ও একজন শিশুকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আরও ২১ নারী ও শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের আগামীকাল শুক্রবার আদালতে পাঠানো হবে।