আলবেনিয়ায় আদালতের মধ্যেই বিচারককে গুলি করে হত্যা
Published: 7th, October 2025 GMT
আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানার আপিল আদালতে বিচার চলাকালীন এক ব্যক্তির গুলিতে এক বিচারক নিহত হয়েছেন। গুলিতে আরো দুজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দেশটিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত হলে এমপি হওয়া যাবে না, প্রজ্ঞাপন জারি
নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার, ৬ জেলেকে জরিমানা
পুলিশ জানিয়েছে, আপিল আদালতের বিচারক অ্যাস্ট্রিট কালাজা একজন অভিযুক্তের মামলার শুনানি করছিলেন, তখন অভিযুক্ত হঠাৎ গুলি চালায়। পুলিশের এক বিবৃতি অনুসারে, ‘বিচারককে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পথেই তিনি মারা যান।’
মামলার বাদী এবং তার ছেলেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
পুলিশের মতে, ৩০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ব্যক্তি যিনি গুলি চালিয়েছিলেন, তাকে পালানোর চেষ্টা করার সময় গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম এলভিস শকাম্বি বলে জানিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মামলাটি সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের সাথে জড়িত। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে অভিযুক্ত ব্যক্তি আশঙ্কা করেছিলেন তিনি মামলাটি হেরে যাবেন, তাই তিনি বিচারকের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। তবে, কর্তৃপক্ষ এখনো সন্দেহভাজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি।
আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা বিচারক কালাজার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বলেছেন, “বিচারকের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক আগ্রাসনের জন্য নিঃসন্দেহে আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিনি দেশের আদালতের ভেতরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার জন্য কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা সালি বেরিশা বলেছেন, বিচারক কালাজার হত্যাকাণ্ড ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একজন বিচারককে ‘তার কর্তব্য পালনের সময়’ হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, “আজ পুরো আলবেনীয় সমাজের জন্য একটি গভীর শোকের দিন।”
আদালত কক্ষে বিচারকদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র হামলার ঘটনা বিরল। এক দশক আগে, ইতালির মিলানের প্যালেস অব জাস্টিসের একজন বিচারককে দেউলিয়া মামলায় বিচারাধীন এক ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করেছিল।
বন্দুকধারী পালিয়ে যাওয়ার আগে একজন আইনজীবী এবং তার সহ-আসামিকেও হত্যা করেছিল, কিন্তু পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বিচারক কালাজা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনজীবী ছিলেন। ২০১৯ সালে তিরানার আপিল আদালতে নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি প্রথমে একটি জেলা আদালতে বিচারক ছিলেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আলব ন য ব চ রকক ব চ রক
এছাড়াও পড়ুন:
গণমাধ্যমে আসামির বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার ব্যাখ্যা দিলেন পুলিশ কমিশনার
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলেকে হত্যা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার লিমন মিয়া (৩৪) পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় কীভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন, এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। আজ বুধবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তিনি রাজশাহী মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–৫–এ হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন।
প্রাইভেট কারে চড়ে পুলিশ কমিশনার এসেছিলেন সাদাপোশাকে। আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন প্রায় ১৫ মিনিট। এ সময় তাঁর আইনজীবী জমসেদ আলী আদালতে লিখিতভাবে ঘটনার ব্যাখ্যা দেন এবং পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে করা বিবিধ মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান। এ সময় আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান আবেদন গ্রহণ করে আদেশ দেওয়ার জন্য রাখেন।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ (মাসুম) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ আগামী ১ ডিসেম্বর। পুলিশ কমিশনারের আবেদনের ব্যাপারে আদালত সেদিন আদেশ দিতে পারেন।
আরও পড়ুনহেফাজতে থেকে আসামিকে গণমাধ্যমে কথা বলতে দেওয়ায় পুলিশ কমিশনারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ১৫ নভেম্বর ২০২৫আলী আশরাফ আরও জানান, পুলিশ কমিশনার তাঁর ব্যাখ্যায় বলেছেন যে আসামি লিমন মিয়াকে হাসপাতালে আটকের পর সেখানে অনেক মানুষেরই ভিড় ছিল। সে সুযোগে লিমন মিয়া ক্যামেরার সামনে কথা বলেন। ওই সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের এরই মধ্যে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
১৩ নভেম্বর রাজশাহীতে বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় ঢুকে তাঁর ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৭) হত্যা ও বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহারকেও (৪৪) জখম করা হয়। ঘটনার পর অভিযুক্ত লিমন মিয়াকে হাসপাতালে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
সেখানে লিমন হত্যাহত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আদালতের নজরে আসে। এ ঘটনায় একটি বিবিধ মামলা করে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে তলব করেন আদালত।