ত্রাণবাহী নৌযানের বহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নিয়ে সুইডিশ জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের গাজায় যাওয়ার চেষ্টা, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া এবং পরে মুক্তি পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁকে উপহাস করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত শুক্রবার ইসরায়েলি নৌবাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪০০ জনের বেশি অধিকারকর্মীকে আটক করে। এর মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন। ওই নৌবহর সমুদ্রপথে গাজার অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেছিল। পরে সপ্তাহান্তে আটক ১৩০ জনের বেশি অধিকারকর্মীকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয়। আর গতকাল সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ আরও একদল অধিকারকর্মীকে গ্রিস ও স্লোভাকিয়ায় ফেরত পাঠায় ইসরায়েল।

গতকাল ওভাল অফিসে সাংবাদিকেরা গ্রেটা থুনবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘তিনি একজন উৎপাত সৃষ্টিকারী। তিনি এখন আর পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন না। তিনি এসব করে বেড়াচ্ছেন। তাঁকে চিকিৎসক দেখানো উচিত। তাঁর রাগ নিয়ন্ত্রণজনিত সমস্যা আছে।’

গত শনিবার ইসরায়েলি বন্দিদশা থেকে ফিরে আসার পর ফ্লোটিলার কয়েকজন অধিকারকর্মী ও আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, গ্রেটা থুনবার্গসহ আটক অধিকারকর্মীদের নির্যাতন করেছে ইসরায়েল। তবে দেশটি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও গ্রেটা থুনবার্গের মধ্যে অনেক বছর ধরে বিবাদ চলছে। তাঁরা বিভিন্ন সময় একে অপরকে কথা দিয়ে আক্রমণ করেছেন। ২০১৯ সালে গ্রেটা থুনবার্গ টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তাঁর রাগ নিয়ন্ত্রণজনিত সমস্যা আছে।’

আরও পড়ুনগ্রেটা থুনবার্গসহ সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে আটক ১৭১ জনকে ফেরত পাঠাল ইসরায়েল১৬ ঘণ্টা আগে

প্রতিক্রিয়ায় গ্রেটা তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের পরিচিতি অংশ নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এমন একজন কিশোরী, যে তার রাগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছে।’

আরও পড়ুনহাঁটুতে ভর দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, শৌচাগারের পানি পান করে থাকতে হয়েছে, বললেন ফ্লোটিলার যাত্রীরা০৬ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: থ নব র গ ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

এলোমেলো শিক্ষা খাত, বাড়ছে সংকট

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) প্রায় ৯ মাস ধরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা রবিউল কবীর চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) এবং সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম)–এর দায়িত্বেও ছিলেন। ৬ নভেম্বর তিনি অবসর–উত্তর ছুটিতে গেছেন। ফলে একসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যানসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য হয়ে যায়।

প্রথা ভেঙে প্রতিষ্ঠানটির বাইরে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; কিন্তু পাঠ্যবই ছাপানোর এ মৌসুমে কার্যত নেতৃত্বহীন এনসিটিবি এখন নতুন বছরের শুরুতে সময়মতো পাঠ্যবই বিতরণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে।

শিক্ষা খাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) মহাপরিচালক নেই মাসখানেক ধরে। একজন কর্মকর্তা কেবল রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন; কিন্তু নীতিনির্ধারণী বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। ফলে প্রশাসনিক কাজে গতি ফিরছে না। অথচ এসব পদে পদায়ন করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কাজের একটি।

‘মাউশি এখন স্লো গতিতে চলছে,’ বললেন এই দপ্তরের একজন কর্মকর্তা।

এখন পর্যন্ত শিক্ষাক্রমের রূপরেখা তৈরির জন্য কোনো কমিটি হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে রূপরেখা আর হচ্ছে না। কারণ, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা।

প্রশাসনিক নেতৃত্বহীনতা, শিক্ষাক্রমের অনিশ্চয়তা, শিক্ষক আন্দোলন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে ঢাকার সাত কলেজ নিয়ে তৈরি সংকট আর বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরসুবিধা পাওয়ায় ভোগান্তি—সব মিলিয়ে শিক্ষা খাতে এখন একধরনের এলোমেলো ও অচলাবস্থার চিত্র ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, গণ–অভ্যুত্থানের পর মানুষ আশা করেছিল অন্তত শিক্ষা খাতে পরিবর্তন আসবে; কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে কম গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে ইতিবাচক পরিবর্তনের বদলে নেতিবাচক দিকগুলো ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে। শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক দুর্বলতা আরও প্রকট হচ্ছে।

যদিও আন্দোলনের মুখে এরই মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। উৎসব ভাতাও কিছু বেড়েছে। অন্যদিকে রিট আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের পর দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বেড়ে দশমে উন্নীত হচ্ছে। সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ, এখন প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ নিয়ে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

সবশেষ প্রাথমিকে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে দেশের প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে (পিটিআই) চালু হচ্ছে ১০ মাস মেয়াদি একটি ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম। এগুলোই বর্তমান সময়ে এসে শিক্ষা খাতের কিছু ইতিবাচক দিক। তুলনামূলকভাবে প্রাথমিকে কাজ কিছুটা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কাজকর্মের অবস্থা বেশি এলোমেলো।

আন্দোলন, অস্থিরতা, কর্মবিরতি

গত কয়েক মাসে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা একের পর এক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। এতে শিক্ষাবর্ষের শেষ সময়ে পাঠদান ব্যাহত হয়েছে।

বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা; গত ৮ নভেম্বর শাহবাগে তাঁদের মিছিলে চড়াও হয় পুলিশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মেয়েদের জীবনের থেকে, ওড়না বেশি গুরুত্বপূর্ণ’
  • গাজীপুরে ঘোড়া জবাই করে মাংস প্রস্তুতের সময় একজন আটক
  • নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত
  • চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে প্রাইভেট কার ছিটকে পড়ে একজনের মৃত্যু
  • ফেনীতে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু
  • কামাল সিদ্দিকী: আমলাতন্ত্রের ঘেরাটোপ ভাঙা একজন দেশপ্রেমী
  • চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু
  • গাজার ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি আসলে কারা চালাচ্ছে
  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব, জমি ছাড়তে হবে ইউক্রেনকে
  • এলোমেলো শিক্ষা খাত, বাড়ছে সংকট