তিনি একজন উৎপাত সৃষ্টিকারী, তাঁকে চিকিৎসক দেখানো উচিত: থুনবার্গকে ট্রাম্পের উপহাস
Published: 7th, October 2025 GMT
ত্রাণবাহী নৌযানের বহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নিয়ে সুইডিশ জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের গাজায় যাওয়ার চেষ্টা, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া এবং পরে মুক্তি পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁকে উপহাস করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গত শুক্রবার ইসরায়েলি নৌবাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪০০ জনের বেশি অধিকারকর্মীকে আটক করে। এর মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন। ওই নৌবহর সমুদ্রপথে গাজার অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেছিল। পরে সপ্তাহান্তে আটক ১৩০ জনের বেশি অধিকারকর্মীকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয়। আর গতকাল সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ আরও একদল অধিকারকর্মীকে গ্রিস ও স্লোভাকিয়ায় ফেরত পাঠায় ইসরায়েল।
গতকাল ওভাল অফিসে সাংবাদিকেরা গ্রেটা থুনবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘তিনি একজন উৎপাত সৃষ্টিকারী। তিনি এখন আর পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন না। তিনি এসব করে বেড়াচ্ছেন। তাঁকে চিকিৎসক দেখানো উচিত। তাঁর রাগ নিয়ন্ত্রণজনিত সমস্যা আছে।’
গত শনিবার ইসরায়েলি বন্দিদশা থেকে ফিরে আসার পর ফ্লোটিলার কয়েকজন অধিকারকর্মী ও আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, গ্রেটা থুনবার্গসহ আটক অধিকারকর্মীদের নির্যাতন করেছে ইসরায়েল। তবে দেশটি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও গ্রেটা থুনবার্গের মধ্যে অনেক বছর ধরে বিবাদ চলছে। তাঁরা বিভিন্ন সময় একে অপরকে কথা দিয়ে আক্রমণ করেছেন। ২০১৯ সালে গ্রেটা থুনবার্গ টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তাঁর রাগ নিয়ন্ত্রণজনিত সমস্যা আছে।’
আরও পড়ুনগ্রেটা থুনবার্গসহ সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে আটক ১৭১ জনকে ফেরত পাঠাল ইসরায়েল১৬ ঘণ্টা আগেপ্রতিক্রিয়ায় গ্রেটা তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের পরিচিতি অংশ নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এমন একজন কিশোরী, যে তার রাগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছে।’
আরও পড়ুনহাঁটুতে ভর দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, শৌচাগারের পানি পান করে থাকতে হয়েছে, বললেন ফ্লোটিলার যাত্রীরা০৬ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আমি ব্যর্থ হয়েছি: বাঁধন
কখনো পরিবার, কখনো সমাজ—সবাই চেয়েছে তাকে নির্দিষ্ট ছাঁচে ঢালতে। কিন্তু বাঁধন ভেঙেছেন সেই ছাঁচ। হ্যাঁ, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন ‘প্রত্যাশিত নারী’ হতে, অথচ সেই ব্যর্থতাকেই এখন মনে করছেন জীবনের বড় সাফল্য।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে নিজেকে ‘সমাজ আর একজন অস্বস্তিকর নারী’ আখ্যায়িত করেছেন বাঁধন। সেখানে তিনি খোলামেলা স্বীকার করেছেন নিজের ব্যর্থতার কথাও।
আরো পড়ুন:
আলোচনায় নুহাশ হুমায়ূনের ফেসবুক পোস্ট
বাগদানের পরও রাশমিকার প্রথম বিয়ে কেন ভেঙেছিল?
বাঁধন লিখেছেন, “আমি এমন একজন মেয়ে হতে চেয়েছিলাম, যে সবাইকে খুশি রাখবে। অনুগত, বাধ্য, শান্তভাবে মানিয়ে নেওয়া মেয়ে। কিন্তু আমি পারিনি। আমি ব্যর্থ হয়েছি। চেষ্টা করেছিলাম পরিবারের প্রত্যাশিত মেয়ে হতে, সমাজের বানানো ‘নারী’ হয়ে বাঁচতে। কিন্তু পারিনি। আর আজ, সেই ব্যর্থতার জন্যই আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই।”
ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে এ অভিনেত্রী লেখেন, “আমি অন্য কারো স্ক্রিপ্টে বাঁচার জন্য জন্মাইনি। আমার কথা হয়তো অনেকের কাছে অস্বস্তিকর, আমার কাজ হয়তো অনেকের স্বস্তি ভেঙে দেয়। আমি সহজ নই, কিন্তু নির্মমও নই। আমি কাউকে আঘাত করি না, অসম্মানও করি না—যদিও অনেকেই আমার প্রতি তা করে।”
কয়েক দিন পরই ৪২ বছরে পা দেবেন এই অভিনেত্রী। বয়সের এ পর্যায়ে তিনি খুঁজে পেয়েছেন ভেতরের শান্তি। বাঁধনের ভাষায়, “চল্লিশের পর আমি নিজের সঙ্গে শান্তিতে আছি। এখন আমি বাঁচি আমার মতো করে—স্বাধীনভাবে, সৎভাবে, বিনা ক্ষমাপ্রার্থনায়। কেউ কষ্ট পেলে উপেক্ষা করুক, ব্লক করুক, ঘৃণা করুক—আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, যত মানুষ আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে, তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বোঝে, আমার সত্যে শক্তি খুঁজে পায়। আর সবচেয়ে বড় কথা—আমি নিজেকে ভালোবাসি।”
তার পোস্টের শেষ লাইনগুলোতে উঠে এসেছে আত্মসম্মান আর আত্মবিশ্বাসের এক দৃঢ় উচ্চারণ, “আমি ভাঙা নই। আমি শুধু এমন এক পৃথিবীর কাছে অস্বস্তিকর, যে পৃথিবী এখনো আসল নারীকে ভয় পায়। ভালোবাসি তোমায়, আজমেরী হক বাঁধন। তুমি যে নারী হতে চেয়েছিলে, শেষ পর্যন্ত তুমি সেই নারীই হয়েছো।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত