কুমিল্লায় সৎমাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে পলাতক
Published: 30th, October 2025 GMT
কুমিল্লার চান্দিনায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর সৎমাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার সব্দলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হালিমা খাতুন (৩৪) চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের সব্দলপুর গ্রামের এমদাদুল হক মুন্সির (৭৫) দ্বিতীয় স্ত্রী। অভিযুক্ত শাহিন মুন্সি (২৮) এমদাদুল হক মুন্সির প্রথম স্ত্রীর চতুর্থ ছেলে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হালিমা খাতুনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আজ দুপুরে চান্দিনা থানায় অভিযুক্ত শাহিন মুন্সির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন হালিমা খাতুনের ভাই নূরুল ইসলাম, তবে শাহিন মুন্সি ঘটনার পর থেকে পলাতক।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এমদাদুল হক মুন্সির প্রথম স্ত্রী মারা যান প্রায় তিন বছর আগে। তাঁর চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। ছেলেমেয়েরা বিবাহিত। চার ছেলে সৌদিপ্রবাসী। ছোট ছেলে শাহিন মুন্সি প্রায় আট মাস আগে দেশে ফেরেন। দুই মাস আগে এমদাদুল হক দাউদকান্দি উপজেলার জয়নগর গ্রামের হালিমা খাতুনকে বিয়ে করেন।
এমদাদুল হক মুন্সি বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে তিনি শৌচাগারে যান। তখন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন, পাশের ঘরে ছোট ছেলে শাহিন ছিলেন। ঘরে ফিরে দেখেন, স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় কাতরাচ্ছেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তাঁর চিৎকারে পুত্রবধূসহ আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে কুমিল্লা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
এমদাদুল হকের তৃতীয় ছেলে আবু হানিফের (৩২) স্ত্রী শিরিনা আক্তার বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা অন্য ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। শ্বশুরের চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখি, শাহিন ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। শ্বশুর কান্নাকাটি করছেন। সৎশাশুড়ি তখন রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিলেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
স্থানীয় বাতাঘাসী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ জানান, এমদাদুল হক মুন্সি তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তাঁর দ্বিতীয় বিয়েতে পরিবারের কারও আপত্তি ছিল না। কী কারণে শাহিন সৎমাকে হত্যা করেছেন, তা কেউ বলতে পারছেন না। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ওই নারীকে হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি শাহিন মুন্সি পলাতক। তাঁকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ য়
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য
লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”
তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”
তিনি আরো বলেন, “জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা, সদস্যপদের যোগ্যতা সহজ করা এবং সংবিধানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদককেও যুক্ত করতে হবে।”
সংগঠনটি জকসুর কাঠামোতে নতুন ১০টি পদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছে তারা। প্রস্তাবিত পদগুলো হলো— বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীবিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য), দক্ষতা উন্নয়ন (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ সম্পাদক, দফতর সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক।
এর আগে, ছাত্রদলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই যোগ্য। তবে এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও জকসুতে তা নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।”
সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক সদস্যসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী