একটা সময় ছিল, তার নাম উচ্চারিত হওয়া মানেই বিদ্যুতের মতো কাঁপন ছড়িয়ে যেত ফুটবলবিশ্বে। পায়ের জাদুতে মুগ্ধ হত স্টেডিয়ামভরা মানুষ। আলোচনায় থাকত কেবল একটিই নাম- নেইমার দ্য সিলভা সান্তোস জুনিয়র।

কিন্তু এখন? সেই আলো যেন ফিকে। তবু নিভে যায়নি একেবারে। আর ঠিক এই জায়গাটাতেই তৈরি হয়েছে রহস্য। তিনি কি আবার ফিরবেন ইউরোপে, নাকি এখানেই শেষ হবে তার সেই রূপকথা?

আরো পড়ুন:

ব্রাজিলে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত ৬০

৩৬ বছরে প্রথমবার ব্রাজিলকে হারাল জাপান

কয়েক মাস ধরেই ভেসে আসছিল গুঞ্জন, ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে হয়তো ইউরোপের কোনো ক্লাবে ফিরবেন নেইমার। হয়তো আবার দেখা যাবে তাকে চ্যাম্পিয়নস লিগের আলোয়, পুরনো মঞ্চে। কিন্তু সময়ের সাথে সেই সম্ভাবনা যেন ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে কুয়াশার মতো।

স্প্যানিশ দৈনিক ‘এএস’ জানিয়েছে, সব হিসাব-নিকাশ শেষে নেইমারের মন এখন বোধহয় স্থির হয়েছে এক জায়গায়- নিজের শৈশবের ক্লাব, সান্তোসে। যেখান থেকে একসময় শুরু হয়েছিল তার স্বপ্নের উড়ান, সেখানেই যেন আবার ফিরে এসেছে তার গল্প।

গত শীতে আল-হিলালের সংক্ষিপ্ত অধ্যায় শেষ করে ব্রাজিলে ফেরেন তিনি। কিন্তু ‘চোট’ নামক শব্দটি যেন বারবার এসে বাধা দেয় তার ক্যারিয়ারের গল্পে। তাকে থামিয়ে দেয় মাঝপথে। মাঠে ফিরেছেন, কিন্তু এখনও যেন নেই সেই পুরনো ছন্দ, নেই আগের সেই দীপ্তি খুঁজে ফিরছেন। সান্তোস দলটিও লড়ছে টিকে থাকার সংগ্রামে, ঠিক যেমন নেইমার লড়ছেন নিজের পুরনো সত্তাকে ফিরে পাওয়ার যুদ্ধে।

তবুও, ক্লাবের বিশ্বাসে কোনো ফাটল ধরেনি। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকার সঙ্গে নতুন চুক্তির পরিকল্পনা করছে সান্তোস। তারা যেন এখনো বিশ্বাস করে, নেইমারের ভেতরের জাদুকর একদিন আবার ফিরে আসবে।

অন্যদিকে, ইউরোপের ক্লাবগুলো এখনো নীরব। কোনো আলোচনার ফিসফাস নেই, নেই কোনো আনুষ্ঠানিক আগ্রহের বার্তা। হয়তো এ নীরবতাই উত্তর দিচ্ছে সেই প্রশ্নের- নেইমারের পরবর্তী অধ্যায় শুরু হবে ইউরোপে নয়, বরং নিজের জন্মভূমির মাটিতেই।

নেইমার ইতিমধ্যেই খেলেছেন তিনটি বিশ্বকাপে, সর্বশেষটি ২০২২ সালে। তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচও এখন দুই বছরের পুরোনো, ২০২৩ সালের অক্টোবরে।

সময়ের স্রোতে দাঁড়িয়ে প্রশ্নটা এখনো রয়ে গেছে- এটাই কি তবে নেইমারের শেষ অধ্যায়? নাকি সান্তোসের মাটিতে আবার জ্বলে উঠবে সেই পুরনো জাদু? উত্তরটা হয়তো সময়ের বুকেই লুকিয়ে আছে, যেমনটা লুকিয়ে থাকে কিংবদন্তিদের গল্পে শেষ আলোর ঝলকানি।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ

ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক হতে পারে ৪৫০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে স্পেনের একটি আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর এমন অবস্থান নিয়েছে রিয়াল।

সুপার লিগের পরিকল্পনা আটকে দিয়ে উয়েফা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে বলে এর আগে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা উয়েফার আপিল বুধবার মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালত খারিজ করে দেন। একই আদালত স্প্যানিশ লিগ লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আপিলও খারিজ করেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালত সিজেইউ রায় দিয়েছিল, ২০২১ সালে উয়েফা ও ফিফা যে নিয়মগুলো প্রস্তাবিত সুপার লিগ ঠেকাতে ব্যবহার করেছিল, তা ইউরোপীয় আইনের পরিপন্থী। সেই রায় আপিলের পরও বহাল থাকায় রিয়াল মাদ্রিদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই রায়ে ‘আনন্দিত’, কারণ এটি ‘ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পথ খুলে দিয়েছে।’

আপিল খারিজের পর বিবৃতি দিয়েছে উয়েফাও। ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই রায় ‘২০২১ সালে ঘোষিত এবং ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ‘সুপার লিগ’ প্রকল্পকে বৈধতা দেয় না। একই সঙ্গে এটি উয়েফার ২০২২ সালে গৃহীত ও ২০২৪ সালে হালনাগাদ করা বর্তমান অনুমোদন-নিয়মকেও খর্ব করে না, যেগুলো এখনো কার্যকর রয়েছে।’

আদালতের রায় বিস্তারিত পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছে উয়েফা। আর লা লিগা জানিয়েছে, তারা আদালতের নতুন রায়কে সম্মান জানালেও এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখছে। লিগ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা কাঠামো অনুমোদন বা সমর্থন করে না, আর ২০২১ সালে ঘোষিত প্রাথমিক প্রকল্প সম্পর্কেও কিছু বলে না, যা পরবর্তীতে আয়োজকেরা পরিবর্তন করেছে।’

২০২১ সালের এপ্রিলে স্পেন, ইতালি ও ইংল্যান্ডের ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণে চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপার লিগ প্রকল্প ভেস্তে যায়। প্রথমে ইংলিশ ক্লাবগুলো, পরে ধীরে ধীরে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো সুপার লিগ থেকে সরে আসে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা ও আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।

মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সুপার লিগের আয়োজক সংস্থা এ২২-এর আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রস্তুত করছেন। এই পত্রিকার সূত্রমতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪,৫০০ মিলিয়ন ইউরো,  যা আর্থিক ক্ষতি, সম্ভাব্য লাভ হারানো এবং ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে যোগ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ