গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অপপ্রচার, হুমকি, চাঁদা দাবি ও মিথ্যা মামলার দেওয়ার অভিযোগ এনে ত্রিপল্লী শেখ আবু নাসের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি ঢালী।

অভিযুক্ত সুশান্ত মালাকার বিদ্যালয়টির গণিত বিভাগের শিক্ষক বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

হাবিপ্রবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু

ঢাবিতে ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রিসিশন মেডিসিন-বিষয়ক সম্মেলন

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

এ সময় সহকারী প্রধান শিক্ষক অনিল কৃষ্ণ বিশ্বাস, ক্রীড়া শিক্ষক রমানাথ বৈরাগী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শংকর কুমার বিশ্বাস, হিন্দুধর্ম-বিষয়ক শিক্ষক বিউটি রানী মন্ডল, বাংলা বিভাগের শিক্ষক সুতৃষ্ণা বর, ভৌত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জিলহাজ্ব মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি ঢালী বলেন, “গণিত বিভাগের শিক্ষক সুশান্ত মালাকার বিভিন্ন সময় নিয়োগ রেজুলেশন দাবি করেন। এছাড়া তিনি আমার ও সুতৃষ্ণা বরের কাছে চাঁদা দাবি করেন। এমন কি সুতৃষ্ণাকে স্কুলে আসতে বাঁধা দেন। আমি চাঁদা দিতে না চাওয়ায় আমার বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত দূর্নীতির অভিযোগ তুলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অথচ সরকারি ও ম্যানেজিং কমিটির তত্ত্বাবধানে নিয়োগ হয়ে থাকে। এসব বিষয়য়ে ২০২২ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে।”

তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এবং তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের আয়া ইতিরানী চৌধুরীকে দিয়ে শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। অথচ ওই আয়া বিদ্যালয়ের ২৬ শতাংশ জমি জোরপূর্বক ভোগ দখল করছেন।”

তিনি আরো বলেন, “শিক্ষক সুশান্ত মালাকার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ার জন্য চাপ দেন। প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন। তিনি দেশের টাকা ভারতে পাচার করে চব্বিশপরগনা জেলার গাইঘাটা থানার অন্তর্গত ঠাকুর নগরে দোতালা বাড়ি করেছেন।”

তিনি এসব ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ

বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়। 

কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়। 

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।

আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে।  দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।

একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।

ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে। 

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।

পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।

নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”

আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”

পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ