চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) নির্বাচন দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়। আগামী শনিবার চট্টগ্রাম চেম্বারের ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। ২০১৩ সালে সর্বশেষ চেম্বারে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ব্যবসায়ীদের এ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়ে আসছে।

চেম্বারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর এক ব্যবসায়ীর করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দুই শ্রেণিকে বাদ রেখে নির্বাচন পরিচালনার আদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। সেই আদেশের পর ২২ অক্টোবর আপিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আপিল শুনানির পর এবার নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

জানতে চাইলে রিটকারী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বেলালের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী নিহাদ কবির এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, শুনানি শেষে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল আদালত এ বিষয়ে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া রিট দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন। আর হাইকোর্টে রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারে ব্যবসায়ীদের ভোটে ১২ জন সাধারণ শ্রেণিতে, ৬ জন সহযোগী শ্রেণিতে এবং ৩ জন করে টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ শ্রেণি থেকে পরিচালক নির্বাচিত হয়ে থাকেন। পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হন সভাপতি ও দুই সহসভাপতি। তবে টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ শ্রেণিতে এবার পরিচালক হওয়ার পথে ছিলেন তিনজন করে মোট ছয়জন।

চেম্বার সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে তদন্ত করে আটটি ট্রেড ও টাউন গ্রুপকে অকার্যকর পাওয়া গিয়েছিল। এ কারণে নির্বাচনে এই দুই শ্রেণির অকার্যকর সদস্যের অংশগ্রহণ বাদ দিতে এফবিসিসিআইয়ের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল। আদালতেও এ বিষয়ে রিট করেন তিনি। ২২ অক্টোবর রিট শুনানির পর ওই দুই শ্রেণিকে ছাড়া নির্বাচন পরিচালনার জন্য রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

চারটি টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও চারটি ট্রেড গ্রুপ অনেকটা অকার্যকর। টাউন অ্যাসোসিয়েশন চারটি হলো পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। আর চারটি ট্রেড গ্রুপ হলো চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্পমালিক গ্রুপ, চট্টগ্রাম টায়ার টিউব ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস গ্রুপ, চিটাগাং ডাইস অ্যান্ড কেমিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার গ্রুপ এবং চিটাগাং মিল্ক ফুড ইমপোর্টার্স গ্রুপ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে  মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য

লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”

তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”

তিনি আরো বলেন, “জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা, সদস্যপদের যোগ্যতা সহজ করা এবং সংবিধানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদককেও যুক্ত করতে হবে।”

সংগঠনটি জকসুর কাঠামোতে নতুন ১০টি পদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছে তারা। প্রস্তাবিত পদগুলো হলো— বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীবিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য), দক্ষতা উন্নয়ন (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ সম্পাদক, দফতর সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে, ছাত্রদলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই যোগ্য। তবে এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও জকসুতে তা নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।”

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক সদস্যসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ