দেশ ‘দুর্নীতিমুক্ত’ না হওয়ায় গেজেট থেকে নাম প্রত্যাহারের আবেদন জুলাই যোদ্ধার
Published: 30th, October 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে ফরিদপুরে জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট থেকে স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন আবরাব নাদিম (২৭) নামের এক ব্যক্তি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনি আবেদনটি জমা দেন।
জেলা প্রশাসক বরাবর জমা দেওয়া আবেদনে জুলাই যোদ্ধাদের সরকারি গেজেট, মাসিক ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা থেকে নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন আবরার নাদিম (ইতু)। তাঁর গেজেট নম্বর ২৪৮৯। তাঁর বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার কুঠিবাড়ী এলাকায়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, স্বেচ্ছায় জুলাইয়ের সরকারি গেজেট ও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে নাম প্রত্যাহারের আবেদনটি তাঁরা পেয়েছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আবেদনে আবরার নাদিম উল্লেখ করেন, জুলাইয়ের যৌক্তিক আন্দোলনে তিনি আহত হয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাইয়ের চেতনায় দুর্নীতি ও লুটপাটমুক্ত দেশ গড়ার যে অঙ্গীকার করেছিল, এক বছরের বেশি সময় পরও তারা তা করতে পারেনি। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপও নিতে পারেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন অসংগতিমূলক কর্মকাণ্ড লক্ষণীয়।
আবেদনপত্রে আরও বলা হয়, ‘বিশেষ করে ফরিদপুরে বিভিন্ন প্রশাসনিক সেক্টরে অনিয়ম আগের মতো বহাল রয়েছে। একটি সিন্ডিকেটও ভাঙেনি। সঙ্গে অনিয়মও থেমে নেই, যা আপনারা সবাই অবগত আছেন। তাই আমি আমার নাম সরকারি গেজেট থেকে প্রত্যাহার এবং মাসিক ভাতা (যদিও আমি নিইনি) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করলাম।’ পাশাপাশি তিনিও কোনো অনিয়ম করে থাকলে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
যোগাযোগ করলে আবরার নাদিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যে জন্য আন্দোলন করেছিলাম, তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। চারদিকে নিজেদের বন্দোবস্ত চলছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং স্থানীয় সরকারগুলো জুলাইয়ের যে চেতনায় দুর্নীতি ও লুটপাটমুক্ত দেশ গড়তে চেয়েছিল, সে ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাই আমি সরকারি গেজেট ও সুযোগ-সুবিধা থেকেও নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কে নির্মাণকাজের সময় গ্যাস লাইনে ছিদ্র, সরবরাহ বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে গ্রাহক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চার লেন মহাসড়কের নির্মাণকাজের সময় এক্সকাভেটরের (খননযন্ত্র) আঘাতে গ্যাসের সংযোগ লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (বিজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এতে জেলা শহরের প্রায় ১৫ হাজার আবাসিক-বাণিজ্যিক গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে শহরের উলচাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছে বিজিডিসিএলের কারিগরি দল। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
বিজিডিসিএলের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল চারটার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে উলচাপাড়া রোডের গ্যাস সঞ্চালনের ৬ ইঞ্চি লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। গ্যাসের সঞ্চালন লাইন সচল রেখে মেরামত করলে ওই স্থানে আগুন ধরে যাবে। তাই সদর উপজেলার ঘাটুরা অংশ থেকে সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ দিকে জেলা শহরের সব আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গ্রাহকদের ভোগান্তির কথা ভেবে কারিগরি দল দ্রুত মেরামতকাজ শুরু করেছে। ২০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে শহরের মধ্যেই প্রায় ১৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ পেতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে।
বাখরাবাদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া চার লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। আজ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উলচাপাড়া অংশে খননযন্ত্র দিয়ে কাজ চলছিল। সে সময় ওই যন্ত্রের আঘাতে গ্যাস সঞ্চালন লাইনের ৬ ইঞ্চি পাইপ ছিদ্র হয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। বিষয়টি বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তাদের কারিগরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গ্যাসের সংযোগ লাইন মেরামত করতে সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকায় থাকা গ্যাস সঞ্চালন লাইন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরসহ পৌর এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কালাইশ্রীপাড়ার মনির হোসেন বলেন, ‘বিকেল চারটার পর থেকে গ্যাস নেই। রান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে। শিশুদের জন্য কোনো খাবার রান্না করতে পারছেন না আমার স্ত্রী।’
কাজীপাড়ার বাসিন্দা তমালিকা দেবনাথ বলেন, ‘সন্ধ্যা ছয়টার নাশতা বানাতে রান্নাঘরে যাই। গিয়ে দেখি চুলায় গ্যাস আসছে না। কবে আসবে জানি না। রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। ছোট বাচ্চারা খাবারের জন্য কান্নাকাটি করছে।’
বিজিডিসিএলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার রাজস্ব বিভাগের উপব্যবস্থাপক গোলাম মোক্তাদির প্রথম আলোকে বলেন, ‘উলচাপাড়ায় গ্যাসের লাইন ছিদ্র হয়ে গেছে। তাই ঘাটুরা থেকে গ্যাসের সঞ্চালন লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পুরো শহরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে আমাদের কারিগরি দল কাজ শুরু করেছে।’