অমর একুশে গ্রন্থমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারকে ৪ নভেম্বরের মধ্যে স্পষ্ট ঘোষণা দিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে ‘একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ’। সংগঠনের নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বইমেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত যদি প্রত্যাহার না হয়, কবি-লেখক-পাঠক রাস্তায় নামবেন। প্রয়োজনে সরকারের বাধা ডিঙিয়ে ফেব্রুয়ারিতেই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটাম দেন তারা।

জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। স্পষ্ট করে জানাতে হবে, কবে থেকে বইমেলা শুরু হবে। আমরা ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু করতে চাই। যদি সরকার বাধা দেয়, আমাদের লাশের ওপর দিয়েই অমর একুশে গ্রন্থমেলা বন্ধ করতে হবে।’’

মোহন রায়হান অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নির্বাচনের কারণে বইমেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। কিন্তু অতীতের সরকারগুলো রোজা ও নির্বাচনকালেও মেলার আয়োজন করেছে।’’

তিনি প্রশ্ন তোলেন, জনগণের নিরাপত্তা সরকার দেয় না, জনগণই নিজেদের নিরাপত্তা দেয়। তাহলে এখন ভয়টা কিসের?

‘‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের জন্য বইমেলা হতে পারে  সুবর্ণ সুযোগ। প্রার্থীরা মেলায় এসে প্রচারণা চালাতে পারবেন, পাঠকদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। তাহলে ভয় কিসের?’’ বলেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের কার্যকরী সদস্য খন্দকার শাহ আলম বলেন, ‘‘সরকার যদি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে যথাসময়ে মেলার আয়োজন করে, তাহলে তা হবে শুভবুদ্ধির পরিচয়।’’

সরকার মহান একুশের চেতনা ও ঐতিহ্য রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালক মণ্ডলীর সদস্য ও মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আবুল বাশার ফিরোজ শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহ-সভাপতি কবি কামরুজ্জামান এবং একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা/এএএম//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে  মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য

লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”

তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”

তিনি আরো বলেন, “জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা, সদস্যপদের যোগ্যতা সহজ করা এবং সংবিধানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদককেও যুক্ত করতে হবে।”

সংগঠনটি জকসুর কাঠামোতে নতুন ১০টি পদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছে তারা। প্রস্তাবিত পদগুলো হলো— বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীবিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য), দক্ষতা উন্নয়ন (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ সম্পাদক, দফতর সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে, ছাত্রদলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই যোগ্য। তবে এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও জকসুতে তা নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।”

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক সদস্যসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ