পুলিশের গুলিতে নিহত মুম্বাইয়ে ১৭ শিশুকে জিম্মিকারী
Published: 30th, October 2025 GMT
পুলিশের গুলিতে শেষ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের একটি স্টুডিওতে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা যুবক রোহিত আর্য। বৃহস্পতিবার এনডিটিভি অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুদের উদ্ধার করতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে এয়ার গান থেকে গুলি চালান রোহিত। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মুম্বাইয়ের পওয়াইয়ের ওই স্টুডিওতে অভিনয়ের ক্লাস হত এবং অডিশন চলত। বৃহস্পতিবার সেখানে অডিশন দিতে এসেছিল প্রায় ১০০ শিশু। বেশির ভাগকেই চলে যেতে বলেন রোহিত। তবে ১৭ জন শিশুকে আটকে রাখেন। তার পর ভিডিওবার্তায় হুমকি দেন, তার দাবি না মানা হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। শিশুদের মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী থাকবেন না, গোটা স্টুডিওতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর পৌনে ২টার দিকে তারা জিম্মির খবর পায়। এরপরে জিম্মিকারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তার দাবিদাওয়া শুনতে চাওয়া হয়। তাকে অনুরোধ করা হয়, শিশুদের যেন অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু অপহরণকারী শিশুদের মুক্ত করতে রাজি হননি। পাল্টা তিনি শিশুদের ক্ষতি করার হুমকি দেন। শেষমেশ পুলিশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে স্টুডিওর ভিতরে ঢুকে পড়ে। পুলিশকে দেখেই এয়ার গান থেকে গুলি চালাতে শুরু করে রোহিত। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তখনই গুলিবিদ্ধ হয় রোহিত।
ঘটনাস্থল থেকে একটি এয়ার গান এবং বেশ কিছু রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়েছে। ওই স্টুডিওতে কাজ করতেন রোহিত। নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেলও ছিল তার। রোহিত অভিযোগ তোলেন, স্বচ্ছতা অভিযানের জন্য একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। সেই প্রকল্পের জন্য দুই কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছিল। তিনি কাজ করার পরেও অর্থ দেওয়া হয়নি। এর জন্য দুই বার অনশনেও বসেছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকর তাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাকে দু’দফায় ৭ এবং ৮ লাখ রুপিও দিয়েছিলেন। বাকি অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও তা পূরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন রোহিত।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না হলে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পূর্ণ হয় না: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর স্বাস্থ্য ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিতেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। নারীর প্রতি যত্নশীল হওয়া যেমন সামাজিক দায়িত্ব, তেমনি জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। নারী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করলে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পূর্ণ হয় না।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে নারীর স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে সম্মিলিত প্রয়াসকে সম্মান জানাতে মেরী স্টোপস বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যকে সামাজিকভাবে ‘নিষিদ্ধ’ ভাবা ভুল বলে মন্তব্য করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের ছোটবেলা থেকেই স্বাস্থ্যবিধি, প্রজনন স্বাস্থ্য ও আত্মসচেতনতা সম্পর্কে শেখানো দরকার। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় নারীরা লবণাক্ততা, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও প্রজননজনিত নানা জটিলতার মুখোমুখি হন। এসব অঞ্চলে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ—যেমন মোবাইল ক্লিনিক বা নৌকা হাসপাতাল চালু করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প বা উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকায় যাঁরা স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, তাঁরা আসলে মানবিকতার ফ্রন্টলাইনে কাজ করছেন।
নারীর স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও অংশীজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ও অংশীজনদের অবদান তুলে ধরতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স পিএলসি।
অনুষ্ঠানে নারীর স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবার মানোন্নয়নে ফিগো উইমেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পাওয়া অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ানের স্বীকৃতিকে স্মরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশরাফি আহমেদ। অন্যদের মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, মেরী স্টোপস বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ইয়াসমিন হেমায়েত আহমেদ, মেরী স্টোপস ক্লিনিক সোসাইটির চেয়ারপারসন মামুন উর রশীদ, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার হেলথ টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট মোমেনা বেগম, মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তাসনিম মোস্তফাসহ ফার্মাসিউটিক্যাল ও ব্যাংক খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেরী স্টোপস বাংলাদেশ প্রায় চার দশক ধরে পরিবার পরিকল্পনাসহ সার্বিক নারী স্বাস্থ্যসেবায় যে ভূমিকা রেখে চলেছে তা তুলে ধরা হয়। মেরী স্টোপস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিশোয়ার ইমদাদ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, স্বাস্থ্যসেবায় নারীর অভিগম্যতা বৃদ্ধি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার অংশগ্রহণ দেশের অগ্রগতির অন্যতম চালিকা শক্তি। অংশীদারদের এই সম্মিলিত প্রয়াস বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করে তুলবে।’