কোয়ান্টাম ইকোস নামের একটি কৌশল ব্যবহার করে যুগান্তকারী এক অ্যালগরিদম তৈরি করেছে গুগল রিসার্চ। কোয়ান্টাম কম্পিউটিং তত্ত্বের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া এই অ্যালগরিদম ক্ল্যাসিক্যাল সুপারকম্পিউটারকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম বলে জানিয়েছে গুগল। এই অ্যালগরিদম কাজে লাগিয়ে একটি কোয়ান্টাম প্রসেসর এত বেশিসংখ্যক গণনা সম্পন্ন করতে পারে, যা বিদ্যমান কম্পিউটারের করতে কয়েক দশক সময় প্রয়োজন হয়।

এক ব্লগ বার্তায় গুগল জানিয়েছে, ইতিহাসে এই প্রথম কোনো কোয়ান্টাম কম্পিউটারে যাচাইযোগ্যভাবে এমন একটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়েছে, যা সুপারকম্পিউটারের সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে। কোয়ান্টাম যাচাইযোগ্যতা মানে হলো ফলাফলটি আমাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার বা একই সক্ষমতার অন্য কোনো কম্পিউটার দিয়ে পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে। এর ফলে ফলাফল নিশ্চিত করা যায়। এই পুনরাবৃত্তিযোগ্য বিষয়টি কোয়ান্টাম কম্পিউটারকে ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য উপযোগী করে তুলছে। সাধারণ কম্পিউটারে ব্যবহৃত স্ট্যান্ডার্ড বিটসের পরিবর্তে কোয়ান্টাম কম্পিউটারে কিউবিট ব্যবহার করা হয়। কিউবিট একই সঙ্গে ০ ও ১ উভয়ই হতে পারে, যা কোয়ান্টাম সিস্টেমকে একই সময়ে একাধিক সম্ভাবনা যাচাই করার সুযোগ দেয়। গণনা শেষ করার জন্য কিউবিটকে দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীল রাখা এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি।

আরও পড়ুনগুগলের তৈরি কোয়ান্টাম প্রসেসর কতটা শক্তিশালী জানেন কি১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

গুগলের উইলো কোয়ান্টাম চিপের কার্যকারিতা পরীক্ষা ও নিশ্চিত করার জন্য কোয়ান্টাম ইকোসের ওপর ভিত্তি করে এই অ্যালগরিদম তৈরি করা হয়েছে। গুগলের তথ্যমতে, উইলোর কোয়ান্টাম ইকোস পরীক্ষায় দেখা গেছে, ভঙ্গুর কোয়ান্টাম সিস্টেম বেশ জটিল। তবে যে কাজ উইলো কয়েক মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করেছে, একই কাজ করতে দ্রুততম ক্ল্যাসিক্যাল সুপারকম্পিউটারের আনুমানিক ৪৭ বছর সময় লাগত।

এখনো কোয়ান্টাম কম্পিউটিং প্রযুক্তি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, গুগলের নতুন অ্যালগরিদমের কার্যকারিতা উন্নত করার পাশাপাশি ত্রুটির হার কমানো ও প্রায় পরম শূন্য তাপমাত্রায় কোয়ান্টাম অবস্থা বজায় রাখার মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ জয় করতে হবে। তবে গুগলের সর্বশেষ এ অগ্রগতি কোয়ান্টাম কম্পিউটিং প্রযুক্তিকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: টেক রিপাবলিক

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র ক র জন য গ গল র

এছাড়াও পড়ুন:

উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ

ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক হতে পারে ৪৫০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে স্পেনের একটি আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর এমন অবস্থান নিয়েছে রিয়াল।

সুপার লিগের পরিকল্পনা আটকে দিয়ে উয়েফা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে বলে এর আগে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা উয়েফার আপিল বুধবার মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালত খারিজ করে দেন। একই আদালত স্প্যানিশ লিগ লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আপিলও খারিজ করেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালত সিজেইউ রায় দিয়েছিল, ২০২১ সালে উয়েফা ও ফিফা যে নিয়মগুলো প্রস্তাবিত সুপার লিগ ঠেকাতে ব্যবহার করেছিল, তা ইউরোপীয় আইনের পরিপন্থী। সেই রায় আপিলের পরও বহাল থাকায় রিয়াল মাদ্রিদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই রায়ে ‘আনন্দিত’, কারণ এটি ‘ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পথ খুলে দিয়েছে।’

আপিল খারিজের পর বিবৃতি দিয়েছে উয়েফাও। ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই রায় ‘২০২১ সালে ঘোষিত এবং ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ‘সুপার লিগ’ প্রকল্পকে বৈধতা দেয় না। একই সঙ্গে এটি উয়েফার ২০২২ সালে গৃহীত ও ২০২৪ সালে হালনাগাদ করা বর্তমান অনুমোদন-নিয়মকেও খর্ব করে না, যেগুলো এখনো কার্যকর রয়েছে।’

আদালতের রায় বিস্তারিত পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছে উয়েফা। আর লা লিগা জানিয়েছে, তারা আদালতের নতুন রায়কে সম্মান জানালেও এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখছে। লিগ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা কাঠামো অনুমোদন বা সমর্থন করে না, আর ২০২১ সালে ঘোষিত প্রাথমিক প্রকল্প সম্পর্কেও কিছু বলে না, যা পরবর্তীতে আয়োজকেরা পরিবর্তন করেছে।’

২০২১ সালের এপ্রিলে স্পেন, ইতালি ও ইংল্যান্ডের ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণে চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপার লিগ প্রকল্প ভেস্তে যায়। প্রথমে ইংলিশ ক্লাবগুলো, পরে ধীরে ধীরে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো সুপার লিগ থেকে সরে আসে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা ও আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।

মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সুপার লিগের আয়োজক সংস্থা এ২২-এর আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রস্তুত করছেন। এই পত্রিকার সূত্রমতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪,৫০০ মিলিয়ন ইউরো,  যা আর্থিক ক্ষতি, সম্ভাব্য লাভ হারানো এবং ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে যোগ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ