নিউক্লিয়ারবিজ্ঞানী আর্নেস্ট জে মনিজ ওবামার সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভের সহসভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এটি একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা সংস্থা, যার লক্ষ্য মানবজাতির জন্য বিপজ্জনক পারমাণবিক, জৈবিক ও প্রযুক্তিগত হুমকি কমানো।
ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনে আর্নেস্ট জে মনিজ লিখেছেন, ‘“আ হাউস অব ডিনামাইট” নামের সিনেমাটি এমন এক সময়ে মুক্তি পেয়েছে, যখন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে এক নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। এর সূত্রপাত ক্রিস্টোফার নোলানের ওপেনহাইমার দিয়ে, আর সামনে আসছে জেমস ক্যামেরনের “ঘোস্টস অব হিরোশিমা”। এসব সিনেমা ও সিরিজ এমন সময়ে আসছে, যখন ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার বিশ্বের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা আবার বাড়ছে। এগুলো মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে প্রায় ১২ হাজার পারমাণবিক অস্ত্র আছে এবং যেকোনো সময় একটি ভুল সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’

সিনেমায় যা আছে
‘আ হাউস অব ডিনামাইট’ সিনেমাটি দেখে ঠিক এই অনুভূতিই হবে। অস্কার বিজয়ী পরিচালক ক্যাথরিন বিগেলোর নতুন সিনেমা এককথায় ভয়ংকর এক সিনেমা। মাত্র ১৮ মিনিট সময়ের গল্প। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে একটি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ছুটে আসছে। কেউ জানে না, কে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল। হাতে সময় মাত্র ১৮ মিনিট। এ সময়ের মধ্যে কি ক্ষেপণাস্ত্রটি ধ্বংস করা যাবে? সিনেমায় ঠিক এই ১৮ মিনিটকেই তিনটি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানো হয়েছে। যাঁরা ‘রশোমান’ সিনেমাটি দেখেছেন, তাঁদের এভাবে গল্প উপস্থাপনার ভঙ্গিটি জানা। সিনেমাটি মূলত দেখায়, এই ক্ষেপণাস্ত্র কে পাঠিয়েছে, আর এখন কী করা উচিত তা সেনাবাহিনী, হোয়াইট হাউস ও প্রেসিডেন্ট কীভাবে বোঝার চেষ্টা করছে।

`আ হাউস অব ডিনামাইট'-এর দৃশ্য। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী মর্যাদাপূর্ণ ‘আইইইই ইলেকট্রন ডিভাইস সোসাইটি (ইডিএস) মাস্টার্স ফেলোশিপ ২০২৫’ পেয়েছেন।

তিনি হলেন, ঢাবির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আফসানা আনজুম আঁখি। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে প্রথম নারী শিক্ষার্থী হিসেবে এই বৈশ্বিক সম্মান অর্জনের মাধ্যমে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। 

আরো পড়ুন:

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে  মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য

তদন্ত প্রতিবেদন: ডুবে যাওয়ার ২০ মিনিট পর উদ্ধার হন সায়মা

ইলেকট্রন ডিভাইস ক্ষেত্রের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা ও গবেষণাকে উৎসাহিত ও স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে প্রতি বছর এ ফেলোশিপ প্রদান করা হয়। অসাধারণ গবেষণা দক্ষতা, গবেষণা প্রকল্পে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং প্রকৌশল শিক্ষায় উৎকর্ষ সাধনে অনন্য সাফল্যের জন্য বিশ্বের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ লাভ করে থাকেন।

এ বছর বিশ্বব্যাপী মাত্র দুইজন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এই ফেলোশিপ পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আফসানা আনজুম আঁখি অন্যতম। অন্যজন হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউভার্সিটি অবব টেক্সাসের বিবেক তালাভাঝুলা।

আফসানা আনজুম আঁখি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাইনুল হোসেনের তত্ত্বাবধানে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার গবেষণার অন্যতম বিষয় ছিল ন্যানোস্কেলে আল্ট্রা লো পাওয়ার এবং স্টেপ-সুইচিং-III-V ডিভাইসের বৈদ্যুতিক আচরণকে টিকাড সিমুলেশনের মাধ্যমে অনুধাবন করা। পাশাপাশি আফসানা নতুন দ্বিমাত্রিক হেটারোস্ট্রাকচার ফেট সেন্সরের জন্য নিউমেরিক মডেল উন্নয়নে কাজ করছেন।

এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদ আফসানাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। 

ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান জানান, এই অসাধারণ সাফল্য বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর গবেষণা অঙ্গনে দেশের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ও সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। তার এই অর্জন বিভাগ ও অনুষদকে গর্বিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী শিক্ষার্থী ও তরুণ গবেষকগণ এসটিইএম ক্ষেত্রে উন্নত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনে অনুপ্রাণিত হবেন, যা ভবিষ্যতের সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির রূপ নির্মাণে সহায়ক হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ