টানা আট জয়ে রীতিমত উড়ছিল রংপুর রাইডার্স। দুর্বার রাজশাহী বাদে বিপিএলে অংশগ্রহণ করা বাকি পাঁচ দলকেই তারা হারিয়েছিল। সেই রাজশাহীতেই তাদের জয়ের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ল।
বিপিএলের ৩১তম ম্যাচে দুই দল প্রথমবার মুখোমুখি হলো। যে ম্যাচে রাজশাহী ২৪ রানে হারিয়েছে রংপুরকে। টানা আট জয়ের পর রাজশাহীর বিপক্ষে এই পরাজয়কে রংপুর দেখছে ‘ওয়েক আপ কল’ হিসেবে।
প্লে’অফ নিশ্চিত হলেও রংপুরের লক্ষ্য শীর্ষ দুইয়ে থাকা। সেই লক্ষ্য নিশ্চিতে সামনে জয়ের ফেরার মিশন বিপিএলের সাবেক চ্যাম্পিয়নদের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন অধিনায়ক কাজী নুরুল হাসান সোহান।
আরো পড়ুন:
‘পদ্মার জলে’ ডুবলো রংপুর
সাব্বির-ইয়াসিরের শৈলীকে পূর্ণতা দিতে ব্যর্থ রাজশাহী
পরাজয়ের ব্যাখ্যায় সোহান বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ অবশ্যই (ওয়েক আপ কল)। আজকের আগ পর্যন্ত আমরা টুর্নামেন্টে ভালো খেলেছি। অবশ্যই এটা এলার্মিং বিষয় আমাদের দলের জন্য। সবাই সবার জায়গা থেকে অবশ্যই চিন্তা করতে পারবে।’’
‘‘ক্রিকেট জিনিসটাই এমন, ভালো খেলেই জিততে হবে। এমন নয় যে, আপনি এলেন আর জিতলেন। এটা আশা করা ঠিক নয়। যেদিন ভালো ক্রিকেট খেলবেন, নির্দিষ্ট ওই দিনেই জিতবেন।’’
ভুলগুলো শুধরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় সোহানের, ‘‘অবশ্যই সবাই এখন চিন্তা করবে জিনিসটা যে, আমরা কোন জায়গায় ভুলগুলো করেছি। এখান থেকে আরও কীভাবে শক্তিশালী হয়ে ফেরা যায়, এটা নিয়ে সবাই কাজ করবে।’’
অ্যালেক্স হেলস বিদায় নেওয়ার পর ওপেনিং পজিশনে থিতু হতে পারেনি রংপুর। আজ তাদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করেছিলেন ইরফান শুক্কুর। প্রথমবার সুযোগ পাওয়া ইরফান খুলতে পারেননি রানের খাতা। সোহান অপেক্ষায় পুরোপুরি ফিট সৌম্য সরকারের, ‘‘আমরা আমাদের শক্তিশালী দলটা নিয়েই খেলব। হয়তো সমন্বয়ের কারণে এটা (ইরফান শুক্কুর) করা হয়েছে। যেহেতু সৌম্যর খেলার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে সৌম্য খেলতে পারেনি। ওই জায়গা থেকেই এই জিনিসটা করা।’’
সিলেটে ও ঢাকায় বাউন্ডারির সীমানা ছোট থাকায় প্রচুর চার ছক্কা হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রামে খেলা হয়েছে আদর্শ ক্রিকেট মাঠের সীমানায়। তাতে রানের স্রোত কমেছে। বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন রংপুরের অধিনায়ক, ‘‘আমার মনে হয়, বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য অবশ্যই আদর্শ মাপে থাকা উচিত। যেহেতু টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, হাই স্কোরিং খেলা, সীমানায় আউট হওয়ার ঝুঁকিটা বেশিই থাকবে।’’
রংপুরের হয়ে বরিশালের বিপক্ষে ৩০ রান তুলে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়েছিলেন সোহান। আজও তার সুযোগ ছিল ইনিংস শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু রায়ান বার্লের বল উড়াতে গিয়ে সীমানা ধরা পড়েন। ২৬ বলে ৪১ রান করেন ৪ চার ও ২ ছক্কায়।
সামনে আরও ভালো করে দলের জয়ে অবদান রাখার কথা বললেন সোহান, ‘‘সবসময় দলের জন্য অবদান রাখতে চাই। হয়তো এখন ভালো যাচ্ছে। চেষ্টা করব, এই জিনিসটা যেন টুর্নামেন্ট জুড়ে করে যেতে পারি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমি সবসময় বলি, রান করার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন রানটা দলে প্রভাব ফেলছে, জয়ে সহায়তা করছে, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই সবসময় এটি চেষ্টা করব এবং পরের ম্যাচগুলোতে আরও উন্নতি করে ভালো করার চেষ্টা করব।’’
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন