বোরো ধান আবাদের জন্য ট্রাক্টর দিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকেরা। পোকামাকড় খেতে এসব জমিতে জড়ো হচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে সাদা বক। ফসলের মাঠে বকের ওড়াউড়ি দেখতে ভালো লাগে। শুধু তা-ই নয়, পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে কৃষকের উপকার করে থাকে ‘কৃষকবন্ধু’ বক।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। শর্ষে ঘরে তোলার পর বোরো ধান আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকেরা। এসব জমি ঘিরে আনাগোনা বেড়েছে অসংখ্য সাদা বকের। ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষের সময় জমিতে থাকা কীটপতঙ্গ বের হয়ে আসে। এসব কীটপতঙ্গ খেতেই জড়ো হয় ঝাঁকে ঝাঁকে সাদা বক।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, জমি চাষের সময় প্রতিদিন সকাল হলেই কোথা থেকে যেন ছুটে আসে এসব বক। একসঙ্গে ফসলের মাঠে এত বকের উপস্থিতি বছরের অন্য সময় দেখা যায় না। দল বেঁধে এসব বক খেতের পোকামাকড় খেয়ে থাকে। বকগুলোর ওড়াউড়ি বেশ উপভোগ করেন তাঁরা। এ দৃশ্য দেখে তাঁদের মন ছুঁয়ে যায়।

ফসলের মাঠে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় থাকে। এসব খেতেই সাদা বকগুলো জমিতে জড়ো হয়। এতে ফসলের মাঠের ক্ষতিকর পোকামাকড় নিধন হয়। কৃষকদের উপকার হয়।ইমতিয়াজ আলম, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা

মঙ্গল ও বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময় চলে গেলেও মানিকগঞ্জে সকালে এখনো কিছুটা শীতের আবহ রয়ে গেছে। জেলা সদরের দিঘি, ছুটিভাটবাউর, কয়ড়া, পিতলাই, ভাটবাউরসহ বিভিন্ন এলাকায় বোরো আবাদ করতে জমি চাষ করছেন কৃষকেরা। এর পাশাপাশি বীজতলায় বোরোর চারা তুলতে ও চারা রোপণে কৃষকদের সময় ব্যস্ততায় যাচ্ছে। ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষের সময় জমিতে লুকিয়ে থাকা পোকামাকড় বের হয়ে আসে। তখনই পোকামাকড় খেতে জমিতে এবং এর আশপাশে অসংখ্য সাদা বকের ঝাঁক এদিক-সেদিক ওড়াউড়ি করে।

মঙ্গলবার বিকেলে দিঘি গ্রামে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করছিলেন কৃষক মহির আলী (৫০)। কথা হলে তিনি বলেন, ‘হাল বাইলে খেত থেকে পোকা উঠে। এই পোকা খাইতে বক আইস্যা ভিড় করে। যখন হাল বাই, তখন বক পিছে পিছে ঘুরে। দেখতে ভালোই লাগে।’ তাঁর কথা, বক শিকার করা ঠিক নয়। বক পোকামাকড় খাওয়ায় ফসল আবাদে কীটনাশক কম লাগে। পোকামাকড় খেয়ে বক কৃষকের উপকার করে।

বকগুলোর ওড়াউড়ি বেশ উপভোগ করেন কৃষকেরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফসল র ম ঠ র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

জিম লেকারের সেই অমর কীর্তি

ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তিতে তাঁর পাশে বসেছেন অনিল কুম্বলে ও এজাজ প্যাটেল। তবে এটা তো জিম লেকারের কীর্তির অর্ধেক মাত্র । প্রথম ইনিংসেও ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচে উইকেট ১৯ উইকেটের রেকর্ড তো এখনো লেকারেরই। তাঁকে নিয়ে উৎপল শুভ্রর এই লেখা পাঠককে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ১৯৫৬ সালের ৩১ জুলাই, ওল্ড ট্রাফোর্ডে। যেদিন পূর্ণতা পেয়েছিল জিম লেকারের ওই অর্জন।

ওল্ড ট্রাফোর্ডে জিম লেকারের কীর্তির ৪৩ বছর পর অনিল কুম্বলে তাঁর পাশে বসেছেন, ৬৫ বছর পর আজাজ প্যাটেল; তবে লেকারের রেকর্ড আসলে ভাঙবে না কোনোদিনই। হ্যাঁ, এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটিতে লেকার, কুম্বলে আর এজাজ প্যাটেল তিনজনেরই সমান অধিকার। কিন্তু ১৯৫৬ সালের ৩১ জুলাইয়ে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের দশে–দশ তো লেকারের কীর্তির শেষ নয়। বরং বলা যেতে পারে কীর্তির অর্ধেক। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসেও যে ১০ উইকেটের মাত্র একটিই পাননি লেকার। এক টেস্টে ১৯ উইকেটের এই রেকর্ডটিকে চিরজীবী বলে মোটামুটি মেনে নিয়েছেন সবাই। 'কোনোদিন ভাঙবে না'...এমন রেকর্ডের তালিকায় ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড়ের পাশেই রাখা যায় এটিকে।

১৯৯৯ সালে দিল্লি টেস্টের আগ পর্যন্ত ইনিংসের ১০ উইকেটই নিয়ে নেওয়ার রেকর্ডটিকেও অবশ্য এমনই মনে করা হতো। ওই টেস্টে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসের ১০টি উইকেটই নিয়ে অনিল কুম্বলে লেকারের পাশে বসে যান। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এজাজ প্যাটেলও সঙ্গী হন এই দুজনের। নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনারের দশে–দশ কীর্তি প্রথম ইনিংসে বলে লেকারের ম্যাচে ১৯ উইকেটের রেকর্ড ছোঁয়ার একটা গাণিতিক সম্ভাবনা ছিল তাঁর। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ৪ উইকেটের ৩টিই নিয়ে যা আরও প্রবল করে তুলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত আর হয়নি, ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরই ভারত ইনিংস ঘোষণা দেয়, ওই ৭ উইকেটের ৪টি নিয়েছিলেন প্যাটেল। ম্যাচে ১৪ উইকেট, অনিল কুম্বলেরও তা–ই ছিল।

জিম লেকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ