অধ্যাপক ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার
Published: 13th, April 2025 GMT
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই—এই বক্তব্য সম্প্রতি বিভিন্নজন দিয়েছেন। সেই কথা উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘প্রফেসর ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে? উনি ক্ষমতায় এলেন কীভাবে? উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন এটাও একটা নির্বাচন। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে উনি ক্ষমতায় এসেছেন।’
এই বিশেষ পরিস্থিতি কত দিন স্থায়ী হবে, সেই প্রশ্ন তুলে ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না বলেছেন, ‘আইয়ুব খানও (পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক) একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এক-এগারোর যারা কুশীলব, তাঁরাও বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতি থাকেনি।’
এ প্রসঙ্গে মান্না আরও বলেন, ‘আজকে যে পরিস্থিতিকে বিশেষ মনে হচ্ছে তিন মাস পরে যখন সেই পরিস্থিতি বদলে যাবে, তখন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল প্রাইজ বিজয়ী যদি সারা দেশের মানুষের কাছে সমালোচিত হন, সেটা কি দেশের জন্য কল্যাণকর হবে?’
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব প্রশ্ন তোলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না। তিনি বলেন, ‘আমি প্রশ্ন করছি, প্রফেসর ইউনূস নিজে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান? উনি কি বলেছেন? গতকালও ঐকমত্য কমিশনকে ডেকে বললেন, যত তাড়াতাড়ি পারো সংস্কার করে ফেলো, আমি জুনের মধ্যে নির্বাচন করে ফেলতে চাই।’
তিন দিন আগে টেলিভিশনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘উনি সেখানে বললেন, আমি এই কাজের যোগ্য নই। এটা আমার কাজ নয়। আমার যে কাজ আমি সেই জায়গায় ফিরে যেতে চাই। আমি জানি না কারা এই বিশদ লেখালেখি করছেন, কারা এত বেশি করে কথা বলছেন, মানুষের কানে দেবার চেষ্টা করছেন যে ভোটের দরকার নেই, ড.
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘যদি তাঁকে ক্ষমতায় রাখতে চান তাহলে বলেন তিনি একটা দল করুক। ভোট করুক। অত জনপ্রিয় থাকলে সবাই মিলে ভোট দেন। আবার পাঁচ বছরের জন্য উনি ক্ষমতায় আসুক। আর যদি উনি ভোট না করেন, তাহলে সবাই মিলে তাঁকে বলেন যত তাড়াতাড়ি পারেন ভালো একটা ভোট দেন, দিয়ে আপনি সম্মানের সাথেই চলে যান।’
দেশের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার জন্য সস্তা জনপ্রিয়তার ওপর যাঁরা নৌকা ভাসানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের এই পথ থেকে সরে আসতে অনুরোধ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসের যদি যোগ্যতা থাকেই, সেই যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা বিকল্প পথ তো করতে পারব। উনি এই কাজ এই সেবা অন্যভাবে দিতে পারবেন না? আগে যারা ছিল তারা তাকে ছোট করার চেষ্টা করেছে। অপমান করেছে। কিন্তু যদি অন্য কেউ ক্ষমতায় আসে...তারা যদি ড. ইউনূসের কাছে দেশসেবার জন্য বলেন, উনি কি করবেন না?’
মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় একটা ব্যর্থতা হচ্ছে এর শিক্ষা অন্যবারের মতোই সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছায়নি।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। এতে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাসানী অনুসারী পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ভাসানী জনশক্তি পার্টি রাখা হয়। এর চেয়ারম্যান হয়েছেন শেখ রফিকুল ইসলাম আর মহাসচিব হয়েছেন আবু ইউসুফ সেলিম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ বছর ক ষমত য় ব শ ষ পর স থ ত অন ষ ঠ ন অন স র র জন য ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা যে চূড়ান্ত পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তা সম্ভব হয়নি: আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ১/১১ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলেও নানাভাবে এই সরকারকে বাধা দেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা যে চূড়ান্ত পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তা সম্ভব হয়নি। তবে সুংসবাদ, আজ থেকে তিনদিন পর, ৫ আগস্ট আমরা জুলাই সনদ ঘোষণার সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছি।
শনিবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে ‘রিবিল্ডিং দ্য ন্যাশন: বাংলাদেশ ২.০’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যে বড় পরিবর্তন জনগণের মধ্যে হয়েছে, তা হলো রাজনৈতিক সচেতনতা। যে প্রেক্ষাপটে গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, জুলাই সনদের ঘোষণাপত্র সেটিকে জাস্টিফাই করে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সেন্ট্রাল কানেক্টিং পয়েন্ট, পরবর্তীকালে অনেকেই এই ব্যানারটিকে মিস ইউজ করেছে। যে জায়গা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতে সাধুবাদ। তবে আমি প্রত্যাশা করবো, তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা রাখবে।’’
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মরদেহ সম্পর্কে উপদেষ্টা আসিফ মাহমদু বলেন, ‘‘৬টি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আছে। হয়তো বেশিদিন রাখা সম্ভব হবে না। তাদের ডিএনএ স্যাম্পল রাখা হবে। তাদের পরিবার যোগাযোগ করে নিয়ে যেতে পারবেন। আগামী ৪ আগস্ট তাদের দাফন করা হবে।’’
‘‘ডিএনএ টেস্ট করে গণকবরে যারা সমাহিত হয়েছেন, তাদের শনাক্ত করা হবে এবং তাদের পরিবারের কেউ নিয়ে যেতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো’’, যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/রাহাত//