যেভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে চুরি হলো ফরাসি রাজপরিবারের মুকুট
Published: 21st, October 2025 GMT
প্যারিসের বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘর থেকে রবিবার প্রকাশ্য দিবালোকে নেপোলিয়নের যুগের নিদর্শন চুরি হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই ঘটনাকে ‘আমাদের লালিত ঐতিহ্যের উপর আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তদন্তকারীরা চার সন্দেহভাজনকে খুঁজে বের করার এবং রাজমুকুটিটি উদ্ধারের জন্য সময়ের সাথে পাল্লা দিচ্ছেন। কারণ তাদের আশঙ্কায়, দ্রুত উদ্ধার করতে না পারলে এই মুকুটটি চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। কীভাবে এই মুকুটটি লুট করা হয়েছে তার একটি বিশদ বিবরণ প্রকাশ করেছে সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকাল ৯টায় ল্যুভর খোলা হয়েছিল। ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে পুলিশ মধ্য প্যারিসের কোয়ে ফ্রাঁসোয়া মিটের্যান্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে একটি ফোন পায় এবং তিনি ল্যুভরের বাইরে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের উপস্থিতির কথা জানায়। ওই ব্যক্তি জানান, মোটরসাইকেল হেলমেট পরা দুজন ব্যক্তি ইয়ামাহা টি-ম্যাক্স স্কুটারে করে এসেছে, হলুদ এবং কমলা রঙের জ্যাকেট পরা আরো দুজন ব্যক্তি একটি লিফটিং প্ল্যাটফর্ম সহ একটি ট্রাকের ভিতরে বসে আছে। ফোনটি পাওয়ার পরপর স্থানীয় পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠানো হয়।
ত্রিকোণ বিশিষ্ট ট্রাফিক প্রতিবন্ধক দিয়ে এলাকাটি সুরক্ষিত করার পরে চোরেরা গাড়ির লিফটটি স্থাপন করে এবং দুজন ব্যক্তি দ্বিতীয় তলার বারান্দায় সিঁড়ি বেয়ে ওঠে। জানালা ভেঙে একটি অ্যাঙ্গেল গ্রাইন্ডার, করাত এবং গ্রাইন্ডিং পাওয়ার টুল ব্যবহার করে হলুদ জ্যাকেট পরা দুজন ব্যক্তি অ্যাপোলো গ্যালারিতে ঢোকে। এটি ল্যুভরের সবচেয়ে অলঙ্কৃত কক্ষগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে অন্যান্য অমূল্য সম্পদের সাথে ফরাসি রাজপরিবারের মুকুটটি রয়েছে।
ভেতরে চোরেরা দুটি ডিসপ্লে কেস ভাঙতে গ্রাইন্ডার ব্যবহার করে। তারা নেপোলিয়নের যুগের নয়টি গয়না লুট করে, যার মধ্যে রয়েছে নীলকান্তমণি, পান্না এবং হীরা দিয়ে সজ্জিত টায়রা, নেকলেস এবং কানের দুল যা ঊনবিংশ শতাব্দীর ফ্রান্সের রানীরা পরতেন।
ডিসপ্লে ভাঙার পরপরই জাদুঘরের অ্যালার্ম বেজে ওঠে। গ্যালারিতে থাকা পাঁচজন জাদুঘর কর্মী ‘নিরাপত্তা প্রোটোকল’ তৈরি করে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক করে।
সকাল ৯টা ৩৮ মিনিটে অমূল্য সম্পদ হাতে নিয়ে চোরেরা ভাঙা জানালা দিয়ে পালিয়ে যায় এবং সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসে। জাদুঘরের কর্মীরা দর্শনার্থীদের সরে যেতে চিৎকার করে বলেন, একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা চোরদের পালানো বন্ধ করতে তাদের ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেন। কিন্তু চোরেরা তাদের দুটি ইয়ামাহা টি-ম্যাক্স স্কুটারে করে সেইন নদীর তীর ধরে পালিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পরেই পুলিশের একাধিক ইউনিট হাজির হয়। রাস্তায় নেপোলিয়ন তৃতীয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির ক্ষতিগ্রস্ত মুকুটটি পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত লুটেরাদের পালানোর তাড়াহুড়োয় পড়ে গিয়েছিল। মুকুটটিতে ১ হাজার ৩৫৪টি হীরা এবং ৫৬টি পান্না রয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ দ ঘর ল য ভর
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হামিদুল হক মোহন আর নেই
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হামিদুল মোহনের মৃত্যুর বিষয়ে তার ছেলে মিল্টন হক রাইজিংবিডি ডটকমকে তথ্য দিয়েছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী এবং রাজনৈতিক অনুরাগী রেখে গেছেন তিনি।
আরো পড়ুন:
সন্দ্বীপে ৭ প্রবাসীর দাফন সম্পন্ন
খুলনায় পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
মিল্টন হক বলেন, টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রতিদিনের মতো সোমবারও (২০ অক্টোবর) গণসংযোগে বের হয়েছিলেন। দেলদুয়ার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে বিকালে দেউলী ইউনিয়নে পথসভা করে বাড়ি ফিরছিলেন। এমন সময় গাড়িতেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এই অবস্থায় টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হামিদুল মোহনের মৃত্যুতে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়ায় বসবাস করতেন। তবে তার গ্রামের বাড়ি জেলার দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের মঙ্গলহোড় গ্রামে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা হামিদুল মোহনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
ফরহাদ ইকবাল জানান, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বাদ জোহর বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযা হবে।
সালাউদ্দিন টুকু শোক বার্তায় বলেন, “হামিদুল হক মোহন শুধু একজন রাজনীতিক ছিলেন না— তিনি ছিলেন আমাদের অনুপ্রেরণা, আমাদের ভরসার জায়গা। বিএনপির যেকোনো কর্মী যখন যেভাবে তাকে ডেকেছেন, তিনি বিনা দ্বিধায় পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি ছিলেন আমার অত্যন্ত আপনজন। তার স্নেহ, পরামর্শ ও সাহস জুগিয়ে যাওয়ার শক্তি আমি কখনো ভুলব না। তার মতো নিবেদিতপ্রাণ, নিঃস্বার্থ ও আদর্শবান মানুষের শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।”
তিনি আরো বলেন, “টাঙ্গাইলের মানুষ, বিএনপি পরিবার এবং আমরা সবাই আজ একজন অভিভাবককে হারালাম। পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলার দরবারে দোয়া করি, আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন এবং তার পরিবারকে এই শোক সইবার তৌফিক দিন।”
টাঙ্গাইল
ঢাকা/কাওছার/রাসেল