এবার নিলামে উঠল এস আলমের স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভোজ্যতেল কারখানা
Published: 27th, April 2025 GMT
এবার এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভোজ্যতেল কারখানাসহ ১ হাজার ১৪৯ শতাংশ জমি নিলামে তুলেছে ইসলামী ব্যাংক। গ্রুপটির কাছে এই তিন প্রকল্পের বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার পাওনার পরিমাণ ২ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। আজ রোববার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ নিলাম ডেকেছে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা।
রাজধানী ও চট্টগ্রামের স্থানীয় এক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার গ্রাহক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম কোল্ড রোলড স্টিল লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন ও এস আলম ভেজিটেবল অয়েল। এর মধ্যে এস আলম কোল্ড রোলড স্টিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান গনি; চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ; পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও হালিমা বেগম; স্বতন্ত্র পরিচালক সম্পদ কুমার বসাক ও হাসান ইকবাল; এস আলম পাওয়ার জেনারেশনের এমডি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম, পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাছান ও এখলাসুর রহমান; এস আলম ভেজিটেবল অয়েলের এমডি মোহাম্মদ শহীদুল আলম ও চেয়ারম্যান ফারজানা পারভীন।
এসব ব্যক্তির কাছে ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সুদসহ (ইসলামী ব্যাংকের ভাষায় লভ্যাংশ) ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এই পাওনা আদায় পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য খরচ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩–এর ১২ (৩) ধারা মোতাবেক বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করতে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এর আগে ২০ এপ্রিল ৯ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা পাওনা আদায়ের জন্য এস আলম গ্রুপের চিনিকলসহ প্রায় ১১ একর সম্পত্তির নিলাম ডাকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা।
আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখল করে নেয় এস আলম গ্রুপ। এরপর ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে এক লাখ কোটি টাকার বেশি তুলে নেয় গ্রুপটি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারায় গ্রুপটি। এসব ঋণ এখন এক এক করে খেলাপি হতে শুরু করেছে। আর এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় নিলামে উঠছে। সব মিলিয়ে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে ইসলামী ব্যাংক।
চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের পর গ্রুপটি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক দখল করে নেয়। তবে সব মিলিয়ে তারা একসঙ্গে ৮টি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। অন্য ব্যাংকগুলো হলো ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনে নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেয় গ্রুপটি। সব মিলিয়ে এস আলম গ্রুপের হাতিয়ে নেওয়ার টাকার পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে চলছে বিশেষ নিরীক্ষা। নিরীক্ষা কার্যক্রমের পরই নির্ধারিত হবে ব্যাংকগুলোর ভাগ্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এস আলম গ র প র ম হ ম মদ পর ম ণ ল আলম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ ঘোষণা, ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন
২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সৌদি আরব সরকার। আগামী বছর হজে অংশ নিতে আগ্রহী বাংলাদেশি যাত্রীদের চলতি বছরের ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এর পর ৯ নভেম্বর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি সই হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এই রোডম্যাপ হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব), হজ এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ১৫ জুন পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৮ জুন রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১০ জুলাই হজ কোটা ঘোষণা করবে সৌদি সরকার। ২৬ জুলাই থেকে ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্যাম্প-সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ ও অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ৯ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চলতি হজ মৌসুমের ব্যবহৃত ক্যাম্পগুলো আগামী হজ মৌসুমের জন্য পুনর্ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।
প্যাকেজ, আবাসন, পরিবহন চুক্তি, এয়ারলাইন্স নির্ধারণসহ ফ্লাইট সূচি চূড়ান্ত করতে হবে ২৪ আগস্টের মধ্যে। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের তথ্য নুসুক মাসারে আপলোড এবং গ্রুপ গঠন শুরু করতে হবে। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁবু ভাড়া ও মাশায়ের প্যাকেজ বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠাতে হবে। আগামী বছরের ৪ জানুয়ারির মধ্যে সেবা সংস্থার সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি এবং ফ্লাইট সূচি নির্ধারণ করতে হবে। ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মক্কা-মদিনার হোটেল ও পরিবহন-সংক্রান্ত অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া, যা চূড়ান্ত করতে হবে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়া শুরু হবে ৮ ফেব্রুয়ারি এবং চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রা শুরু হবে ১৮ এপ্রিল।
২০২৬ সালের হজে সর্বোচ্চ দুটি সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করার সুযোগ থাকবে। সব ধরনের চুক্তি এবং অর্থ প্রদান ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে কোনো অর্থ দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। কোরবানির অর্থও এই প্ল্যাটফর্মে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের খাবার-সংক্রান্ত চুক্তি করতে হবে সৌদি ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে। তাঁবু, সেবা প্যাকেজ এবং পরিবহন খরচ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মেডিকেল ফিটনেস (শারীরিক সুস্থতা) ছাড়া কেউ হজে অংশ নিতে পারবেন না। হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতা, লিভার সিরোসিস, নিউরোলজিক্যাল বা মানসিক সমস্যা, কেমোথেরাপি/রেডিওথেরাপি নেওয়া ক্যান্সার রোগী এবং ঝুঁকিপূর্ণ অন্তঃসত্ত্বা নারীরা হজ নিবন্ধনের অযোগ্য বিবেচিত হবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।