মেয়র ঘোষণার দাবিতে ফয়জুল করীমের করা মামলা খারিজ
Published: 5th, May 2025 GMT
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের দায়ের করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল।
নির্ধারিত দিনে আদালতে শুনানিতে অংশ নেন ফয়জুল করীমের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে বরিশাল সিটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র সহকারী জজ মো.
ফয়জুল করীমের পক্ষে মামলায় অংশ নেওয়া আইনজীবী শেখ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে যাব।’
নির্বাচনের প্রায় ২২ মাস পর সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের পক্ষে গত ১৭ এপ্রিল আদালতে আবেদনটি দাখিল করেছিলেন তাঁর আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির। সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক আবেদনটি পরবর্তী আদেশের জন্য ২৪ এপ্রিল ও পরবর্তী সময়ে ৫ মে তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। আজ দুপুরে এই আবেদনের শুনানির পর বিচারক আদেশ দেন।
মামলার শুনানি শেষে আদালত বলেন, ঘটনাটি দীর্ঘদিন আগের হওয়ায় মামলাটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিবেচিত হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রক্রিয়াগত বিষয় উল্লেখ করে মামলার আবেদনটি খারিজ করা হলো।
ফয়জুল করীমের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী শেখ নাসির উদ্দিন, জি এম নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ মিয়া ও জামাল উদ্দিন।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ২০২৩ সালের ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে ১ নম্বর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় নগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলা চালান আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হয়েছিলেন। একই সঙ্গে নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের জাগুয়া কলেজ কেন্দ্র থেকে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে দরখাস্তকারীকে (সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম) প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে কম দেখিয়ে (৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট) পরাজিত দেখানো হয় এবং ১ নম্বর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট দেখিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।
আবেদনে নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার আদেশ প্রদানের জন্য আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে মামলার ব্যয়ভার সুদসহ প্রতিপক্ষের প্রতিকূলে ডিক্রি দেওয়ারও আবেদন করা হয়।
গত বছরের ১৯ আগস্ট পৃথক প্রজ্ঞাপনে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সারা দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ও বেশির ভাগ কাউন্সিলর। এরপর গত বছরের ১৯ আগস্ট তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন। বর্তমানে প্রশাসকের এই দায়িত্ব পালন করছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার।
ফয়জুল করীমের পক্ষে মামলায় অংশ নেওয়া আইনজীবী শেখ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এই আদেশে সংক্ষুব্ধ। কারণ, মামলা করতে দেরি হয়েছে। এ জন্য আবেদন খারিজ করাটাকে আমরা সমীচীন মনে করছি না। এটা বাস্তবতার নিরিখে কনসিডার করা যেত। আইন তো মানুষের জন্য। আমরা সুবিচার পাইনি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আইনজ ব হয় ছ ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ নিয়ে সেমিনার রোববার, থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা
‘বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে রোববার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিকেল পৌনে ৫টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সেমিনারের উদ্বোধন করবেন। সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লেলার। এরপর বিচার বিভাগ সংস্কারে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’র ওপর তথ্যচিত্র তুলে ধরা হবে।
এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন আইন উপদেষ্টা ড. অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।