রাজধানীর বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে আমাদের কাছে তথ্য আসে শান্তিনগরের একটি রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে। আমাদের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুমার নামাজ কত রাকাত

জুমার নামাজ ইসলামের একটি বিশেষ ইবাদত, যা মুসলমানদের সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন শুক্রবারে জামাতের সঙ্গে আদায় করা হয়। কোরআনে জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)

এ আয়াত থেকে জুমার নামাজের তাৎপর্য স্পষ্ট। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, জুমার নামাজ কত রাকাত? আমরা জুমার নামাজের রাকাত সংখ্যা, এর ইসলামি বিধান, সুন্নাহ ইত্যাদি বিস্তারিত আলোচনা করব।

জুমার নামাজের রাকাতসংখ্যা

জুমার নামাজের রাকাতসংখ্যা ইসলামি শরিয়াহ দ্বারা সুনির্দিষ্ট। এটি জোহর নামাজের পরিবর্তে শুক্রবার আদায় করা হয়। রাকাতসংখ্যা নিম্নরূপ—

ফরজ নামাজ: জুমার ফরজ নামাজ দুই রাকাত। এটি জামাতের সঙ্গে মসজিদে ইমামের নেতৃত্বে আদায় করা হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জুমার নামাজ দুই রাকাত, যা জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৭৬)

এই ফরজ নামাজ জোহরের চার রাকাত ফরজের স্থলাভিষিক্ত হয়।

আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫

সুন্নাত নামাজ: চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা (জোরালো সুন্নত), যা জুমার ফরজ নামাজের আগে পড়া হয়। চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ও দুই রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা (ঐচ্ছিক সুন্নত) পড়া যায়। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৫২৩)

মোট রাকাত: সাধারণ অনুসরণ অনুযায়ী, জুমার নামাজের সম্পূর্ণ রাকাতসংখ্যা হলো ১২।

জুমার আগে: চার রাকাত (সুন্নাত)

ফরজ: দুই রাকাত (জামাতে)

জুমার পরে: চার রাকাত (সুন্নাত) + দুই রাকাত (ঐচ্ছিক সুন্নত)

হানাফি মাজহাবে জুমার পর চার রাকাত সুন্নাতকে জোর দেওয়া হয়। তবে শাফিঈ মাজহাবে জুমার পর দুই রাকাত সুন্নাতও পড়া যায়। হাদিসে উল্লেখ আছে, নবীজি (সা.) জুমার পর দুই রাকাত পড়তেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৮১)

তবে পরবর্তী সাহাবিরা চার রাকাত পড়েছেন বলেও প্রমাণও রয়েছে।

জুমার নামাজের কাঠামো

জুমার নামাজের কাঠামো নিম্নরূপ—

আজান ও খুতবা: জুমার নামাজের আগে দুটি আজান দেওয়া হয়। প্রথম আজান জুমার সময় শুরুর ঘোষণা দেয় এবং দ্বিতীয় আজান (ইকামত) ফরজ নামাজের ঠিক আগে। এর মধ্যে ইমাম দুটি খুতবা প্রদান করেন, যা জুমার নামাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। খুতবায় কোরআনের আয়াত, হাদিস ও ইসলামি শিক্ষা প্রদান করা হয়।

চার রাকাত সুন্নাত: মসজিদে প্রবেশের পর অনেকে চার রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়েন। এটি হানাফি মাজহাবে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে বিবেচিত।

দুই রাকাত ফরজ: জামাতের সঙ্গে ইমামের নেতৃত্বে দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা হয়।

চার+দুই রাকাত সুন্নাত: ফরজ নামাজের পর চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ও দুই রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা পড়া হয়।

আরও পড়ুনবেতের নামাজ পড়ার নিয়ম০৮ জুলাই ২০২৫জুমার নামাজের গুরুত্ব

জুমার নামাজ মুসলমানদের জন্য একটি ফরজ ইবাদত, যা শুধু পুরুষদের জন্য জামাতের সঙ্গে আদায় করা বাধ্যতামূলক, যদি তাঁরা সুস্থ ও সক্ষম হন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অলসতা বা উদাসীনতার কারণে টানা তিন জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, তার হৃদয়ে আল্লাহ মোহর মেরে দেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১০৫২)

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে তা কবুল করা হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৯৩৫)

জুমার নামাজে সতর্কতা

জুমার নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।

জামাতের গুরুত্ব: জুমার নামাজ জামাত ছাড়া আদায় করা যায় না। যদি কেউ মসজিদে যেতে না পারেন (যেমন অসুস্থতার কারণে), তবে তাঁর জন্য জোহর নামাজ পড়া ফরজ।

খুতবার সময় নীরবতা: খুতবার সময় কথা বলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকা নিষিদ্ধ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি খুতবার সময় কথা বলে, তার জুমার নামাজ বৃথা যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭)

পরিচ্ছন্নতা: জুমার নামাজের আগে গোসল করা, পরিষ্কার কাপড় পরা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নাহ। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৮০)

নারীদের জন্য: হানাফি মাজহাব অনুযায়ী, নারীদের জন্য জুমার নামাজ ফরজ নয়, তবে তাঁরা চাইলে মসজিদে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। না পড়লে তাঁরা জোহরের চার রাকাত ফরজ আদায় করবেন। (ইবনে হাজার আসকালানি, ফাতহুল বারি, পৃষ্ঠা: ২/৩৯৫, দারুল মা’রিফা: ১৯৮৯)

জুমার নামাজ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও সামাজিক সংহতি বাড়ায়। খুতবার মাধ্যমে মুসলমানরা ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা পান, যা তাঁদের জীবনকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করে।

আরও পড়ুনজুমার নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব০৬ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ