আরও চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো চিন্ময়কে
Published: 6th, May 2025 GMT
পুলিশের কাজে বাধা-ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা আরও চারটি মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ ভার্চ্যুয়াল শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, আইনজীবী-বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আদালত শুনানি শেষে চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
শুনানিতে চিন্ময় দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এ বিষয়ে জানতে চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মাকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি। এর আগে গতকাল সোমবার আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখান আদালত।
এদিকে চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর ভার্চ্যুয়াল শুনানিকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালত ভবনের প্রবেশমুখে আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। চট্টগ্রাম কারাগারের সামনেও জোরদার করা হয় নিরাপত্তা।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ের ৫ দিন পর আইনজীবী জানালেন নোবেল বাবা হতে চলেছেন
গত ১৯ জুন কারাফটকে বিয়ে করেন শিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। তার আইনজীবী আজ জানালেন, নোবেল বাবা হতে চলেছেন। মঙ্গলবার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এই খবর জেনেছেন নোবেল।
আদালত নোবেলের জামিন মঞ্জুরের পর তার আইনজীবী মো. খলিলুর রহমান জানান, নোবেল ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান প্রিয়া বাবা-মা হতে চলেছেন।
বিয়ের পাঁচদিন পর নোবেলের স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর প্রসঙ্গে এই আইনজীবী বলেন, নোবেল-প্রিয়া গত বছর বিয়ে করে একসঙ্গে বসবাস করছিলেন। তখন কাবিন রেজিস্ট্রি করা ছিল না। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে মামলা হয়। এখন ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে এবং গত ১৯ জুন কারাগারে আবার তাদের বিয়ে হয়েছে।
এদিন ডেমরা থানায় হওয়া নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি মামলায় এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন পেয়েছেন নোবেল। জামিনের আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহাবুব। আদালতে জামিনের বিষয়ে আপত্তি না থাকার কথা জানান তার স্ত্রী প্রিয়া। তবে নোবেল নিজে এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।
এর আগে হাসিখুশি অবস্থায় কড়া নিরাপত্তায় আদালতে প্রবেশ করেন নোবেল। এর কিছুক্ষণ পরই হাস্যোজ্জ্বল মুখে উপস্থিত হন তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইসরাত জাহান প্রিয়াও। তিনিই ছিলেন নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার বাদী। আদালতে প্রবেশ করে কাঠগড়ায় থাকা নোবেলের কাছে যান তিনি। বেশ আনন্দের সঙ্গে দুজন গল্প করেন কিছুক্ষণ।
এরপর নোবেলকে আদালত থেকে পুনরায় কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় সারাক্ষণ প্রিয়ার হাত ধরেই হাঁটছিলেন নোবেল। আদালতের লিফটে ওঠার সময়ও প্রিয়াকে সঙ্গে নেন তিনি।
গত ২০ মে থেকে কারাগারে ছিলেন নোবেল। বাদীর মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন এই সংগীতশিল্পী। এই মামলার শুনানিতে গত ১৮ জুন (বুধবার) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক নাজমিন আক্তার নোবেলকে জামিন দেওয়ার শর্ত হিসেবে বাদীকে বিয়ে করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মেনে বিয়ে করে জামিন পান নোবেল।
পরে ১৯ জুন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল বিয়ে করেন মামলার বাদী ইসরাত জাহান প্রিয়াকে। বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন উভয় পরিবারের সাক্ষী নাজমা হোসেন, সাবিহা তারিন, মো. খলিলুর রহমান এবং মো. সাদেক উল্লাহ ভূইয়া।
কারা সূত্রে জানা গেছে, এই বিয়েতে দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ১০ লাখ টাকা।