শিল্পে ২৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে
Published: 7th, May 2025 GMT
শিল্প সংকট কাটাতে বাড়তি ২৫ কােটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ । এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ থেকে ১০ কোটি এবং বাড়তি এলএনজি আমদানি করে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস শিল্পে দেওয়া হবে।
বুধবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
বিস্তারিত আসছে.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ক্ষুধাকেও অস্ত্র করা হলো
লজ্জাজনক– ঠিক এই শব্দই ব্যবহার করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’য়ার গত সোমবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) কার্যক্রম নিয়ে বলতে গিয়ে। ইসরায়েল যেন অবশ্যই গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয়, সে ব্যাপারে জাতিসংঘ আইসিজের হস্তক্ষেপ চেয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে যাওয়ার ঠিক আগে আবারও গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করার দুই মাস পর জাতিসংঘ এ প্রশ্ন তুলল। এখন সরবরাহ শূন্য হওয়ার পথে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, হাজার হাজার শিশু ইতোমধ্যে তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।
সা’য়ারের অভিযোগ, ইসরায়েলকে অন্যায্যভাবে নিশানা বানানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা হয়েছে। এতে বেসামরিক নাগরিকদের অনাহারে থাকার ব্যাপার জোরালোভাবে উঠে এসেছে।
গত গ্রীষ্মে অতি ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ মন্তব্য করেছিলেন, ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে হামাসের নৃশংসতাকালে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে জনগণকে অনাহারে রাখা ‘ন্যায্য ও নৈতিক’ হতে পারে, যদিও ‘বিশ্বের কেউ আমাদের সে অনুমতি দেবে না’। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গত মাসে বলেছিলেন, তাদের ‘নীতি স্পষ্ট: গাজায় কোনো মানবিক সাহায্য প্রবেশ করবে না।’
অতি ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির জোর দিয়ে বলেছেন, জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত ‘এক গ্রাম খাবার বা কোনো সাহায্য প্রবেশের সুযোগ নেই।’ স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় ৫২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, বেশির ভাগই সাধারণ নাগরিক। ইউনিসেফ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে শিশুই ১৫ হাজার। মার্চে নতুন করে ইসরায়েলি আক্রমণ শুরু হওয়ার পর শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বোমা হামলায় যেমন মানুষের মৃত্যু ঘটে, তেমনি অনাহারে মানুষ মারা যায়। কৃষিজমি ধ্বংস হয়ে গেছে।
যুদ্ধের আগের তুলনায় ৩০ গুণ দামে আটা কিনতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। সহায়তা সামগ্রীর গুদামগুলো খালি পড়ে আছে। সরবরাহ শেষ হওয়ায় এক মাস আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বেকারিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এখন প্রয়োজনীয় কমিউনিটি বা গোত্রভিত্তিক রান্নাঘরগুলোও বন্ধ। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সহায়তা পাঠানোর ব্যাপারে নেতানিয়াহুকে অনুমতি দিতে বলেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইসিজেকে বলেছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য এটি করা তার বাধ্যবাধকতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আইন কিন্তু বলছে, জেনেভা কনভেনশনের অধীনে দখলদার শক্তির একটি অত্যন্ত জরুরি কর্তব্য হলো অভাবী জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দেওয়া। ইসরায়েল ‘আগামী সপ্তাহগুলোতে’ সাহায্য বিতরণ পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। কিন্তু সেটি হবে আমূল পরিবর্তিত নতুন এক পদ্ধতির মাধ্যমে।
তাদের দাবি, মানবিক প্রচেষ্টার জন্য অপরিহার্য জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থায় হামাসের ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটেছে। জাতিসংঘ ও অন্যরা অভিযোগটির তীব্র বিরোধিতা করেছে। পৃথক পরিবারে খাদ্য সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি নিরাপত্তাবিষয়ক ঠিকাদারদের বিকল্প প্রস্তাবটি এখন অকার্যকর এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক বলে মনে হচ্ছে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যখন আন্তর্জাতিক আদালতগুলোকে আক্রমণ করছে, তখন যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশকে সেগুলো রক্ষা ও শক্তিশালী করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। অবিলম্বে সাহায্য প্রদান পুনরায় চালু করার জন্য তাদের জোরালো চাপ দিতে হবে। এই আইসিজে মামলাটি লজ্জাজনকভাবে এখানে আনতে হলো। আরও লজ্জাজনক দিক হলো, এক গবেষণায় দেখা গেছে, গাজার প্রায় অর্ধেক সংখ্যক শিশু মরতে চেয়েছিল। এটাও লজ্জাজনক যে, এত বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং আরও অসংখ্য সাধারণ মানুষকে অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এটি আসলে ঘটতে দেওয়া হয়েছে। এটাও লজ্জাজনক।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান
থেকে ভাষান্তর
ইফতেখারুল ইসলাম