‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে শতবর্ষী বটগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি
Published: 7th, May 2025 GMT
মাদারীপুরে একটি শতবর্ষী বটগাছ ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সামাজিক বনায়ন ও নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গাছের মালিককে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত সোমবার সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীরকান্দি গ্রামের কুমার নদের খেয়াঘাটে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয় মুসল্লিরা একটি পুরোনো বটগাছ কেটে ফেলার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গাছটি কাটা বন্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
গাছের মালিক সাত্তার হাওলাদার বলেন, ‘‘বাড়ি নির্মাণের জন্য শতবর্ষী বটগাছটি শ্রীনদী বাইতুস সুন্নত ক্যাডেট মাদ্রাসার কাছে বিক্রি করি। সেটির ডালগুলো কাটা হয়েছে। তবে, এখনো গাছ কাটা হয়নি।’’
ঢাকা/বেলাল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত বটগ ছ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলা হলো শতবর্ষী বটগাছটি
গোড়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত, লাল কাপড় বাধাকে ‘শিরক ও গুনাহর কাজ’ আখ্যা দিয়ে মাদারীপুরে শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী বটগাছটি কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান প্রতিক্রিয়াও দেখা যাচ্ছে।
এ দিকে বটগাছটি কেটে ফেলার বিষয়ে তদন্ত শুরু কাজ করেছে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। মূলত শতবর্ষী বটগাছটির গোঁড়ায় স্থানীয় ও দূর-দূরান্তের মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করতো, মনোবাসনা পূরণে লাল কাপড় বেঁধে রাখত। যা ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক আখ্যা দিয়ে তা কেটে ফেলা হয়েছে।
গাছটি কাটার সমালোচনা করে মাইনুল ফয়সাল নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘শিরক করল কারা আর ক্ষতিগ্রস্ত হলো কে? গোটা জাতি এতটা অশিক্ষিত কি করে হয় আমার মাথায় ঢোকে না। বটগাছের অপরাধ কি?’
সোহেল সিকদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদে অনেকে এই গাছের ছায়ায় বসে থাকত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শত শত পাখির অভয়ারণ্য এ গাছ। এভাবে গাছটি কেটে ফেলা ঠিক না।’
তবে গাছ কাটার পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এই বটগাছের গোঁড়ায় মিষ্টি দেয়, সিন্নি দেয়, লাল কাপড় বাধা হয়। এই গাছকে কে মনে করে সৃষ্টিকর্তা, দেবতা, যা শিরক ও গুনাহর কাজ। এই গুনাহর কাজ যাতে না হয় সেজন্য স্থানীয়রা গাছটি কেটেছেন। এত বড় গাছ যে পরিমাণে অক্সিজেন দেয় তা আমাদের ও পরিবেশের জন্য বড্ড উপকারী তা আমরা জানি। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করেছি, এখানে তিনটি গাছ রোপণ করব। আমরা জমির মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি গাছটি কাটার বিষয়ে। তিনি আমাদের বলেছেন, যেহেতু গাছটির জন্য গুনাহ হচ্ছে, তাই কেটে ফেলেন ও আমাদের মসজিদে ১৫০০ টাকা দিয়েন।’
মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম খান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং আশপাশের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে আগে যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাছটি কাটার পরিকল্পনা হয়েছিল, তা অস্বীকার করছেন গাছমালিক। জমির মালিক সত্তর হাওলাদার বলেছেন, গাছ তিনি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আমার ধারণা, ঘটনা আগেরটা ঠিক, তবে জমির মালিককে ম্যানেজ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি এবং তদন্ত করা হচ্ছে।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোসা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি জেনে সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’