দালালের খপ্পরে রাশিয়ায় গিয়ে যুদ্ধে নিহত যুবক
Published: 8th, May 2025 GMT
তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া। বড় ভাই ইব্রাহিম ভূঁইয়া সৌদি আরব থাকেন। মেজো ভাই বাড়িতে মুরগির খামারের ব্যবসা করেন। হাবিবুল্লাহ শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। তাঁর স্বপ্ন বিদেশ গিয়ে বেশি বেতনে চাকরি করে সংসারে সচ্ছলতা আনবেন। কিন্তু দালালের খপ্পরে পড়ে রাশিয়ায় গিয়ে যুদ্ধে নামতে বাধ্য হন তিনি। সেখানে নিহত হয়েছেন এ যুবক।
নিহত হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া (২০) শিবপুরের আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ঘাশিরদিয়া গ্রামের আবু সিদ্দিক ভূঁইয়া ও মানসুরা বেগমের ছোট ছেলে।
জানা গেছে, হাবিবুল্লাহ বিদেশ যেতে চাইলে পাশের ব্রাহ্মন্দী গ্রামের দালাল ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আবু সিদ্দিক ভূঁইয়া। চুক্তি হয় ১৫ লাখ টাকায় হাবিবুল্লাহকে ইতালিতে পাঠাবেন। ইতালির কথা বলে ফারুক তাঁর বন্ধু ঢাকার আরেক দালাল শফিকের মাধ্যমে হাবিবুল্লাহকে ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে দুই মাসের ওমরা ভিসায় সৌদি আরব নিয়ে যান। দুই মাস পর সৌদি আরবের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় শফিক আরেক দালাল সুলতানের কাছে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়। হাবিবুল্লাহকে তুরস্ক হয়ে রাশিয়ায় নিয়ে যান সুলতান। সেখানে তাঁকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে ট্রেনিং করায়। এর আগে হাবিবুল্লাহকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে রাশিয়ান ভাষায় লেখা এক বছরের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করায়। ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ রাশিয়ার ৪৫ জন সেনা সদস্যের সঙ্গে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে নিহত হন হাবিবুল্লাহ। ভেঙে যায় সুখের স্বপ্ন।
এরপর থেকে হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়ার পরিবারে চলছে মাতম। নিহত হাবিবুল্লাহর মা মানসুরা বেগম জানান, গত ৩০ এপ্রিল রাতে রাশিয়া থেকে তাঁর ছেলের বন্ধু ফোন করে জানায় হাবিবুল্লাহ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মারা গেছে গত ২৭ মার্চ। তাঁর বড় ছেলে ইব্রাহিম ভূঁইয়া সৌদি আরব থাকেন। তাঁকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। গত রোববার প্রথমে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান তারা।
মানসুরা বেগম বলেন, গত ৫ ও ৬ এপ্রিল নরসিংদী জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন এবং ঢাকা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তারা। সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের লাশ যেন দেশে আনা হয় এবং দালালের কঠিন বিচার করা হয়।
শিবপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ঘাশিরদিয়া ওয়ার্ডের সদস্য জুয়েল মেম্বার জানান, হাবিবুল্লাহ বিদেশে মারা গেছেন বলে লোকমুখে শুনেছেন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি।
আইয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক স্বপন চন্দ্র সরদার জানান, এ ব্যাপারে তাঁকে কেউ কিছু জানায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নরস দ হ ব ব ল ল হক
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে নিহত ১৮, নিখোঁজ অনেক
ইন্দোনেশিয়ার মধ্য জাভা প্রদেশের দুটি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এখনো অনুসন্ধান অভিযান চলছে। খবর রয়টার্সের।
দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা জানিয়েছে, গত সপ্তাহে সিলাকাপ শহরে ভূমিধসে সিবেউনিং গ্রামের এক ডজন বাড়ি চাপা পড়ে। ৩ থেকে ৮ মিটার (১০ থেকে ২৫ ফুট) গভীরে লোকজন চাপা পড়ায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা চ্যালেঞ্জিং ছিল।
অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার স্থানীয় বিভাগের প্রধান এম আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, সিলাকাপ ভূমিধসে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত এবং ৭ জন নিখোঁজ রয়েছে।
নিউজ চ্যানেল কমপাসটিভির ফুটেজে দেখানো হয়েছে, সিলাকাপে মাটি খুঁড়তে খননকারীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, মধ্য জাভার বানজারনেগারা অঞ্চলে শনিবার ভূমিধসের পর দুজন নিহত এবং ২৭ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা সোমবার জানিয়েছে। এতে ৩০টিরও বেশি বাড়ি এবং খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটির বর্ষা মৌসুম সেপ্টেম্বরে শুরু হয় এবং এপ্রিল পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। বর্ষা মৌসুম দেশটিতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও বন্যার উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে আসে।
ঢাকা/ফিরোজ