মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন
Published: 12th, May 2025 GMT
মাগুরার আলোচিত সেই ৮ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে এ যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার আলোচিত এ মামলার আবারও যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত ৮ কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি শনাক্তকরণ করা হয়। আজ সোমবার যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল আবারও মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। এর আগে এ মামলায় মোট ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
যুক্তিতর্কে তিনি বলেন, প্রধান আসামি হিটু শেখের ডিএনএ টেস্ট, ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমাণ মিলেছে- সে ওই শিশুকে ধর্ষণ করেছে। এছাড়া সে আদালতে ১৫৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেছে, নিজে ধর্ষণ করেছে। এছাড়া সকল সাক্ষী তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছে।
এদিকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহেল আহম্মেদ মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি এটিকে একটি ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে মামলার পুনঃতদন্ত দাবি করেন। এসময় হিটু শেখ তার পুত্রবধূ সজীবের স্ত্রী হামিদাকে আটকের আহ্বান জানান। হামিদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই ঘটনায় কে জড়িত তা বের হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। যদিও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনার সাথে তিনি একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেন।
প্রসঙ্গত বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয় সেই শিশু। পরে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা সিমএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৩ মার্চ শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় সেই শিশুর মা, শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, ভগ্নীপতি সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও হিটু শেখের স্ত্রী রোকেয়া বেগমের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলায় অভিযুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে ও আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৪ আসামির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। বিচারক প্রধান আসামি হিটু শেখকে ৭ দিন এবং অপর তিন আসামির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে প্রধান আসামি হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস