রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা তাজ উদ্দিন ও জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ৯ আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনাস্থলেই ৯ জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন।

এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এরপর ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিলের শুনানির জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে।

ঢাকা/মামুন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আদি বিশ্বাস ও উৎসবে ফুল-বিহঙ্গের প্রভাব

বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর মানুষের কাছে ফুল অতি পবিত্র। ফলে তাদের দৈনন্দিন উপাসনা ছাড়াও উৎসবের নানা আচারে ফুলের ব্যবহার লক্ষণীয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি মারমা। তারা উদ্‌যাপন করে নববর্ষবরণ অনুষ্ঠান বা ‘সাংগ্রাইং’। এটি তাাদের অন্যতম সামাজিক উৎসব।

কেন এই উৎসব? মূলত সংক্রান্তি শব্দ থেকেই এসেছে ‘সাংগ্রাইং’ শব্দটি। মারমারা বিশ্বাস করে, এ পৃথিবীতে সাংগ্রাং নামে এক ধর্মীয় দেবী মানুষের সৌভাগ্য আর কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসেন। তাই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে দেবী নেমে আসার অর্থাৎ পৃথিবীতে পা রাখার ক্ষণটি থেকেই শুরু হয় সাংগ্রাইং বা নববর্ষ উদ্‌যাপনের উৎসব।

পৃথিবীতে যে কদিন দেবী অবস্থান করবেন, সে কদিন ধরেই চলে উৎসবটি। সাধারণত তিন দিন এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা উদ্‌যাপন করা হয়। সাংগ্রাং দেবীর ফুল পছন্দ। তাই এ উৎসবে ফুলের ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয়। প্রথম দিনটিকে তারা বলে ‘পাইং ছোয়াইক’, যার শাব্দিক অর্থ ‘ফুল তোলা’। এদিন যুবতীরা গোলাপ, জবা, গন্ধরাজ, বেলিসহ নানা ধরনের পাহাড়ি সুগন্ধি ফুল সংগ্রহ করে। রাতে সেসব ফুল সাজিয়ে দল বেঁধে ভোরবেলা সবাই বৌদ্ধবিহারে গমন করে। আগেই বুদ্ধমূর্তির বেদির স্থানটুকু ফুল ও মাল্যে ভরিয়ে দেয়। অতঃপর তারা সেখানে মনের নানা ইচ্ছার কথা জানিয়ে প্রার্থনা করে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি মারমা। তারা উদ্‌যাপন করে নববর্ষবরণ অনুষ্ঠান বা ‘সাংগ্রাইং’। আবার ফুলকে বরণ করতেই সমতলে সাঁওতালরা বাহাপরব বা বাহা উৎসব উদ্‌যাপন করে থাকে। ফুলের আধিক্য পাওয়া যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের বিজু উৎসবেও। উৎসবে মূল বিজুর আগের দিনটিকে তারা বলে ফুল বিজু।

আবার ফুলকে বরণ করতেই সমতলে সাঁওতালরা বাহাপরব বা বাহা উৎসব উদ্‌যাপন করে থাকে। সাধারণত ফাগুন মাসের শেষে বা চৈত্রের শুরুতে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠানটি। সাঁওতালি ভাষায় ‘বাহা’ মানে ‘ফুল বা কুমারী কন্যা’ আর ‘পরব’ মানে ‘অনুষ্ঠান’ বা ‘উৎসব’। অনেকেই এটিকে বসন্ত উৎসব বা পুষ্প উৎসবও বলে থাকে। বসন্তে শাল, শিমুল, পলাশ, মহুয়া, চম্পা ফুল ফোটে চারদিকে। বিচিত্র সাজে সজ্জিত হয় প্রকৃতি। কিন্তু বাহাপরবের আগে সাঁওতাল নারীরা সে ফুল উপভোগ করে না।

এ উৎসবটি তিন দিনের। তবে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানই প্রধান। পরবের এক দিন আগে জাহের থান ও মাঝি থান নানাভাবে সাজানো হয়। নতুন সবুজ পত্রপল্লবে সেজে ওঠা ধরণি হলো পবিত্র কুমারী কন্যার প্রতীক। পরব শুরুর পূজায় দেবতাকে শাল ও মহুয়া ফুল উৎসর্গ করা হয়। অনুষ্ঠানে সাঁওতালরা শাল ফুলকে বরণ করে নেয় নানা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে।

বাহাপরবে শালফুল বরণের পর দুই সাঁওতাল বৃদ্ধার আনন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদি বিশ্বাস ও উৎসবে ফুল-বিহঙ্গের প্রভাব