রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত থাকলেই কেবল প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় যোগ দেবেন। মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শীর্ষ সহযোগী এ কথা বলেছেন।

ইউক্রেনের নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষা করার পর রবিবার পুতিন ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের সাথে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। ট্রাম্প তখন প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে বলেছিলেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক রয়টার্সকে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইস্তাম্বুলে পুতিন ছাড়া অন্য কোনো রাশিয়ান প্রতিনিধির সাথে দেখা করবেন না।”

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক বলেছেন, জেলেনস্কির তুরস্ক সফর দেখিয়েছে যে কিয়েভ আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে যেকোনো আলোচনা যুদ্ধবিরতির পরেই হতে হবে।

কোপেনহেগেন সফরের সময় ইয়েরমাক বলেন, “আমাদের অবস্থান অত্যন্ত নীতিগত এবং অত্যন্ত দৃঢ়।”

পুতিন তুরস্ক ভ্রমণ করবেন কিনা তা মস্কো এখনো জানায়নি।

তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “দীর্ঘমেয়াদী শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপায় অনুসন্ধানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করেন। এই সংঘাতের ফলে উভয় পক্ষের লাখ লাখ সেনা নিহত হয়। ইউরোপের বেশিরভাগ অংশ কিয়েভকে অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য জোট বেধেছে। অন্যদিকে রাশিয়া সমর্থনের জন্য ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার দিকে ঝুঁকেছে।

ট্রাম্প দুই দেশকে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। যুদ্ধ বন্ধে শিগগিরই অগ্রগতির স্পষ্ট লক্ষণ না হলে শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন র প রস ত বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৬ দফার প্রথম ও চতুর্থ দাবি না মানায় বাকৃবিতে রেললাইন অবরোধ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির দুটি দফা না মানায় রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন। প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষায়’ ছয় দফা দাবি নিয়ে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটায় ঢাকায় কৃষিসচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদে’র বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন প্রতিনিধি। এ সময় ছয় দফার প্রথম ও চতুর্থ দফা দাবি না মানার খবরে তাৎক্ষণিক মিছিল শুরু করেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন, ছাত্রীহল সংলগ্ন সড়ক, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে আবার প্রশাসন ভবনের সামনে ফিরে আসে। এরপর মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা সন্ধ্যা সাতটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে অবস্থান নেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষা ও পেশাগত বৈষম্য নিরসনে ৬ দফা দাবির যৌক্তিকতা কৃষিসচিবের কাছে তুলে ধরা হয়। আলোচনা চলাকালীন কৃষিসচিব কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ দাবি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলতে থাকেন। দাবি নিয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত না দিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছেন। বাকি চারটি দাবির সঙ্গে সচিব একমত পোষণ করলেও প্রথম ও চতুর্থ দাবি মানতে তিনি রাজি হননি। এ অবস্থায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সানাউল্লাহ বলেন, তাঁদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথম দফা হচ্ছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এবং অন্যান্য গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে ১০ম গ্রেড (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। চতুর্থ দফায় রয়েছে—কৃষিবিষয়ক ডিপ্লোমাধারীদের জন্য কোনো নতুন বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। সব কটি দাবিই যৌক্তিক। দাবি না মানা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফার অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিএই ও অন্যান্য কৃষিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নবম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদবৃদ্ধি করতে হবে; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া ৯ম গ্রেডে (বিএডিসির কোটা বাতিল) পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না; কৃষিসংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘কৃষিবিদ’ উপাধি ব্যবহার করতে পারবে না এবং এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; কৃষিবিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের (ডিএই) অধীনেই রাখতে হবে।

আন্দোলনকারী কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ফাহাদ হাসান বলেন, আজকের এই কর্মসূচি পূর্বঘোষিত নয়, বরং সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দাবির অগ্রগতি না থাকায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তাঁরা রাজপথে নামেন। দাবি পূরণে গড়িমসি চলতে থাকলে সারা দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে বৃহত্তর ‘কৃষিবিদ ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।

পরে রাত ৯টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এরপর রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ