আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা আটক
Published: 14th, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পুলিশের হেফাজত থেকে আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমানকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। সেসময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ওই ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রদল নেতা জয়নাল ভূঁইয়া ও গ্রেফতার মশিউর রহমান সম্পর্কে সৎভাই।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে দেশব্যাপী চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর আওতায় চাতলপাড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুপ রায় ও যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমানকে চাতলপাড় বাজার এলাকা থেকে পৃথকভাবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তবে মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তারের পরপরই ছাত্রদল নেতা জয়নাল ভূঁইয়া ও তার সহযোগীরা চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির কাছে পুলিশের গতিরোধ করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম আহত হন।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, “ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুপ রায়কে আটক করা হয়েছে। তবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান দৌড়ে পালিয়ে গেছেন।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘কাউকে ছিনিয়ে নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’’ তাহলে ছাত্রদল নেতা জয়নাল ভূঁইয়াকে কেন থানায় নেওয়া হলো, এমন প্রশ্নে কোনো বক্তব্য দেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে আজ দুপুরে পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে তাদের ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গে এমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়টি আমার জানা নেই।”
ঢাকা/পলাশ/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন ত চ তলপ ড় জয়ন ল ভ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কেএমপি কমিশনারকে না সরালে খুলনা অচলের হুঁশিয়ারি
খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ না করা হলে আটটি থানা, উত্তর–দক্ষিণের উপকমিশনারের কার্যালয় ও সদর দপ্তর ঘেরাও করে খুলনা অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক ও খুলনা জেলার সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম (বাপ্পি)।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম খুলনা প্রেসক্লাবে আসেন। খবর পেয়ে কেএমপির সদর দপ্তরের সামনে কর্মসূচিতে থাকা আন্দোলনকারীদের সবাই স্যার ইকবাল রোডে এসে প্রেসক্লাবের প্রধান ফটক আটকে অবস্থান নেন। পরে প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে রাত পৌনে আটটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রেস সচিব। রাত আটটা পাঁচ মিনিটে বৈঠক শেষে তিনি প্রেসক্লাব থেকে বের হয়ে যান।
বৈঠক শেষে রাত পৌনে ৯টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাব চত্বরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাজিদুল ইসলাম (বাপ্পি) বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমাদের আন্দোলন চলছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি কেউ কোনো সাড়া দেননি। আমরা এটা প্রেস সচিবকে জানাতে এসেছিলাম। জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে যাঁদের খুলনায় বড় বড় জায়গায় বসানো হয়েছে, তাঁদের কি আমাদের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই? আমরা এটা জানাতে এসেছিলাম। আমরা প্রেস সচিব মহোদয়কে বলেছি আপনি প্রধান উপদেষ্টাকে অবগত করুন, খুলনার মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। খুলনা আজ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, আওয়ামী লীগার এবং পুলিশ লীগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্কতাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তাঁদের শেল্টার দিচ্ছেন পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার।’
সাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেস সচিব মহোদয় আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমাদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি আগামীকালের মধ্যে এগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে জানাবেন এবং আগামীকালের মধ্যে একটা রেজাল্ট দেবেন। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা আমরা পর্যবেক্ষণে রাখতে চাই। এই সময়ের মধ্যে কেএমপি কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়া না হলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। ডিসি সাউথ, ডিসি নর্থ, কেএমপির আটটি থানা, কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করা হবে, খুলনা অচল হবে।’
সংবাদ ব্রিফিং শেষে আন্দোলনকারীরা সবাই চলে যান।
এর আগে তৃতীয় দিনের মতো আজ শনিবার বেলা সাড়ে তিনটা থেকে আন্দোলনকারীরা কেএমপির সদর দপ্তরের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। কর্মসূচিতে খুলনার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে আটকে মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তবে পুলিশ পরে তাঁকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা দুই দিন কেএমপির সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারসহ কয়েকজন কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপেই সুকান্তকে ছাড়া হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, এসআই সুকান্তর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনা সদর থানায় একটি মামলা হয়, যেখানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া বিএনপির খুলনা মহানগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ আরও দুটি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসআই সুকান্তকে বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।