ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পুলিশের হেফাজত থেকে আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমানকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। সেসময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ওই ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে। 

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রদল নেতা জয়নাল ভূঁইয়া ও গ্রেফতার মশিউর রহমান সম্পর্কে সৎভাই।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে দেশব্যাপী চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর আওতায় চাতলপাড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুপ রায় ও যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমানকে চাতলপাড় বাজার এলাকা থেকে পৃথকভাবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তবে মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তারের পরপরই ছাত্রদল নেতা জয়নাল ভূঁইয়া ও তার সহযোগীরা চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির কাছে পুলিশের গতিরোধ করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম আহত হন।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

খায়রুল আলম বলেন, “আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে গ্রেপ্তারের সময় স্থানীয় ছাত্রদলের এক নেতা পুলিশের হাত থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। শুনেছি ছাত্রদল নেতা ও আসামি সম্পর্কে সৎভাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, “ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুপ রায়কে আটক করা হয়েছে। তবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান দৌড়ে পালিয়ে গেছেন।” 

তিনি আরও বলেন, ‘‘কাউকে ছিনিয়ে নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’’ তাহলে ছাত্রদল নেতা জয়নাল ভূঁইয়াকে কেন থানায় নেওয়া হলো, এমন প্রশ্নে কোনো বক্তব্য দেননি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে আজ দুপুরে পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে তাদের ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গে এমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়টি আমার জানা নেই।”

ঢাকা/পলাশ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন ত চ তলপ ড় জয়ন ল ভ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের

সিলেটে পুলিশের হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।

সালমা বেগম বলেন, আকবর হোসেন প্রথমেই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন পুলিশ অনেক কষ্টে কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। জামিন পেয়েই যে পালানোর চেষ্টা করবেন, সেটা স্বাভাবিক ছিল।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। পরে মহানগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। এরপর হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিন ও আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত রোববার আকবর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এরপর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করে। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আকবর হোসেনকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

সালমা বেগম বলেন, হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান শুরু থেকেই পলাতক। কারাগারে থাকা পাঁচজনের মধ্যে চারজনই জামিনে মুক্ত আছেন। যার কারণে পুরো পরিবার ও মামলার সাক্ষীরা শঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার বিচারকাজ প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তিনি ন্যায়বিচার পেতে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আবেদন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সহসভাপতি আমির হোসেন, দুর্নীতি মুক্তকরণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন, সিলেট যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আফিকুর রহমান, আখালিয়ার মুরব্বি ছানাউল্লাহ ছানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা আকবর হোসেনকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল ফজল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার তাঁর জামিন স্থগিত হয়েছে। তাঁকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণ না করলে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তারাগঞ্জের ২ এসআই ও ৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার
  • বন্দরে নারী মাদক কারবারিসহ গ্রেপ্তার ২, ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার
  • জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের
  • নারায়ণঞ্জ জেলা রোভার স্কাউট’র দিনব্যাপী কর্মশালা 
  • বন্দরে ২ নারীসহ ৫ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
  • নারায়ণগঞ্জে জাতীয় আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন
  • চট্টগ্রামে এসআইকে কুপিয়ে আহত, আটক ১৮
  • চট্টগ্রামে এসআইকে ছুরিকাঘাত করে পালাল আসামি, আটক ১৬
  • শিবচরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বিএনপির ওপর হামলা, আহত ২৫
  • সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবরের জামিন