পাকিস্তান সফর নিয়ে ক্রিকেটারদের দুশ্চিন্তা
Published: 14th, May 2025 GMT
অস্ত্রবিরতি ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের স্বস্তি দিয়েছে। ১৭ মে ফের মাঠে গড়াচ্ছে আইপিএল ও পিএসএলের খেলা। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্টে ফিরতে বলা হয়েছে। তবে বিদেশিদের কেউ ফিরবেন, কেউ হয়তো ফিরবেন না। কেউ না এলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুটির উন্মাদনা কমবে না; বরং পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের কাছে মাঠে ফেরার আনন্দ হবে ঈদের খুশির মতোই। এই খুশি দ্বিগুণ হবে দেশটিতে বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলতে গেলে, নিরাপত্তার কারণে যে সিদ্ধান্ত অনিশ্চয়তার সুতায় ঝুলছে।
কারণ পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন দেশের ক্রিকেটাররা। গতকাল টি২০ দলের অধিকাংশ ক্রিকেটার ফোনে জানান, বিসিবি থেকে পাকিস্তান সফরে যেতে বলা হলে নিজেদের আপত্তির কথা তুলে ধরবেন। আসলে ভারত-পাকিস্তানের সামরিক হামলা বন্ধ হলেও ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে। যেটা খেলোয়াড়দের নিরুৎসাহী করছে পাকিস্তান খেলতে যেতে।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) নতুন সফরসূচি পাঠিয়েছে। ২৫ মে পিএসএলের ফাইনাল শেষ করে ২৭ মে থেকে ৫ জুন পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের খসড়া সূচি বিসিবির হাতে থাকলেও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। ভারত সীমান্তের কাছের ভেন্যু ফয়সালাবাদ ও লাহোরকে বহাল রেখেছে পিসিবি।
গতকাল লাহোরের একজন সাংবাদিক জানান, ২৭ ও ২৮ মে ফয়সালাবাদে দুটি ম্যাচ হবে। বাকি তিন ম্যাচ লাহোরে। বিসিবি রাজি থাকলে ৩০ মে থেকে ৩ জুন বাকি তিন ম্যাচ হতে পারে। মূলত ঈদ সামনে থাকায় বিকল্প পরিকল্পনা। পিসিবি সফর আয়োজনে উদ্যোগী হলেও বাংলাদেশ দলের খেলতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। কারণ ক্রিকেটারদের উদ্বেগের বিষয়টি উপেক্ষা করার মতো নয়।
একজন ক্রিকেটার নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘বিসিবি আমাদের এখনও কিছু বলেনি। বোর্ড সফর করার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা আপত্তি জানাব। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে আমরা পাকিস্তানে যেতে চাই না।'
মিডলঅর্ডারের একজন ব্যাটারের মতে, “পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারদের মতামত নিয়ে হলে ভালো। আমরা যেতে চাই কিনা বোর্ড নিশ্চয়ই, তা জানতে চাইবে। সত্যিটা হলো এ মুহূর্তে পাকিস্তান সফর নিরাপদ মনে করি না।'
যদিও দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে টি২০ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেছেন, বিসিবি চাইলে পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি তারা। সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি বোর্ডের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় চাপে পড়ে গেছেন কর্মকর্তারা। বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান বলেন, 'কাল মিটিং করে পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমার মত হলো, সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছেড়ে দিলে ভালো। নিরাপত্তার বিষয়টি রাষ্ট্র ভালো বুঝবে।'
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা ১০ মে বলেছিলেন, 'এ মুহূর্তে পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া নিরাপদ না।' ওই দিনই সন্ধ্যায় ভারত-পাকিস্তান অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেওয়ায় বিসিবিকে পিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেন উপদেষ্টা।
গতকাল ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি মাহফুজুল আলম বলেন, “পাকিস্তানে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার সাপেক্ষে বিসিবিকে সফরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া আছে। তবে তারা রাষ্ট্রের কাছে সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখবে। বিসিবি থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়নি।'
পাকিস্তান সফরের টেনশন মাথায় নিয়ে আজ সকাল ১০টায় আরব আমিরাত রওনা হবেন টি২০ দলের ক্রিকেটাররা। আমিরাতের বিপক্ষে ১৭ ও ১৯ মে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলবেন তারা। এই সিরিজ চলাকালেই পাকিস্তান সফরের ভবিষ্যৎ জেনে যাবেন লিটনরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ক স ত ন সফর র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সিরিজের আগে নতুন কোচ নিয়োগ দিল পাকিস্তান
চলতি মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ শুরুর কথা আছে পাকিস্তানের। ওই সিরিজ অনিশ্চিত হলেও সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য নতুন কোচ নিয়োগ দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। পাকিস্তানের পরবর্তী সাদা বলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন নিউজিল্যান্ডকে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলানো কোচ মাইক হেসন।
সাবেক কিউই ক্রিকেটার ও কোচ হেসন বর্তমানে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দল ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৭ মে থেকে পিএসএল শুরুর নতুন সূচি দেওয়া হয়েছে। ২৬ মে শেষ হবে পিএসএল। এরপরই পাকিস্তান ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নেবেন তিনি।
পাকিস্তানের হেড কোচ হিসেবে হেসনকে নিয়োগ দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি, ‘পাকিস্তান পুরুষ ক্রিকেট দলের সাদা বলের হেড কোচ হিসেবে মাইক হেসনের নাম ঘোষণা করতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। মাইক সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অফুরন্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজির হচ্ছেন। সাদা বলে পাকিস্তানের ভবিষ্যত কাঠামো দাঁড় করাতে আমরা তার অভিজ্ঞতার দিকে তাকিয়ে আছি।’
এর আগে সাদা বলের ক্রিকেটে পাকিস্তানের অন্তবর্তীকালীন কোচ ছিলেন আকিভ জাভেদ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাজে ফলাফলের কারণে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে পাকিস্তানের সাদা বলের ক্রিকেটের কোচ ছিলেন গ্যারি কারস্টেন।
হেসন এর আগে ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের হেড কোচ হন। তার অধীনে ২০১৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। তার গড়ে দেওয়া দল ও খেলানোর ধরনে ভর করে পরের বছরও বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে কিউইরা। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের ডিরেক্টর হিসেবেও চার বছর কাজ করেছেন তিনি।