প্রচণ্ড গরমে নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১১০০ থেকে ১২০০ রোগী সেবা নিতে আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে ৯০ শতাংশই স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়ায় আক্রান্ত। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এ রোগের হার অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।
লক্ষণ কী, কখন বেশি হয়
স্ক্যাবিস হলে সারা শরীর চুলকায়। আঙুলের ফাঁকে, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ, হাতের তালু, কবজি, বগল, নাভি ও কনুইয়ে চুলকানি শুরু হয়। পরে আরও বাড়তে থাকে। চুলকানি বেশি হয় রাতেই। ত্বকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ওঠে, যা খুব চুলকায় এবং তা থেকে পানির মতো তরল পদার্থ বের হয়। খোসপাঁচড়া সাধারণত বেশি হয় গরমকালে।
অত্যন্ত ছোঁয়াচে
খোসপাঁচড়া অত্যন্ত ছোঁয়াচে একটি রোগ। পরিবারের একজনের হলে অন্য সদস্যদের মধ্যেও ছড়াতে পারে। তাই রোগীসহ পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত কাপড়, গামছা, তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশ ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনে এ রোগ ছড়াতে পারে। তাই এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত কাপড়চোপড় পরিবারের অন্যদের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসা নেওয়ার পর কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি ভালো করে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে বা আয়রন করে নিতে হবে।
চিকিৎসা
নিয়ম মেনে চিকিৎসা নিলে দুই সপ্তাহের মধ্যেই স্ক্যাবিস সেরে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক মলম ব্যবহার করতে হবে। চুলকানির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন সেবন করা যাবে। দ্বিতীয় দফায়ও এই রোগ হতে পারে। সাধারণত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা চিকিৎসা না নিলে বা সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকলে দ্বিতীয়বার আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে।
শিশুদের যেহেতু বেশি হয়, তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। গরমকালে শিশুদের কুসুম গরম পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। থাকতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
ভ্যাপসা গরমে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই হাসপাতালে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাই এ নিয়ে সচেতন হতে হবে।
অধ্যাপক ডা.
ইশরাত ভুইয়া: বিভাগীয় প্রধান, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীর বিকাশে শিক্ষকের বিকল্প নেই : উপদেষ্টা
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, ‘‘ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক বাবা-মায়ের চেয়েও ঘনিষ্ঠ হওয়া উচিত। একজন শিক্ষার্থীর বিকাশে শিক্ষকের বিকল্প নেই।’’
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘‘শিশুরা কতটুকু পড়াশোনা করছে এবং তারা স্কুল থেকে কতটা সুবিধা পাচ্ছে— তা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া যায় না, বরং সামগ্রিক আচরণগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
কুয়েটের শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ
ইবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে থানায় সোপর্দ
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমাদের সন্তানরা আক্ষরিক অর্থে বেশি শিক্ষিত হচ্ছে, কিন্তু তারা যদি ভাবার্থ অনুধাবন না করতে পারে, তবে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হচ্ছে না। অনেক সময় দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থী লিখতে পারলেও সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারে না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন শিক্ষক নেতৃত্বের প্রতীক। একটি প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের মান ও পরিবেশ তার ওপর নির্ভর করে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষার বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে হবে। সব ধরনের শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে, তাহলেই আমাদের সন্তানেরা পূর্ণ বিকশিত হবে।’’
উপদেষ্টা আরো উল্লেখ করেন, ‘‘একজন শিক্ষার্থীকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে একজন শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। একজন প্রধান শিক্ষক পুরো প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করেন এবং তিনিই একটি স্কুলকে আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারেন।’’
সভায় সভাপতিত্ব করেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন। উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, নাটোর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন।
ঢাকা/আরিফুল/বকুল