৬০ বছর বয়স হলেই পেনশনের জমার ৩০% টাকা তোলা যাবে
Published: 14th, May 2025 GMT
এখন থেকে পেনশন স্কিমে থাকা একজন চাঁদাদাতা ৬০ বছর বয়স হলেই জমাকৃত অর্থের ৩০ শতাংশ টাকা এককালীন তুলে নিতে পারবেন। এত দিন এককালীন টাকা তোলার সুযোগ ছিল না। আজ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভা অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পেনশন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ৬০ বছর বয়স হলেই এই পেনশন স্কিমে চাঁদাদাতা ওই ব্যক্তি তাঁর জমা করা টাকার ৩০ শতাংশ তুলে নিতে পারবেন। নিয়ম অনুসারে বাকি সুবিধাও বজায় থাকবে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেউ এককালীন ৩০ শতাংশ টাকা তুলে নিতে পারবেন। কেউ যদি এককালীন এই টাকা নিতে না চান, তবে মাসিক পেনশনের পরিমাণ সংগত কারণে বেশি হবে।’
আজকের সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এক, একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাঁকে তাঁর মোট জমাকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে প্রদানের সুযোগ রাখা হবে। দুই, প্রবাস ও প্রগতি পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী অনেকের মাসিক আয় তুলনামূলকভাবে অনেক কম হওয়ায় এ দুটি স্কিমে সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার দুই হাজার টাকার পরিবর্তে এক হাজার টাকা নির্ধারণ। এ ছাড়া প্রগতি পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি অংশের মাসিক আয় বেসরকারি খাতের কর্মকর্তাদের গড় মাসিক আয়ের তুলনায় বেশি হওয়ায় মাসিক সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা। তিন, আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা চুক্তির আওতায় নিয়োজিত সেবাকর্মীদের প্রগতি পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা। চার, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসএসএ) সদস্যপদ গ্রহণের সিদ্ধান্ত। পাঁচ, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর বিষয়টি পরীক্ষা করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প নশন স ক ম একক ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
আমিনা বেওয়ার জীবন লড়াইয়ের, সুখের সঙ্গে তাঁর হয়নিকো দেখা
কাঠফাটা রোদে গ্রামের মেঠোপথ ধরে হেঁটে যাচ্ছেন একজন বৃদ্ধা। মাথায় ডালি। কাছে গিয়ে দেখা গেল, ডালিভর্তি বাদাম। গ্রাম ঘুরে সেগুলো বিক্রি করছেন তিনি। নাম আমিনা বেওয়া। বয়স ৭০ পেরিয়েছে।
রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের বামনপাড়া গ্রামে গত রোববার দুপুরে আমিনা বেওয়ার সঙ্গে দেখা হয়। বামনপাড়ার পাশে মাস্টারপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। দুই গ্রামের দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার।
চানাচুর, বাদাম, বুটসহ শিশুদের বিভিন্ন খাবার ফেরি করে সাধারণত পুরুষেরাই বিক্রি করেন। নারী বিক্রেতা দেখা যায় কম। সেই ব্যতিক্রমী একজন আমিনা বেওয়া। কত দিন ধরে এ কাজ করছেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমসে কম ২০ বছর তো হবে। তেল, সাবান, লবণ, মসলাসহ নানা জিনিস ফেরি করে বিক্রি করেন। আগে ছেলে ফেরদৌসকে নিয়ে যেতেন। এখন সে ঢাকায় থাকে।
আগে ছেলের সঙ্গে ভারে করে মালামাল নিতেন আমিনা বেওয়া। এখন বয়স হয়েছে, তাই ডালি নেন। ডালিতে বেশি মালপত্র বহন করা সম্ভব হয় না। তাই বিক্রিও কম হয়।
দুপুরের প্রচণ্ড রোদে মাঠে কাজ করছিলেন অনেকে। কেউ ছাতা, কেউ টুপি দিয়ে মাথা ঢেকেছেন। কেউ কেউ গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তেমনি এক গাছের ছায়ায় বসে আমিনার সঙ্গে কথা হয়। বৃদ্ধ বয়সে রোদে কেন বের হন—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘চলি ফিরি খাওয়া নাগে।’ অর্থাৎ যত দিন চলতে পারবেন, তত দিন কাজ করে খেতে চান।
আমিনা জানান, বদরগঞ্জ হাট থেকে কারও মাধ্যমে বা নিজেই কাঁচা বাদাম কিনে আনেন। আবার কখনো মনিরপুর মিলেরপাড়ার প্রদীপ কুমারের হোটেল থেকে ২০-৩০ পিস শিঙাড়া এনে বিক্রি করেন।
যে বয়সে সন্তানদের সেবা পাওয়ার কথা, সে বয়সে আমিনা পরিশ্রম করছেন। কোনো আক্ষেপ আছে কি না, জানতে চাইলে উল্টো সন্তানদের জন্য কিছু করতে না পারার দুঃখবোধ তাঁর কণ্ঠে