জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান: উপদেষ্টা মাহফুজের মাথায় বোতল নিক্ষেপ
Published: 14th, May 2025 GMT
তিন দাবিতে লং মার্চ কর্মসূচি নিয়ে সকালে রাস্তায় মেনে গভীর রাত অবধি রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থান নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় বোতল নিক্ষেপ করা হয়।
রাত ১০টার দিকে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে হাজির হন উপদেষ্টা মাহফুজ। তার প্রায় ১৫ মিনিট পর বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন তিনি।
মাহফুজ আলম মোটের ওপর মিনিট দুয়েক কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে মাহফুজ বলেন, “জবি শিক্ষার্থীদের কথা এই সরকার শুনবে। তাদের সংকট নিরসনে আমাদের বারবার বসতে হবে।”
আরো পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাবিপ্রবিতে ছাত্রদলের কর্মসূচি
রাজশাহী কলেজে হোস্টেল ভাড়া কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
“এটা এক দিনে সমাধানযোগ্য বিষয় নয়, আমাদের বারবার বসতে হবে। রিলেভেন্ট মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে। বাজেটসহ অন্যান্য দিক থেকেও সমস্যাগুলোর সমাধানে আমরা কাজ করব”, যোগ করেন মাহফুজ।
জবি শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি বলেন, “আপনারা ন্যায্য দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এ বিষয়ে আগামীকাল (১৫ মে) শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।”
পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে মাহফুজ বলেন, “আজকে কিছু পুলিশ সদস্য হয়তো উসকানি..।”
তার বক্তব্য মিনিট দুয়েক গড়াতেই শিক্ষার্থীরা মাহফুজের উদ্দেশে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান ধরেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে কেউ একজন মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে একটি প্লাস্টিকের পানির বোতল ছুড়ে মারেন, যা সরাসরি তার মাথায় গিয়ে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যথার অনুভূতি নিয়ে মাহফুজ আলমকে মাথায় হাত রাখতে দেখা যায়।
যদিও কে বা কারা বোতল ছুড়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে সেটি বোঝা যায়নি। তবে ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে, মাহফুজ আলমের মাথায় পানির বোতল এসে পড়ছে।
ঘটনার পর উপদেষ্টা মাহফুজ বক্তব্য বন্ধ করে দেন এবং আর কথা বললেন না জানিয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান।
উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জবি শিক্ষার্থীরা বলছেন, আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করার কথা তাদের।
এরপর আর বক্তব্য দেন এগোননি মাহফুজ আলম। জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান স্থল ছেড়ে চলে যান। ফলে সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত বা ঘোষণা অথবা বিক্ষোভকারীদের পক্ষে দাঁড়ানোর পরিষ্কার বার্তা দিতে পারেননি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠন মাহফুজ।
পূর্ণাঙ্গ আবাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঘোষিত বাজেট কাটাছেড়া না করা এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়ে বুধবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পুরান ঢাকার সদরঘাটে জবি ক্যাম্পাস থেকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
লং মার্চ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাওয়ার পথে রমনার মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মোড়ে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে এক পর্যায়ে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে।
রাত পৌনে ১২টায় এই খবর লেখা পর্যন্ত জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ের রাস্তায় অবস্থান করছেন। তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার বিষয়ে আলাপ করছিলেন। তবে কী ধরনের কর্মসূচি, সে বিষয়ে জানা যায়নি।
বুধবার (১৪ মে) কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান জবি শিক্ষার্থীরা। তবে এখনো সরকার বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য কোনো বার্তা আসেনি।
বুধবার বিকেলেই আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনাতে যান জবি উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম। কিছুক্ষণ পর সেখানে যোগ দেন জবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমিন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আলোচনায় অংশ নিতে যান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইস উদ্দিন। আলোচনা শেষ হলেও সরকারের কাছ থেকে তারা কোনো বার্তা পাননি।
জবির এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, “আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আন্দোলন করি, আমাদের ওপর লাঠিচার্জ হয়। অথচ ঢাবি থেকে কেউ আসলে তাদের ঠান্ডা পানি দেওয়া হয়। আমাদের দাবি যৌক্তিক— এটি মানতেই হবে।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, “আমরা মোড়ে আসা মাত্রই অতর্কিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের ওপর গুলি ও টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়েছে। কিন্তু এখনো প্রশাসনের কোনো বার্তা পাইনি।”
আরেক শিক্ষার্থী তৈমুর মবিন বলেন, “আগামীকাল থেকে পুরান ঢাকার সব মোড় ব্লক করে দেওয়া হবে। সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমাদের দাবি মানতেই হবে।”
তবে তৈমুরের বক্তব্যই কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি নয় বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পদযাত্রায় অংশ নিয়ে যমুনার দিকে রওনা হন। গুলিস্তান মাজার গেট ও মৎস্য ভবনে পুলিশের বাধা পেরিয়ে তারা কাকরাইল মসজিদ মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ অতর্কিত টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছোড়ে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চললেও সরকারের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস বা বার্তা না পেয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে রাজধানীজুড়ে।
ঢাকা/লিমন/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নিভৃতচারী কৃষকের আর্তনাদ কি আমরা শুনছি
কৃষি এবং কৃষকই এ দেশের প্রাণ—এই ধ্রুব সত্যটি নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু বেদনাদায়ক বাস্তবতা হলো, মধ্যস্বত্বভোগী ও কপট ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষকের স্বার্থ বরাবরই উপেক্ষিত। নীতিনির্ধারক ও মূলধারার রাজনীতিবিদদের নীরবতা এবং কৃষকের সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি জনগুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যকে ‘ট্রল’ করার মতো দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা আমাদের জাতীয় সংবেদনশীলতার অভাবকেই প্রকটভাবে তুলে ধরে।
করোনাকালীন ভয়াবহ সংকটে কৃষি যেভাবে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে অর্থনীতিকে রক্ষা করেছে, তা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। অথচ এত কমিশন গঠিত হলেও, কৃষি কমিশন গঠন করা হয়নি। এর মূল কারণ সম্ভবত নিভৃতে কাজ করে যাওয়া কৃষক বা কৃষিশ্রমিকের মূল্য এই সমাজে অনেক সস্তা।
বর্তমানে কৃষি খাত নিয়ে যত আলোচনা—তা সবই যেন নিরাপদ কৃষি, বাণিজ্যিক কৃষি, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ, ভ্যালু চেইন ও উৎপাদন বৃদ্ধিকেন্দ্রিক। প্রধান স্টেকহোল্ডার কৃষক ও তাঁর জীবন-জীবিকার স্বার্থ প্রায়শই থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। অন্যান্য পেশাজীবীর মতো কৃষকের কোনো সক্রিয় সংগঠন নেই। চাষাবাদ ফেলে ঢাকা শহরে দাবি আদায়ের আন্দোলনে নামাও তাঁদের পক্ষে অসম্ভব, কারণ তাতে তাঁদের পেটে ভাত জুটবে না।
অথচ কৃষকেরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই নয়, শারীরিকভাবেও চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পেশায় কৃষক! মাস্ক, গ্লাভস বা রাবারের জুতা চোখে না দেখা, ছেঁড়া গামছা মুখে পেঁচিয়ে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করা ভূমিহীন মানুষটা আমাদের কাছে হয়তো ‘কৃষিশ্রমিক’, ‘কৃষক’ নন; কিন্তু খাদ্য উৎপাদনচক্রে তাঁর অবদান সবচেয়ে মৌলিক এবং তাঁর স্বাস্থ্যঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি।
সমাজের চোখে ‘কৃষক’ বলতে যখন বিঘার পর বিঘা জমির মালিক, শিক্ষিত বাণিজ্যিক উদ্যোক্তাদের বোঝানো হচ্ছে, তখন প্রান্তিক, নিরক্ষর মানুষগুলোর অস্তিত্ব ও সংগ্রাম প্রায় অস্বীকৃত থেকে যাচ্ছে।
আবার কৃষক ও কৃষির সমস্যা শুধু অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত নয়, এর শিকড় প্রোথিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাতেও। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাণিজ্যিক কৃষিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমাদের শিক্ষায় কৃষির নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো প্রায় উপেক্ষিত।
কৃষকের নিবিড় জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রায়শই অন্ধকারে থাকছে। গান গাইতে গাইতে ধান কাটা, ধান লাগানো বা নবান্ন উৎসব—এসব প্রথা ও রীতিনীতি কেবল সংস্কৃতি নয়, কৃষকের জীবনের আনন্দ, দুঃখ ও শ্রমের প্রকাশ। পাঠ্যক্রমে এসবের অনুপস্থিতি কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে নাগরিকসচেতনতা বৃদ্ধির পথে এক বড় বাধা।আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃষির উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা বা গবেষণা নেই। কীভাবে নারীর হাত দিয়ে কৃষির সূচনা হয়েছিল—ফসলের বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বপন ও পরিচর্যার প্রথম ধাপগুলোয় নারীর যে ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিল, সেই গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক দিকগুলো পড়ানো হয় না বললেই চলে।
বাংলার কৃষিকাজে লোকায়ত জ্ঞানের অন্যতম ধারক খনার বচন প্রাসঙ্গিক হলেও আবহাওয়া, ফসল রোপণের সময়, মাটির গুণাগুণ–সম্পর্কিত হাজার বছরের পরীক্ষিত প্রথাগত প্রজ্ঞা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে স্থান পায় না। এর বদলে শুধু স্থান পায় আধুনিক প্রযুক্তি ও বাণিজ্যিকীকরণের তত্ত্ব।
ধান লাগানো থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ, বীজ সংরক্ষণ, ফসল মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের মতো অনেক ধাপে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ বাংলাদেশের কৃষিতে অপরিহার্য অনুষঙ্গ। বিভিন্ন গবেষণায় এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে। অথচ এই বিশাল শ্রমশক্তি ও তাঁদের সমস্যা নিয়ে মূলধারার একাডেমিক আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যদিও সস্তা শ্রম আর অধিকার বঞ্চনার মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কৃষিতে নারীর উপস্থিতি বাড়ছে।
কৃষকের নিবিড় জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রায়শই অন্ধকারে থাকছে। গান গাইতে গাইতে ধান কাটা, ধান লাগানো বা নবান্ন উৎসব—এসব প্রথা ও রীতিনীতি কেবল সংস্কৃতি নয়, কৃষকের জীবনের আনন্দ, দুঃখ ও শ্রমের প্রকাশ। পাঠ্যক্রমে এসবের অনুপস্থিতি কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে নাগরিকসচেতনতা বৃদ্ধির পথে এক বড় বাধা।
কৃষির এই বহুমুখী সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে শুধু যান্ত্রিকীকরণ আর উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিলেই চলবে না। প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী নীতিগত পরিবর্তন।
যা করা যেতে পারে:
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ: সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ফসল কেনার সরকারি উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত ও মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য কমাতে শক্তিশালী ‘ভ্যালু চেইন’ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ: প্রান্তিক কৃষক ও কৃষিশ্রমিকদের জন্য বিনা মূল্যে মানসম্পন্ন কীটনাশকপ্রতিরোধী মাস্ক, গ্লাভস এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ করা।
শিক্ষায় কৃষির সাংস্কৃতিক পাঠ অন্তর্ভুক্তিকরণ: উচ্চশিক্ষা ও স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে কৃষির উৎপত্তি, নৃতত্ত্ব, নারীর ভূমিকা, লোকায়ত জ্ঞান (যেমন খনার বচন) এবং কৃষকের জীবন ও সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কৃষিশ্রমিকের স্বীকৃতি: নারীর কৃষিভিত্তিক শ্রমের স্বীকৃতি প্রদান করা। কৃষিশ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী ও স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় আলাদা বরাদ্দ রাখা।
সর্বোপরি নীতিগত সদিচ্ছা এবং কৃষকের ন্যায্য অধিকার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিই পারে আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার মূল ভিত্তি—নিভৃতচারী কৃষককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি দিতে। কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে প্রত্যেক নাগরিকের সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
মো. জুবায়ের ইবনে কামাল অফিসার, জনতা ব্যাংক পিএলসি। প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়