ফারাক্কা বাঁধ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে: মির্জা ফখরুল
Published: 15th, May 2025 GMT
ফারাক্কা বাঁধ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ভারতে গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু করা হয়। যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ঐতিহাসিক ‘ফারাক্কা দিবস’ উপলক্ষ্যে বুধবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ফারাক্কা বাঁধের কারণে ওই এলাকায় পানিসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। জীববৈচিত্র ও পরিবেশগত মানকে বিবেচনা না করে এবং প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে ভারতকে কয়েক দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। কিন্তু সেই বাঁধ অব্যাহতভাবে এখনও পর্যন্ত চালু থাকায় সেটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ফারাক্কা দিবস আমাদের জাতীয় আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যময় দিন। আজ থেকে ৪৯ বছর আগে অবিসংবাদিত মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সারাদেশ থেকে লাখো জনতা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর পানি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল লংমার্চে অংশ নেয়।
তৎকালীন আওয়ামী সরকারের কারণে এ দেশের জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত। এ বঞ্চনা ও দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্দশার আশঙ্কায় বিজ্ঞ ও দূরদর্শী মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল করে ভারত সরকারের কাছে প্রতিবাদ করেন এবং বিষয়টি বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজরে আনেন। তখন থেকে ব্যাপক মানববিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হতে থাকে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি মনে করি, আজও ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণে নদীর ধারাকে বাধাগ্রস্ত করে একতরফা নিজেদের অনুকূলে পানি প্রত্যাহার বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ নিষ্ফলা ঊষর ভূমি হয়ে উঠার আলামত ইতোমধ্যেই ফুটে উঠেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
পশুর হাটে ছিনতাই, চাঁদাবাজি প্রতিরোধে পুলিশকে তৎপর থাকতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ঈদুল আজহায় পশুর হাটে চাঁদাবাজি ও জাল নোট প্রতিরোধে পুলিশকে তৎপর থাকতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মিলনায়তনে এপ্রিল মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এই কথা বলেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে ওই সভা চলে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত।
সভা সূত্র জানায়, ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ঈদুল আজহার (কোরবানি) বেশি দিন বাকি নেই। কোরবানির পশুর হাটে ছিনতাই, চাঁদাবাজি প্রতিরোধে পুলিশকে তৎপর থাকতে হবে। এ সময় পশুর হাটে কেউ যেন জাল নোট ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশের কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার পুলিশ সদস্যদের বলেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ও নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা ও তাঁদের সেবা দিতে সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। পুলিশ আইন ও বিধি দিয়ে পরিচালিত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পোশাকে, উপস্থাপনায়, সেবায় এবং দৃঢ়তায় নিজেদের অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরতে হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকার অপেশাদার আচরণ ও শিথিলতা প্রদর্শন করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। মানুষের সঙ্গে আচরণে বিনয়ী হতে হবে।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, প্রতিটি থানায় আলাদা আলাদা দল গঠন করে তদন্ত, মাদক, চোরাই মাল উদ্ধারে কাজ করতে হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি তৎপর হতে হবে এবং মামলা নিষ্পত্তির হার আরও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে ডিএমপির প্রত্যেক সদস্য দৃঢ় মনোবল নিয়ে পেশাদারত্বের সঙ্গে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ বলেন, জনগণ যেটা চায় তা পূরণে সচেষ্ট হতে হবে। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ভাড়াটেদের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।
সভায় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মো. ফারুক হোসেন এপ্রিল মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলাসংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। এ সময় ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।
মাসিক অপরাধ সভায় এপ্রিল মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মাসুদ করিম; অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলীসহ যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপপুলিশ কমিশনার, ডিএমপির ৫০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) থেকে অপরাধ বিভাগের উপকমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।