বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি ও সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, “আমরা অতীতে যেভাবে সংকটে বিজিএমইএকে নেতৃত্ব দিয়েছি, ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এই সংগঠন কেবল পোশাক রপ্তানিকারকদের নয়, এটি দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই সংগঠনটির নেতৃত্বে দায়িত্ববান, পরীক্ষিত ও কার্যকর লোকের প্রয়োজন।”

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে সম্মিলিত পরিষদ আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার ও চৈতী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফারুক হাসান।

আরো পড়ুন:

দুই ব্রোকারেজ হাউজ পেল ডিএসইর ফিক্স সার্টিফিকেশন

পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্প্যারো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুস্তাজিরুল শোভন ইসলাম।

কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, “আমরা বারবার প্রমাণ করেছি-সংকটে আমরা সামনে থাকি। আমরা কথা নয়, কাজ দিয়ে নেতৃত্ব দেই। সম্মিলিত পরিষদ গত ২০ বছর ধরে বিজিএমইএর আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।”

প্যানেল লিডার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, “বিশ্বব্যাপী চরম প্রতিযোগিতার এই সময়ে প্রয়োজন অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ও গভীর বোঝাপড়ার। আমরা বিজিএমইএকে এমন এক আধুনিক ও সেবাকেন্দ্রিক সংগঠনে রূপ দিতে চাই, যেখানে সদস্যদের প্রয়োজনই হবে নীতি-নির্ধারণের মূলভিত্তি।”

তিনি আরো জানান, ২১ মে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে।

মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, “আমরা গত দুই দশক ধরে বিজিএমইএর সদস্যদের স্বার্থে মাঠে থেকেছি।এবারও আমাদের পরিকল্পনায় থাকবে প্রযুক্তি-নির্ভর বিজিএমইএ, স্মার্ট সার্ভিস, নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, এসএমই কারখানার উন্নয়ন, সোলার এনার্জির বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ' ব্র্যান্ডিংকে শক্তিশালী করা।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরে সম্মিলিত পরিষদের নেতারা বলেন, “আমাদের দায়িত্ব দায়িত্বশীলভাবে সদস্যদের পাশে থাকা, তাদের দাবিকে শক্ত কণ্ঠে সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা। বিজিএমইএ নির্বাচনে যারা এবার প্রথম ভোট দেবেন, সেই তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা ভবিষ্যতের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে চাই।”

ঢাকা/এনএফ/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে কলম বিরতি, ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’র মতো কর্মসূচি প্রত্যাহার করে পূর্বশর্ত ছাড়া অনতিবিলম্বে কাজে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনো মতেই কাম্য নয়। একই সঙ্গে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ ন্যায়সঙ্গত সুরক্ষা ও দেশের অর্থনীতি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান অচলাবস্থা পরিস্থিতি এবং রপ্তানিমুখী শিল্পসহ জাতীয় অর্থনীতিতে এর প্রভাব সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

আরো পড়ুন:

চুক্তিভিত্তিক আমদানিতে আর্থিক দায়মুক্তি পেল ব্যাংক

পণ্য আমদানি করতে বিদেশে পাঠানো যাবে ১ লাখ ডলার 

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গামেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হাসান খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধি আবুল কাশেম খান, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ, বিটিএমএ সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট কামরান তানভীর রহমান, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) প্রেসিডেন্ট মঈনুল ইসলাম,  ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের সিমিন রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনো মতেই কাম্য নয়। এতে কোনো প্রকার সফলতা নিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি না। তাই, দেশ ও ব্যবসার স্বার্থে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। আন্দোলনকারীসহ সব পক্ষের আলোচনায় বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।’

কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘চলমান স্থানীয় এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নানা পরিস্থিতিতে চাপে থাকা ব্যবসায়ীরা নতুন করে এনবিআরের অচলাবস্থার কারণে আরো সমস্যায় পড়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসা উচিত।’ একইসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘সব অফিসার যে অসৎ তা-ও নয়, তাদেরও ভবিষ্যৎ আছে, সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে সরকারকে।’

এই আন্দোলনের কারণে ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে-এমন উদ্বেগের কথা জানিয়ে তারা বলেন, ‘এই অবস্থায় ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কালক্ষেপণ না করে আজকের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (বিডা) যৌথভাবে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা জরুরি। তাদের ভবিষ্যৎ ন্যায়সঙ্গত সুরক্ষা ও দেশের অর্থনীতি যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়; সেই পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে।’

এ সময় তারা আন্দোলনকারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ‘কলম বিরতি’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কোনো শর্ত ছাড়া কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, “যেকোনো দেশের সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের ইন্টারেকশন মিথস্ক্রিয়া অতীব জরুরি। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এই যোগাযোগ বা সংলাপ অনেকটা স্তিমিত।”

তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানের অপসারণের পর হয়ত অন্য কোনো সদস্যের অপসারণের দাবিও উঠবে। তাতে সমস্যা বাড়তে থাকবে।”

শাটডাউনের কারণে রপ্তানির ক্ষতির বিষয়টি উল্লেখ করে এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, “স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার আমাদের তথা বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করবে না। যুদ্ধ ছাড়া কোনো দেশের কাস্টমস বন্ধ থাকে; এটা আমাদের জানা নেই।”

তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীরা এনবিআরের সংস্কার চায়। তবে এনবিআরে অনেক সৎ অফিসার আছেন। বর্তমান সংস্কারের ফলে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটি বলার অধিকার তাদের আছে। সে বিষয়টিও সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে।”

বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “এনবিআরের কর্মকর্তারা এতদিন ব্যবসায়ীদের জ্বালিয়েছে (হয়রানি করা)। এখন সরকারকে জ্বালাচ্ছে। দেশের ব্যবসা ও দেশের স্বার্থে সমস্যার সমাধান জরুরি।”

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে সমন্বিত তৈরি পোশাক শিল্পাঞ্চল গড়ার প্রস্তাব বিজিএমইএর
  • বিজিএমইএর সেবা-মাশুল কমল ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত
  • সব ধরনের সেবামূল্য কমাল বিজিএমইএ
  • ব্যবসা বাঁচান, সমস্যার দ্রুত সমাধান করুন
  • সংকটের গভীরতা সরকার বুঝতে পারছে না
  • এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’: ব্যবসায়ীদের ৫ পরামর্শ
  • এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা
  • এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ কাম্য নয়, আলোচনায় বসার আহ্বান ব্যবসায়ী নেতাদের
  • এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ কাম্য নয়, দ্রুত আলোচনা চান ব্যবসায়ী নেতারা